ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পদ্মা সেতুর কাজ ঈদেও চলমান ছিল, চার খুঁটির নক্সা অনুমোদন

প্রকাশিত: ০৫:১৯, ২৫ আগস্ট ২০১৮

 পদ্মা সেতুর কাজ ঈদেও চলমান ছিল, চার খুঁটির নক্সা অনুমোদন

মীর নাসিরউদ্দিন উজ্জ্বল, মুন্সীগঞ্জ ॥ পদ্মা সেতুর চার খুঁটির নক্সার চূড়ান্ত অনুমোদন হয়েছে। এতে বাকি থাকল আরও সাত খুঁটির নক্সা। পদ্মার তলদেশেরে গভীরে নরম মাটি থাকার কারণে ১১টি পিলারের নক্সা বাকি ছিল। বনানী সেতু ভবনে নক্সা অনুমোদন শেষে মাওয়ায় এটি পৌঁছানো হয়েছে। সেতুর ২৯, ৩০, ৩১ ও ৩২ নম্বর খুঁটির নক্সার এই চূড়ান্ত করণের মধ্য দিয়ে পদ্মা সেতুর কাজের অগ্রগতি আরেক ধাপ এগিয়ে গেল। বাকি সাত খুঁটির নক্সা আগামী ২০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে পাওয়া যাবে বলে দায়িত্বশীলরা জানিয়েছেন। একটি টেস্ট বাকি থাকায় এই সাত খুঁটির নক্সা এখনই পাওয়া যায়নি। এদিকে ঈদের দিনেরও কাজ চলমান ছিল। দেশী-বিদেশী কর্মীরা রাত দিন কাজ করে যাচ্ছেন। অনেক মুসলিম কর্মী ঈদের ছুটিতে বাড়ি গেলেন। তবে তারাও ঈদ কাটিয়ে নির্ধারিত কর্ম দিবসেই কাজে যোগ দিচ্ছেন বলে দায়িত্বশীলরা নিশ্চিত করেছেন। শরতে পদ্মায় কাজে আরও গতি আসতে শুরু করেছে। বর্ষার পানি নেমে যাচ্ছে। শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই এবার পদ্মায় প্রচুর কাজ হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা। ৪২ টি খুঁটির (পিয়ার) ওপর দাঁড়াবে স্বপ্নের পদ্মাসেতু। এর মধ্যে মূল নদীতে ৪০টি খুঁটি। এই ৪০ খুঁটির মধ্যে ২৬টির ডিজাইন আগেই পাওয়া গিয়েছিল। পরে পাওয়া আরও ৩টিসহ ডিজাইন চূড়ান্ত করা হয় ২৯টি খুঁটির। এরমধ্যে এখন পাওয়া গেল আরও চারটি। মাটির গঠনগত বৈচিত্র্য ও গভীরতার তারতম্যের কারণে পদ্মাসেতুর মাঝনদী ও মাওয়া প্রান্তের এসব খুঁটি নিয়ে চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়। পদ্মার তলদেশের গভীরে নরম মাটি থাকার কারণে ৩৩, ৩৪, ৩৫ ও ৩৬ নম্বর খুঁটির ডিজাইনে পরিবর্তন আনা হয়। পরিবর্তিত ডিজাইনে এই চার খুঁটিতে সাতটি করে পাইল বসছে। এর মধ্যে অন্যান্য খুঁটির ন্যায় রেকিং ছয়টি পাইল এবং মাঝে ভার্টিক্যাল অর্থাৎ সরাসরি সোজা আরও একটি অতিরিক্ত পাইল স্থাপন হচ্ছে। তবে দৈর্ঘ্য কমিয়ে ১২৮ থেকে ১১৪ মিটার করা হচ্ছে। এছাড়া ১৫, ১৯, ২৪, ২৫ ও ২৮ নম্বর খুঁটিতেও একই ডিজাইনে সাতটি করে পাইল বসবে। তলদেশের নরম মাটি, সেই একই কারণে পদ্মা সেতুর ৬, ৭, ৮, ৯, ১০, ১১, ১২, ২৬, ২৭, ২৯, ৩০, ৩১ ও ৩২ নম্বর খুঁটিতেই একই ডিজাইনে সাতটি করে পাইল বসবে। এই ১৩টির ল্যান্থ নির্দিষ্ট করে দেয়া হলেও ৭টির নক্সা এখন পাওয়া যায়নি। তবে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এই চূড়ান্ত ডিজাইন নক্সা হাতে পাওয়া এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। তবে এই ২২টি ব্যতীত নদীর ১৮টি খুঁটিতে ছয়টি করে পাইল। এসব পাইলের ড্রাইভ স¤পন্ন হলে সেতুতে ¯প্যান তোলা হবে। ¯প্যানে গাডার বসিয়ে সড়ক নির্মাণ করলেই পূর্ণাঙ্গ হবে পদ্মা সেতু। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রজ্ঞাপূর্ণ সিদ্ধান্তে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের যৌক্তিকতা আজ প্রমাণিত। প্রধানমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তে বাঙালী বিশ্ববাসীর কাছে এক বিশেষ উচ্চতায় স্থান করে নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর পদ্মা সেতু তৈরির এই সঠিক সিদ্ধান্তে বাঙালী জাতির মণিকোঠায় স্থান করে নিয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাই এই অঞ্চলের মানুষ চায় প্রধানমন্ত্রী বার বার পদ্মা সেতুর কাছে আসুক। তাই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে পদ্মা তীরের মানুষ। গত ২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বর মূল সেতুর কাজের উদ্বোধন করতে প্রধানমন্ত্রী মাওয়া এসেছিলেন। এদিকে পদ্মা সেতুর সঙ্গে রেল সংযোগের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনে আগামী সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে প্রধানমন্ত্রী মাওয়া আসছেন।
×