ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় বিএনপিকে নতুন সঙ্কটে ফেলবে

প্রকাশিত: ০৫:১৬, ২৫ আগস্ট ২০১৮

   ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় বিএনপিকে নতুন সঙ্কটে ফেলবে

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ রক্তাক্ত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় বিএনপিকে নতুন সঙ্কটে ফেলবে দাবি করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সেপ্টেম্বরে গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ের সম্ভাবনা তৈরি হওয়ার কারণেই বিএনপি নেতারা চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। কারণ বিএনপির প্রত্যক্ষ মদদে, হাওয়া ভবনের সরাসরি পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় সেদিন ওই হত্যাকান্ড ঘটেছিল। তারা জড়িত বলেই তাদের এই গাত্রদাহ। কারণ রায় বের হলে তারা নতুন করে সঙ্কটে পড়বে। তারা এমনিতেই সঙ্কটে রয়েছে। বিশিষ্ট নারী নেত্রী ও আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক বেগম আইভি রহমানের ১৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শুক্রবার সকালে বনানীতে তার কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের জনসভায় দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে চালানো গ্রেনেড হামলায় নিহত হন মোট ২৪ জন। আহত হন কয়েক শ’ নেতা-কর্মী। হামলার দিন পা উড়ে যাওয়া প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমান চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রাণ হারান ২৪ আগস্ট। আগামী মাসে রায় হতে পারে গ্রেনেড হামলা মামলার। এ বিষয়ে বিএনপি নানা প্রতিক্রিয়া দিচ্ছে। এ প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমি তো বুঝতে পারলাম না, কীভাবে ও কী প্রভাব পড়বে? আজকে আমিসহ ৫শ জন তো এখনও পঙ্গু; কেউ অর্ধপঙ্গু, কেউ পুরো পঙ্গু হয়ে এখনও আছে, হুইল চেয়ারে চলে। এই হত্যাকা-ের কি বিচার হবে না?’ তিনি বলেন, এখানে তাদের (বিএনপি) কেন গায়ে জ্বালা? কারণ তারাই এই হত্যাকা-ের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। ওবায়দুল কাদের বলেন, হত্যাকারী যেই হোক, যত প্রভাবশালীই হোক, ক্ষমা পাবে না। বিচারের রায় আমরা প্রভাবিত করতে চাই না, নিরপেক্ষ বিচার হচ্ছে, স্বাধীন বিচার হবে। বিচারে যারাই দোষী সাব্যস্ত হবে, শাস্তি তাদের পেতেই হবে। তিনি বলেন, ‘সেপ্টেম্বরে রায় হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এ কথা শুনেই তো বিএনপি এখন এ নিয়ে চিন্তিত। এটা আবার তাদেরকে নতুন করে রাজনৈতিক সঙ্কটে ফেলে দেবে। তারা এমনিতেই সঙ্কটে আছে। তিনি দাবি করেন, বিএনপির পরিকল্পনায়, তাদের নির্দেশনায়, তাদের নিয়োগ করা, তাদের ভাড়া করা ‘পলিটিক্যাল কিলারস’ এই হত্যাযজ্ঞ ঘটিয়েছে। বিএনপি সরকারের প্রত্যক্ষ মদদে, হাওয়া ভবনের সরাসরি পরিকল্পপনা এবং নির্দেশনায় গ্রেনেড হামলা হয়। ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি তো ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার আলামত পুড়িয়ে ফেলেছে, এফবিআইকে তদন্ত করতে দেয়নি, স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডকে আসতে দেয়নি এবং জজ মিয়া নাটক সাজিয়েছিল।এই নির্মম হত্যাকা-ে, এই নৃশংস গ্রেনেড হামলা যা রক্তস্রোত বইয়ে দিয়েছিল বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে। এর বিচার তো তারা করেনি, প্রহসনমূলক একটা তদন্ত কমিটি করেছিল। সে তদন্ত কমিটির রিপোর্ট ছিল হাস্যকর। তিনি বলেন, এখন এই হত্যাকন্ডের বিচার হচ্ছে। দেশের মানুষ খুশি। শুধু অখুশি হচ্ছে বিএনপি। কারণ এই হত্যাোন্ডের সঙ্গে মঞ্চের নেপথ্যে বিএনপির নেতারা জড়িত। বিএনপির দাবি পূরণ না হলে একাদশ জাতীয় নির্বাচন হতে না দেয়ার বিষয়ে দলটির নেতাদের বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের প্রশ্ন রেখে বলেছেন, তারা কী নির্বাচন প্রতিহত করবে? জনগণই এবার তাদের পাল্টা প্রতিহত করবে। আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের নামে প্রতারণা করছে বলে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, তারা যা করেছে প্রতারণা গণতন্ত্রের নামে, সেটাই এখন আওয়ামী লীগের ঘাড়ে চাপাচ্ছে। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য এ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডাঃ দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, একেএম এনামুল হক শামীম, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য মারুফা আক্তার পপি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
×