ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ঈদে দৌলতপুরে শতাধিক স্পটে কোটি টাকার মাদক বিক্রি

প্রকাশিত: ০৪:৫১, ২৬ আগস্ট ২০১৮

 ঈদে দৌলতপুরে শতাধিক স্পটে কোটি টাকার  মাদক বিক্রি

নিজস্ব সংবাদদাতা, দৌলতপুর, কুষ্টিয়া, ২৫ আগস্ট ॥ শুধু ঈদ উপলক্ষে দৌলতপুরের শতাধিক স্পটের খুচরা মাদক বিক্রেতারা কোটি টাকার মাদক বিক্রি করেছে বলে বিভিন্ন সূত্রে অভিযোগ পাওয়া গেছে। দৌলতপুরের মাদক সেবীসহ জেলা ও জেলার বাইরের বিভিন্ন অঞ্চলের মাদকসেবীরা বেপরোয়া গতিতে মোটরযান চালিয়ে তাদের পরিচিত মাদক স্পটে ফেনসিডিল, ইয়াবা, হেরোইন ও গাঁজা সেবন করে একই গতিতে ফিরে যাচ্ছে। আর এ চিত্র নিত্যনৈমিত্তিক হলেও ঈদের আগের দিন থেকে অদ্যাবধি বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। অনুসন্ধানে জানা গেছে, দৌলতপুর উপজেলার প্রাগপুর, বিলগাথুয়া, জামালপুর, মুন্সীগঞ্জ, চল্লিশপাড়া, চিলমারী, চরচিলমারী, বাংলাবাজার ও উদয়নগর সীমান্তসহ বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে ফেনসিডিল, গাঁজা ও হেরোইনের বড় বড় চালান পাচার হয়ে বিভিন্ন ভাগে ভাগ হয়ে বড় চালান ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাচার হয়। আর ছোট ছোট মাদকের চালান মাদক বিক্রেতাদের হাত বদল হয়ে দৌলতপুরের শতাধিক খুচরা মাদক বিক্রেতাদের হাতে চলে যায়। আর এসব খুচরা মাদক বিক্রেতারা উচ্চমূল্যে মাদকসেবীদের কাছে তা বিক্রি করে থাকে। তবে ঈদ বা বিভিন্ন মৌসুম এলে খুচরা বিক্রেতাদের কদরও বেড়ে যায়। নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে দ্বিগুণ বা তিনগুণ বা তার চেয়েও বেশি মূল্যে মাদকসেবীদের কাছে এসব মাদক বিক্রি করে থাকে তারা। দৌলতপুরের উল্লেখযোগ্য মাদক স্পটগুলোর মধ্যে রয়েছে খলিশাকু-ি বাজার, শ্যামপুর বাজার, বোয়ালিয়া বাজার, গোয়ালগ্রাম বাজার, শেহালা-নাটনাপাড়া বাজার, আদাবাড়িয়া বাজার, প্রাগপুর বাজার, বিলগাথুয়া, মহিষকুন্ডি মাঠপাড়া, মহিষকুন্ডি বাজার, জামালপুর, পাকুড়িয়া, ভাগজোত বাজার, মুন্সীগঞ্জ বাজার, মুন্সীগঞ্জ ভাঙ্গাপাড়া, ক্রোফোর্ডনগর, ডাংমড়কা বাজার, মথুরাপুর বাজার, হোসেনাবাদ বাজার, ফিলিপনগর, বৈরাগীরচর, তারাগুনিয়া বাজার, স্বরূপপুর ব্র্যাক অফিসপাড়া, আল্লারদর্গা বাজার, আল্লারদর্গা পশুহাট বাজার, আখ সেন্টার পাড়া, সোনাইকু-ি বাজার, কল্যাণপুর বাজার, কল্যাণপুর বটতলা, কল্যাণপুর গাইনপাড়া, সাদীপুর, সাহাপুর, জয়রামপুর, চরদিয়াড়, মাজদিয়াড় ও বালিরদিয়াড় বাজার অন্যতম। আর এসব মাদক ব্যবসা স্পট এলাকায় গড়ে ওঠা খুচরা মাদক বিক্রেতারা শতাধিক স্পটে মাদক বিক্রি করে থাকে। সময় ও সুযোগ বুঝে মাদকসেবীদের সঙ্গে যোগাযোগ সাপেক্ষে স্পট পরিবর্তন করে তারা মাদক বিক্রি করে থাকে। উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের মুন্সীগঞ্জ ও ক্রোফোর্ডনগর এলাকায় গিয়ে নাম পরিচয় গোপন রেখে খুচরা মাদক বিক্রেতা সজিব, সাদেক, নিহাজ, নুরতাজ, জাহাঙ্গীর, আলামিন ও বিপদ আলীর সঙ্গে আলাপচারিতায় জানা যায়, তারা প্রতিদিন গড়ে ১০ থেকে ২০ পিস ফেনসিডিল বিক্রি করে থাকে। তবে ঈদ বা বিভিন্ন উৎসব এলে এর দ্বিগুণ, তিনগুণ আবার কোন কোন ক্ষেত্রে চারগুণও বিক্রি হয়। আবার অনেক সময় ছোটখাট নেতারা এলে তাদের ফ্রি দেয়া লাগে। ঈদ উপলক্ষে তারা প্রতিপিস ফেনসিডিল ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা করে বিক্রি করছে। এতে তাদের বছরের অন্যান্য সময় গড়ে প্রতিদিন ৪ হাজার থেকে ৮ হাজার টাকা এবং উৎসব মৌসুমে তা অনেকগুণ বেড়ে যায়। তারা বলেন, এতে লাভ যেমন আছে ঝক্কিঝামেলও বেশি। যদিও প্রশাসনকে ম্যানেজ করে বিক্রি করি তারপরও মাঝে মধ্যে বিভিন্ন ধরনের উটকো ঝামেলায় পড়তে হয়। তখন খরচ একটু বেশি। রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজ ম-ল জানান, তার ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি স্পটে মাদক বিক্রি হয়ে থাকে। তবে আগের তুলনায় মাদক বিক্রি অনেক কমে গেছে। থানার ওসি শাহ দারা খান বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান জোরালো আছে। মাদক বিক্রি জোরালো হওয়ার সুযোগ নেই। ঈদের আগে মাদক বিরোধী অভিযানে মাদক ব্যবসায়ী বা বিক্রেতা আটক হয়েছে এবং মাদক উদ্ধারও হয়েছে।
×