ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ভূমি নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্টের টুইটের প্রতিবাদ

ট্রাম্প দঃ আফ্রিকায় সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা উস্কে দিচ্ছেন

প্রকাশিত: ০৭:০৩, ২৫ আগস্ট ২০১৮

  ট্রাম্প দঃ আফ্রিকায় সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা উস্কে দিচ্ছেন

দক্ষিণ আফ্রিকায় জমি ছেড়ে দেয়ার জন্য কৃষকদের চাপ দেয়া হচ্ছে এবং এদের অনেককে হত্যা করা হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক টুইটে কথা বলার পর জোহানেসবার্গ বৃহস্পতিবার তাকে অভিযুক্ত করে বলেছে, তিনি এখানে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনাকে উস্কে দিচ্ছেন। খবর এএফপির। ট্রাম্পের টুইটে দক্ষিণ আফ্রিকায় কৃষি জমিতে শ্বেতাঙ্গ মালিকানার প্রতি সম্পূর্ণভাবে আলোকপাত করা হয়েছে। এ দেশের বর্ণবৈষমউত্তর ইতিহাসে এটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয়গুলোর অন্যতম। দক্ষিণ আফ্রিকার এক সরকারী টুইটে বলা হয়, দেশটি ট্রাম্পের সঙ্কীর্ণ ধারণাকে সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করছে। তার টুইট বার্তায় আমাদের দেশকে কেবল বিভক্ত করার চেষ্টা করা হয়েছে এবং আমাদের ঔপনিবেশিক অতীতকেই স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, তারা মার্কিন দূতাবাসে কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন এবং এ আশঙ্কাপূর্ণ মিথ্যা, ভুল ও বিভ্রান্ত তথ্যের ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়েছেন। তারা বলেছেন, বিবৃতিটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। মন্ত্রণালয় এর আগে বলেছে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিন্ডিউই সিসুলু তার মার্কিন প্রতিপক্ষ মাইক পম্পেওর সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে সরাসরি আলোচনা করবেন। ট্রাম্প গতরাতে তার টুইটে লিখেছেন, আমি দক্ষিণ আফ্রিকায় ভূমি ও জমি বাজেয়াফত ও দখলচ্যুতকরণ এবং ব্যাপকসংখ্যক কৃষক হত্যার বিষয়টি গভীরভাবে সমীক্ষা করার জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী পম্পেওকে নির্দেশ দিয়েছি। ভূমি মালিকানায় সাম্প্রতিক বৈষম্য অবসানের জন্য ক্ষতিপূরণ ছাড়া ভূমি অধিগ্রহণ দ্রুত করার জন্য প্রিটোরিয়ার শাসনতন্ত্র পরিবর্তনের পরিকল্পনার ব্যাপারে ফক্সনিউজ সংবাদ প্রকাশের পর ট্রাম্প টুইটটি লেখেন। ট্রাম্প তার পোস্টে লেখেন, দক্ষিণ আফ্রিকার সরকার এখন শ্বেতাঙ্গ কৃষকদের জমি জবরদখল করে নিচ্ছে। প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা দাবি করেছেন, তাদের কৃষকদের ক্ষতিপূরণ ছাড়া জমি দখল করে নেয়া ঔপনিবেশিক ও বর্ণবাদ যুগের সময়ের কৃষ্ণাঙ্গদের বিরুদ্ধে মারাত্মক ঐতিহাসিক অবিচারের মতোই হবে। রামাফোসা বলেন, ১৯৯৪ সালে বর্ণবাদের অবসান হলেও মোট জনসংখ্যার মাত্র ৮ শতাংশ শ্বেতাঙ্গের দখলে রয়েছে ৭২ শতাংশ কৃষিজমি। অথচ দেশের চার-পঞ্চমাংশ কৃষাঙ্গদের মালিকানায় রয়েছে মাত্র ৪ শতাংশ কৃষিভূমি। এ বৈষম্যের সৃষ্টি হয়েছে ঔপনিবেশিক সময়ে। ঐ সময় তাদের জমি কিনে নেয়া হয়েছে এবং দখল করে নেয়া হয়েছে। কিন্তু শাসনতন্ত্র পরিবর্তনের পরিকল্পনা পার্লামেন্টে এখনও অনুমোদন করা হয়নি এবং কীভাবে ভূমির পুনর্বণ্টন হবে এবং স্বাধীনতাউত্তর জিম্বাবুইয়ে পরিকল্পনার মতো এ জমি অধিগ্রহণ সিদ্ধান্ত ও অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে কিনা দক্ষিণ আফ্রিকায় এসব বিষয় নিয়ে চলছে জোর বিতর্ক। প্রধান বিরোধী দল ডেমোক্র্যাটিক এলায়েন্সের নেতা সুমুসি বলেন, আন্তর্জাতিক নেতাদের আশঙ্কার কোন কারণ নেই। দলটি জোর করে সরকারের জমিদখলের সিদ্ধান্তের বিরোধী। কিন্তু ভূমি সংস্কার উদ্যোগের প্রতি সমর্থন রয়েছে তাদের। বিরোধীদলীয় এ নেতা টুইটে লেখেন, দক্ষিণ অফ্রিকার ভূমি অধিকারচ্যুতি আমাদের শাসনতন্ত্রে বর্তমান অবস্থাতে সম্ভব। আমরা অবশ্যই দক্ষিণ আফ্রিকার সকল মানুষের জন্য ভূমির মালিকানা নিশ্চিত করব।
×