ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

দশমিনায় স্কুল চলে জোয়ারভাটা দেখে

প্রকাশিত: ০৪:০০, ২৭ আগস্ট ২০১৮

দশমিনায় স্কুল চলে জোয়ারভাটা দেখে

নিজস্ব সংবাদদাতা, পটুয়াখালী, ২৬ আগস্ট ॥ দশমিনার উত্তর চরহাদী বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়! যেখানে পাঠদান চলে নদীর জোয়ারভাটা দেখে। এমন প্রতিকূলতার মাঝেই তিন শিক্ষক ও শতাধিক শিক্ষার্থীর চলে শিক্ষা কার্যক্রম। ফলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে ভুক্তভোগীদের। দশমিনা উপজেলার সঙ্গে যোগাযোগ বিছিন্ন তেঁতুলিয়া নদীর বুকচিরে প্রায় ৫০ বছর আগে জেগে ওঠে একটি চর। যার নামকরণ হয় উত্তর চরহাদী। সেই থেকে এখানে বসবাস শুরু করে উপজেলার ভূমিহীন ও ছিন্নমূল মানুষ। সময়ের ধারাবাহিকতায় এখানকার শিক্ষার্থীদের জন্য দুর্গম চরাঞ্চলে তৈরি করা হয় ১৪০ নং উত্তর চরহাদী বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। বিদ্যালয়টির সঙ্গে রাস্তা না থাকায় জোয়ারের পানিতে বিদ্যালয়টি থাকে পানিবন্দী। তাই বিদ্যালয়টির ক্লাসও চলে তেঁতুলিয়া নদীর জোয়ারভাটা দেখে। জোয়ারের পানি বেশি থাকলে শিক্ষার্থীসহ শিক্ষকদের অপেক্ষা করতে হয় ভাটার জন্য। বর্তমানে ওই চরে বসবাসকৃত জনসংখ্যা প্রায় সাড়ে ছয় হাজার। ২০১০ সালে সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর ছেলে সোহেল বাতেন তার নিজ অর্থায়নে বিদ্যালয়বিহীন চরহাদী উত্তর চরহাদী সরকারী প্রাঃ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে তিন শিক্ষক অনেক প্রতিকূলতার মাঝে বিদ্যালয়ের প্রায় শতাশিক ছাত্র-ছাত্রীকে পাঠদান করছেন। বিদ্যালয়ের সঙ্গে কোন সংযোগ সড়ক না থাকায় নৌকা অথবা কলার ভেলায় চরে আসতে হয় শিক্ষার্থীসহ শিক্ষকদের। সরকার ২০১৬ সালের ২৩ মার্চ বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ হলেও অবকাঠামোর কোন উন্নয়ন হয়নি। জরাজীর্ণ টিনশেডের ঘর আর তেঁতুলিয়া নদীর জোয়ারের পানিতে ক্লাস করতে হচ্ছে ছাত্র-ছাত্রীদের। উপজেলা সদরে আসতে ট্রলারযোগে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা সময় লাগে। এ কারণে চরের শিক্ষার্থীরা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। চরে প্রতিষ্ঠিত একমাত্র বিদ্যালয়টির এমন হাল। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মৃদুলা রানী জানান, শুরুর দিকে চার শিক্ষক থাকলেও দুর্গম হওয়ায় একজন শিক্ষক অন্যত্র চলে গেছে। এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মু. জাহিদ হোসেনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, বিদ্যালয়টির ভবন, মাঠ ভরাট এবং যাতায়াতের সড়কের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
×