ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ভারতের তুরা স্থলবন্দরের সঙ্গে যোগাযোগ সম্প্রসারণে উদ্যাগ

প্রকাশিত: ০৬:৩৭, ২৮ আগস্ট ২০১৮

ভারতের তুরা স্থলবন্দরের সঙ্গে যোগাযোগ সম্প্রসারণে উদ্যাগ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ভারতের তুরা স্থলবন্দরের সঙ্গে যোগাযোগ সম্প্রসারণে বিশেষ উদ্যাগ নিয়েছে সরকার। এ জন্য ‘জামালপুর-ধনুয়া-কামালপুর-রৌমারী-দাঁতভাঙ্গা মহাসড়ক প্রশস্তকরণ ও মজবুতিকরণ’ নামের একটি প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। এটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৩৩২ কোটি ১০ লাখ টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে জামালপুর-ধানুয়া-কামালপুর-রৌমারী-দাঁতভাঙ্গা পর্যন্ত ৩২ কিলোমিটার সড়ক প্রশস্ত ও মজবুতিকরণের মাধ্যমে টেকসই, নিরাপদ ও ব্যয় সাশ্রয়ী সড়ক অবকাঠামো গড়ে তোলা সম্ভব হবে। ফলে তুরা স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের আসাম থেকে আমদানি-রফতানি সহজ হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য সুবীর কিশোর চৌধুরী পরিকল্পনা কমিশনের মতামত দিতে গিয়ে বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ঢাকার সঙ্গে কুড়িগ্রাম জেলার রাজিবপুর উপজেলাসহ রৌমারী উপজেলাধীন স্থলবন্দরের নিরাপদ ও উন্নত সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হবে। এ সব বিবেচনায় প্রকল্পটি অনুমোদনের সুপারিশ করা হয়েছে। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, প্রস্তাবিত জামালপুর (নন্দীবাজার)-ধানুয়া-কামালপুর-রৌমারী-দাঁতভাঙ্গা সড়কটি কুড়িগ্রাম সড়ক বিভাগাধীন একটি গুরুত্বপূর্ণ জেলা মহাসড়ক। সড়কটি জামালপুর জেলার নন্দীবাজার হতে শুরু হয়ে কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদীর তীরবর্তী এবং ভারতের আসাম রাজ্যের সীমান্ত দাঁতভাঙ্গায় শেষ হয়েছে। সড়কটির মোট দৈর্ঘ্য ৮৭ কিলোমিটার; এর মধ্যে কুড়িগ্রাম সড়ক বিভাগের অধীনে ২৯ কিলোমিটার ও জামালপুর সড়ক বিভাগের আওতায় রয়েছে ৫৮ কিলোমিটার সড়ক। জামালপুর সড়ক বিভাগের আওতায় এই ৫৮ কিলোমিটার সড়ক উন্নয়নের প্রস্তাব ২০১৭ সালের ১ আগস্ট একনেকে অনুমোদিত হয়েছে। অন্যদিকে এলজিইডি থেকে সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের কাছে হস্তান্তরিত ২ দশমিক ৬৩ কিলোমিটার দীর্ঘ রাজিবপুর উপজেলা পরিষদ সংযোগ সড়কটিও এ প্রকল্প প্রস্তাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ফলে প্রস্তাবিত প্রকল্পের আওতায় সড়কের মোট দৈর্ঘ্য দাঁড়িয়েছে ৩১ দশমিক ৬৩৫ কিলোমিটার। সড়কটির সঙ্গে শেরপুর জেলার শ্রীবর্তী উপজেলা, জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ ও দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা এবং কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলা সংযুক্ত হয়েছে। সড়কটি রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলা হয়ে সারাদেশের সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র সড়ক। তাছাড়া রৌমারী উপজেলা সংলগ্ন ভারতের আসাম রাজ্যের সঙ্গে তুরা স্থলবন্দরের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তুরা স্থলবন্দরে একটি ল্যান্ড কাস্টমস স্টেশন রয়েছে। এই স্থলবন্দরের মাধ্যমে কয়লা এবং পাথর আমদানি হচ্ছে। এই অঞ্চলের অবকাঠামো নির্মাণের সিংহভাগ পাথরের জোগান তুরা স্থলবন্দরের মাধ্যমে আমদানি করা পাথরের মাধ্যমে হয়ে থাকে। তাছাড়া সড়কটি আসাম ও মেঘালয় রাজ্যের সাথে সীমান্তবর্তী সড়ক। এ জন্য সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ হতে ৩১৭ কোটি ৪৮ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ২০১৭ সালের জুলাই হতে ২০২০ সালের জুনে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তাব করা হয়। প্রস্তাবিত প্রকল্পের ওপর গত বছরের ৪ জুন এবং পরবর্তীতে চলতি অর্থবছরের ১৮ জানুয়ারি প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভার সিদ্ধান্তের আলোকে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) পুনর্গঠন করেছে। পুনর্গঠিত ডিপিপির প্রাক্কলিত ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৩৩২ কোটি ১০ লাখ টাকা। প্রস্তাবিত প্রকল্পের বাস্তবায়নের সময় চলতি বছর থেকে ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। ভূমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত নতুন নীতিমালা অনুযায়ী ভূমি অধিগ্রহণের ব্যয় প্রাক্কলন করায় এবং পিইসি সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রোড ইন্টারসেকশনের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় প্রকল্প ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে বলে প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় ৫১ দশমিক ৫৫৬ হেক্টর ভূমি অধিগ্রহণ ও ক্ষতিপূরণসহ ৪ দশমিক ৮৪০ লাখ ঘন মিটার সড়ক বাঁধে মাটির কাজ, ২২ দশমিক ৭০ কিলোমিটার বিদ্যমান ফ্লেক্সিবল পেভমেন্ট প্রশস্তকরণ, ৯ কিলোমিটার বিদ্যমান ফ্লেক্সিবল পেভমেন্ট মজবুতিকরণ, ২ দশমিক ৬৩৫ কিলোমিটার বিদ্যমান ফ্লেক্সিবল পেভমেন্ট পুনঃনির্মাণ এবং ৯ কিলোমিটার পেভমেন্ট মজবুতিকরণসহ অনান্য কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে।
×