ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

কয়লা লুটপাটের ঘটনায় মন্ত্রী এমপিরাও জড়িত

প্রকাশিত: ০১:০৯, ২৬ আগস্ট ২০১৮

কয়লা লুটপাটের ঘটনায় মন্ত্রী এমপিরাও জড়িত

স্টাফ রিপোর্টার, দিনাজপুর ॥ দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে কয়লা খনিবিরোধী আন্দোলনে সংঘটিত ফুলবাড়ী ট্রাজেডি দিবসের ১২ বছর পালিত হয়েছে। ২৬ আগস্ট রবিবার তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি ফুলবাড়ী শাখা ও কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দ ও পৃথকভাবে দিবসটি পালন করে সম্মিলিত পেশাজীবী সংগঠন। সকাল ৮টা ১ মিনিটে জাতীয় শোক পতাকা উত্তোলন, সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে কালো ব্যাজ ধারণ, সকাল ১০টায় শোক র্যালি ফুলবাড়ী শহর প্রদক্ষিণ, সকাল সাড়ে ১০টায় শহীদ বেদিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ এবং সকাল ১১টা ১ মিনিটে শহরের নিমতলা মোড়ে স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়। বিকালে মসজিদ, মন্দির এবং গীর্জায় দোয়া ও প্রার্থনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয় কমিটি ফুলবাড়ী শাখার আয়োজনে সকাল ১১টায় নিমতলা মোড়ে অনুষ্ঠিত স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন সিপিবি নেতা জয়প্রকাশ। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, নেতাদের নামে দায়ের করা সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে, সারা দেশে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলনের ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে হবে। ফুলবাড়ী ট্রাজেডির ছয় দফা চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়ন করতে হবে। তিনি বলেন, কেন্দ্রিয় ভাবে আমরা কর্মসূচী করে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছি বড়পুকুরিয়া খনির কয়লা লোপাটের সাথে মন্ত্রি-এমপি ও উপদেষ্টারা জড়িত। তাদেরও বিচার করতে হবে। তদন্তের নামে অতীতের মত যদি কয়লা লোপাটের ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করা হয় তাহলে জাতীয় কমিটি গনআন্দোলনের মাধ্যমে প্রকৃত দোষিদের চিহিৃত করে গণ-আদালতে দোষীদের বিচার করতে বাধ্য হবে। এ সময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন গণ সংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকী, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য আলতাফ হোসাইন, জাতীয় গণফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব টিপু বিশ্বাস, বিপ্লবী গণতান্ত্রিক পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির ফুলবাড়ী শাখার আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম জুয়েল, জাতীয় গণফ্রন্টের ফুলবাড়ী শাখার আহ্বায়ক ও তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির ছয় থানার সমন্বয়ক মো. আমিনুল ইসলাম বাবলু, কমিউনিস্ট পার্টির সঞ্জিত কুমার জিতু, ফুলবাড়ী নির্মাণ শ্রমিক সমিতির সভাপতি মো. আলাউদ্দিন প্রমুখ। সকাল ১০টায় নিমতলা মোড়ে তেল, গ্যাস,খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি সদস্য সচিব প্রফেসার আনু মুহম্মদ এর নেতৃত্বে একটি শোক র্যালী বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে শহীদ আমিন,সালেকিন ও তরিকুলের বেদীতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে। অপরদিকে, পৃথকভাবে ফুলবাড়ী ট্রাজেডি দিবস উপলক্ষে র্যালি ও আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে পালন করেছে সম্মিলিত পেশাজীবী সংগঠন। র্যালি শেষে পার্বতীপুরের বর্ণমালা স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক ও সাংবাদিক শেখ সাব্বির আলীর সভাপতিতে ব্যবসায়ী সমিতির সামনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বক্তব্য দেন ফুলবাড়ী পেশাজীবী সংগঠনের আহ্বায়ক পৌর মেয়র মো. মানিক সরকার। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন পৌর কাউন্সিলর মো. ময়েজ উদ্দিন, ফুলবাড়ী ইলেক্ট্রিক সমিতির সভাপতি মো. ফারুখ আহম্মেদ প্রমুখ। দিনের শুরুতে সকাল সাড়ে ৯টায় ফুলবাড়ী বাজার থেকে সম্মিলিত পেশাজীবী সংগঠনের ব্যানারে মেয়র মুরতুজা সরকার মানিক এর নেতৃতে শোক র্যালী বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে ২০০৬ সালে অন্দোলনে আইনশৃংখলা বাহিনীর হাতে নিহতদের শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে শহীদ বেদীতে পুষ্পমাল্য অর্পণ,আলোচনা ও শপথবাক্য পাঠ করান মেয়র মুরতুজা সরকার মানিক। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এর মাধ্যমে প্রধান মন্ত্রী বরাবর ৭ দফা দাবী সম্বলিত স্বারকলীপি প্রদান করেন সম্মিলিত পেশাজীবি সংগঠন।
×