বরিশালে ছাত্রদলের দুই গ্রুপে উত্তেজনা ॥ ফের সংঘর্ষের আশঙ্কা

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ ছাত্রদলের নবগঠিত কমিটির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পদবঞ্চিতদের সংঘর্ষের ঘটনার পর শনিবার সকাল থেকে ফের দুই গ্রুপের মধ্যে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ নিয়ে যেকোন সময় বড় ধরনের সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন সচেতন নগরবাসী। অপরদিকে যেকোন ধরনের সংঘাতের ঘটনা প্রতিরোধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে প্রশাসন। সূত্রমতে, গত ১৯ আগস্ট বরিশাল জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। এরপর পরই পদবঞ্চিতরা দলীয় কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করে আসছিল। তারই ধারাবাহিকতায় পদবঞ্চিত নেতারা তাদের কর্মীদের নিয়ে নবগঠিত ছাত্রদলের কমিটি বাতিল করে পুনরায় কমিটি ঘোষণার দাবিতে শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নগরীর সদররোডের বিএনপি দলীয় কার্যালয়ের সামনে ছাত্র সমাবেশের আয়োজন করে। ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম সুজন, জেলা ছাত্রদলের নবগঠিত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক (পদ প্রত্যাহারের ঘোষণাকারী) সোহেল রাঢ়ী ও পদবঞ্চিত রফিকুল ইসলাম টিপুর নেতৃত্বে দলীয় কার্যালয়ে ছাত্র সমাবেশ শুরুর পর ছাত্র সমাবেশে একাত্মতা প্রকাশ করে মহানগর ছাত্রদলের পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা। ওই সমাবেশে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রাজীব আহসানের বিরুদ্ধে বক্তব্যের পাশাপাশি তাকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করা হয়। একইসঙ্গে বরিশাল জেলা ছাত্রদলের বিতর্কিত কমিটি বাতিলের দাবি জানানো হয়। পদবঞ্চিত নেতাকর্মীদের সমাবেশ চলাকালীন সময় দলীয় কার্যালয়ে প্রবেশের চেষ্টা করে বরিশাল মহানগর ও জেলা ছাত্রদলের নবগঠিত কমিটির নেতাকর্মীরা। এসময় পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা তাদের বাধা দেয়। এনিয়ে উভয় গ্রুপের নেতাকর্মীদের সঙ্গে ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া ও সংঘর্ষে উভয় গ্রুপের কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়। পরে থানা পুলিশ লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। ঘটনার সময় ঘটনাস্থল থেকে পদবঞ্চিত রিমন নামের এক ছাত্রদল নেতাকে দেশীয় ধারালো অস্ত্রসহ (রাম দা) আটক করে পুলিশ। পদবঞ্চিত নেতা জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম সুজন এবং পদ প্রত্যাহারকারী জেলা ছাত্রদলের নবগঠিত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল রাঢ়ী বলেন, কেন্দ্রীয় কমিটি প্রভাবিত হয়ে জেলা ছাত্রদলের বিতর্কিত কমিটি ঘোষণা করেছে। এ কমিটিতে ত্যাগীদের বঞ্চিত করে নিষ্ক্রিয়দের ওপরের পদে দায়িত্ব দিয়েছে। তারা আরও বলেন, আমরা জেলা ছাত্রদলের বিতর্কিত ওই কমিটি বাতিলের দাবিতে কমিটি ঘোষণার পর পরই দলীয় কার্যালয়ে অবস্থান নেয়ার পাশাপাশি শান্তিপূর্ণভাবে বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করে আসছি। সে অনুযায়ী পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে দলীয় কার্যালয়ে আমরা ছাত্র সমাবেশ কর্মসূচী পালন করছিলাম। এতে মহানগর ছাত্রদরের পদবঞ্চিতরাও একাত্মতা প্রকাশ করে। মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি রেজাউল করিম রনি জানান, ছাত্রদলের কয়েকজন কর্মী দলীয় কার্যালয়ে তালাবদ্ধ করে রেখেছিল। আমরা সেখানে গিয়ে তালা ভেঙ্গে সমাবেশ করি এবং দলীয় কার্যালয়ে অবস্থান নেই। এছাড়া সেখানে তেমন কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। জেলা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা বলেন, কমিটি দেয়া হয়েছে যোগ্যতা অনুসারে। তাই এখানে দোষের কিছু নেই। বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই মহিউদ্দিন জানান, ছাত্রদলের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের সময় পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে ঘটনাস্থল থেকে একজনকে ধারালো অস্ত্রসহ আটক করেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। শনিবার সকাল থেকে ফের দুই গ্রুপের মধ্যে টানটান উত্তেজনার ব্যাপারে এসআই মহিউদ্দিন আরও জানান, যেকোন ধরনের সংঘাতের ঘটনা প্রতিরোধে পুলিশ সদস্যরা কঠোর অবস্থানে রয়েছেন।