স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ গত বছর উইম্বলডনে সর্বশেষবার বিশ্বের সেরা চার টেনিস তারকা লড়েছিলেন শিরোপার জন্য। এরপর আর কোন বড় আসরে একই সঙ্গে দেখা যায়নি রাফায়েল নাদাল, রজার ফেদেরার, নোভাক জোকোভিচ ও এ্যান্ডি মারেকে। তবে বছরের শেষ গ্র্যান্ডস্লাম আসরে মর্যাদার লড়াইয়ে অবতীর্ণ হতে চলেছেন এ চারজন। অনেক আগে থেকেই টেনিস বিশ্বের ‘বিগ ফোর’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে এ চার তারকাকে। এবার ২৮ আগস্ট থেকে শুরু হতে যাওয়া ইউএস ওপেনে তাদের আবার দেখতে পাবেন টেনিস ভক্ত-সমর্থকরা। দীর্ঘ ইনজুরি কাটিয়ে ইতোমধ্যেই এ বছর উইম্বলডন এবং সম্প্রতিই সিনসিনাটি মাস্টার্স জিতে সবগুলো মাস্টার্স সিরিজ জয়ের অনন্য রেকর্ড গড়েছেন এ সাবেক সার্বিয়ান বিশ্বসেরা। তৃতীয়বারের মতো ইউএস ওপেন জেতার জন্য তাই বেশ উজ্জীবিতই থাকবেন তিনি।
একদিন পরেই শুরু হচ্ছে বছরের শেষ মর্যাদার গ্র্যান্ডস্লাম আসর ইউএস ওপেন। সে জন্য হয়তো প্রস্তুতিটা সবচেয়ে ভাল হয়েছে এবার জোকোভিচের। ৩১ বছর বয়সী এ তারকা মাত্র কয়েকদিন আগেই সিনসিনাটি মাস্টার্সে শিরোপা জিতেছেন তিনি। এর মাধ্যমে এটিপির অধীনে থাকা ৯টি মাস্টার্সের সবগুলো জেতা একমাত্র টেনিস তারকা হওয়ার বিরল রেকর্ড গড়েছেন। আর সেখানে ৭বার চ্যাম্পিয়ন হওয়া চরম প্রতিদ্বন্দ্বী ফেদেরারকে হারিয়ে তিনি বলেন, ‘ধন্যবাদ রজারকে অন্তত একবার আমাকে এখানে জিততে দেয়ার জন্য।’ বিষয়টি মজা করে বললেও তার ইউএস ওপেনের আগে এই শিরোপাটি অনেক বড় অনুপ্রেরণা হয়েছে তা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়। ফ্ল্যাশিং মিডোসে এখন তিনি বর্তমান বিশ্বসেরা স্প্যানিশ তারকা নাদালের সঙ্গে অন্যতম ফেবারিট হিসেবেই বিবেচিত হচ্ছেন। ২০১১ ও ২০১৫ সালে ইউএস ওপেন জিতেছিলেন এ সার্বিয়ান তারকা। ৫ বার হয়েছেন রানার্সআপ। আর গত বছর কনুইয়ের ইনজুরির কারণে খেলতে পারেননি এ আসরে। গত জুনে আবারও তার শারীরিক সক্ষমতা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছিল। ফ্রেঞ্চ ওপেনের কোয়ার্টার ফাইনালে অবাছাই তারকা মার্কো চেচিনাটোর কাছে হেরে বিদায় নিয়েছিলেন। কিন্তু উইম্বলডনে আবার শিরোপা জিতে নিজেকে ফিরে পেয়েছেন। তবে এরপরও জোকোভিচের শারীরিক সমস্যা কিছুটা থেকেই গেছে। কিন্তু যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী জোকোভিচ বলেন, ‘খুবই চমৎকার অনুভূতি। ইনজুরির কারণে কয়েকটা মাস খুব কঠিন গেছে আমার জন্য। কিন্তু এরপর উইম্বলডন ও সিনসিনাটিতে জিতে আমি অনেক উজ্জীবিত হয়ে উঠেছি।’
ইউএস ওপেনে এবার হাঙ্গেরির মার্টন ফুকসোভিকসের বিপক্ষে অভিযান শুরু করবেন জোকোভিচ। ইতোমধ্যেই ১৩ গ্র্যান্ডস্লাম জিতে তিনি সাবেক মার্কিন তারকা পিট সাম্প্রাসের কাছাকাছি চলে এসেছেন। ইউএস ওপেন জিততে পারলেই ১৪ গ্র্যান্ডস্লাম জয়ী সাম্প্রাসকে ছুঁয়ে ফেলবেন তিনি। আর ৩১ মাস্টার্স জিতে তিনি এগিয়ে গেছেন সুইস তারকা ফেদেরারের (২৭ মাস্টার্স) চেয়ে। তবে এখনও এক্ষেত্রে পিছিয়ে আছেন নাদালের চেয়ে দুটি কম জিতে। এ কারণে এবার ইউএস ওপেনে কঠিন এক লড়াই দেখতে পাবেন টেনিসভক্তরা। কারণ ব্রিটিশ তারকা মারেও থাকছেন শিরোপা লড়াইয়ে। এই তিন তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বীর বিপক্ষে অবশ্য হেড-টু-হেড বিবেচনায় এগিয়ে আছেন জোকোভিচ। নাদালের বিপক্ষে ২৭-২৫, ফেদেরারের বিপক্ষে ২৪-২২ এবং মারের বিপক্ষে ২৫-১১ ব্যবধানে এগিয়ে আছেন তিনি সার্বিক মুখোমুখি লড়াইয়ের রেকর্ডে। তবে নাদালও এই মুহূর্তে বেশ ফর্মেই আছেন। এক নম্বর র্যাঙ্কিংয়ে ফিরে আসা এ স্প্যানিশ তারকা গত বছর ইউএস ওপেন জিতেছেন। ২০১০ ও ২০১৩ সালেও এখানে শিরোপা উঠেছিল তার হাতে। ১৭ গ্র্যান্ডস্লাম জয়ী এ তারকা এবার সিনসিনাটিতে খেলেননি মূলত এর সপ্তাহ খানেক আগেই টরন্টোয় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কারণে। রেকর্ড ২০টি গ্র্যান্ডস্লাম জয়ের মালিক ফেদেরারও যে ইউএস ওপেন জিততে মরিয়া থাকবেন সেটাও নিশ্চিতভাবেই বলা যায়।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: