ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সৈকতের বিরুদ্ধে যৌতুক মামলা

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ২৭ আগস্ট ২০১৮

 সৈকতের বিরুদ্ধে যৌতুক মামলা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ক্রিকেটারদের যে কী হলো! একের পর এক উচ্ছৃঙ্খল কাজে যুক্ত হচ্ছেন। আর মামলা খাচ্ছেন। নয়তো মান-সম্মানহানির কাজে যুক্ত হচ্ছেন। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নামও যেন ডুবাচ্ছেন। এবার বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের অলরাউন্ডার মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত যৌতুক মামলা খেলেন। রবিবার সৈকতের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন তার সহধর্মিণী সামিনা শারমীন (সামিয়া)। যৌতুক নিরোধ আইনের ৩/৪ ধারায় এ মামলা হয়। জেলা ময়মনসিংহের বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১নং আমলী আদালতে এ মামলা হয়। মামলায় বাদী হয়েছেন সৈকতের স্ত্রী। বিবাদী করা হয়েছে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ও তার মা পারুল বেগমকে। ১৫ আগস্ট ঘটা একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে মামলা করা হয়। ময়মনসিংহের কাচিঝুলি গোলাপজান রোডের ৯/গ-এর বাসায় ঘটনাটি ঘটে। মামলা অনুযায়ী বাদীর (সামিয়া) কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী ২০১২ সালে শরীয়ত মতে বিয়ে হয়। শুরুতে সব ঠিক ছিল। কিন্তু এক বছর যেতেই অশান্তি শুরু হয়। সৈকত যখন ক্রিকেট খেলে ভাল অর্থকড়ি উপার্জন শুরু করে দেন, তখন থেকেই বদলে যেতে থাকেন। সেই বদলে যাওয়া জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার পর থেকে আরও বাড়তে থাকে। বিভিন্ন মেয়েদের সঙ্গে সৈকতের পরিচয় হয়। টাকার ছোঁয়ায় সেই মেয়েদের সঙ্গে মেলামেশাও বাড়ে। বেশিরভাগ সময়ই খেলার জন্য ঢাকায় থাকতেন সৈকত। মাঝে মধ্যে বাড়িতে (ময়মনসিংহে) যেতেন। তখন বাড়িতে থাকা অবস্থায় মোবাইলে বিভিন্ন মেয়ের সঙ্গে ছবি দেখা যেত। মোবাইলে মেয়েদের অরুচিকর ম্যাসেজও পাওয়া যেত। মেয়েদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক কথাবার্তা চালিয়ে যেতেন সৈকত। একটা সময় সৈকতকে এ নিয়ে সামিয়া জিজ্ঞেস করতেই শুরু হয় ঝামেলা। অসভ্য ভাষায় গালিগালাজও করত। স্বামী (সৈকত) একটা সময় ঢাকায় ব্যবসা করবেন বলে ১০ লাখ টাকা যৌতুক বাবদ স্ত্রীর বাবার বাসা থেকে এনে দিতে বলেন। একটা সময় অনেক চাপ সৃষ্টি করেন। বাবার বাসা থেকে এত টাকা আনা সম্ভব নয় জানালে শারীরিক নির্যাতনও করা হয়। একটা সময় তিন মাস বয়সী সন্তানও নষ্ট হয়। চিকিৎসক বিশ্রামের কথা বললেও মানসিকভাবে শ্বাশুড়ি নির্যাতন করতে থাকেন। তাতে সন্তান নষ্ট হয়। যৌতুকের টাকা না দিতে পারায় একটা সময় বাবার বাড়ি চলে যেতে বলা হয়। সামিয়া তবুও স্বামীর (সৈকতের) বাড়ি ফিরে যান। এক সপ্তাহের মধ্যে টাকা এনে দিতে না পারলে অন্য কাউকে তখন বিয়ে করার হুমকিও দেয়া হয়। প্রতিবাদ করলে শ্বাশুড়ির প্ররোচনায় স্ত্রীকে নির্যাতন করেন সৈকত। ১৫ আগস্ট ঘটনাটি ঘটে। বুকে ও পেটে লাথিও মারতে থাকেন সৈকত। সামিয়ার বাবার বাসা থেকে দেয়া আসবাবপত্র ভাংচুরও করতে থাকেন শ্বাশুড়ি। রক্তাক্ত অবস্থায় চিৎকার করতে থাকেন সামিয়া। চিৎকার শুনে সৈকতের বাড়ির আশপাশের লোকজন এসে রক্ষা করেন সামিয়াকে। তখন মোবাইল ফোনে সামিয়ার বাবার বাসায় ফোন দিয়ে সামিয়াকে নিয়ে যেতে বলেন সৈকত। মামলার ৪ নম্বর সাক্ষী সামিয়ার ভাই এনামুল হক সুমন এসে সামিয়াকে বাবার বাড়িতে নিয়ে যান। সামিয়া জানান, ‘এইরকম স্বামী যেন আর কারো কঁপালে না জুটে। কারো সঙ্গে যেন এমন নির্যাতন না হয়।’ সুমন বলেন, ‘এভাবে কতদিন চলতে পারে। নামী ক্রিকেটার হয়ে যাওয়ার আগে একরকম রূপ। এরপর আরেকরকম রূপ দেখা মিলেছে। পুরোই বদলে গেছে সৈকত। এভাবে এত নির্যাতন আমার বোন কিভাবে সহ্য করবে। আর তাই কোন দিকে না তাকিয়ে মামলা করতে আমরা বাধ্য হয়েছি।’ এ বিষয়ে সৈকত জানান, ‘আসলে ঘটনা সত্য নয়। এক হাতে তালি বাজে না। সময় হলেই সব খোলাসা হবে।’ ক্রিকেটাররা যখন তারকা বনে যাচ্ছেন। তখনই উল্টাপাল্টা কাজ করছেন। সেই কাজের শাস্তিও ভোগ করতে হয়েছে বিভিন্ন সময়। সাব্বির রহমান রুম্মনতো আরেকটি শাস্তির অপেক্ষাতেই যেন আছেন। এমন সময় মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতও যৌতুক মামলা খেলেন।
×