ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আওয়ামী লীগকে আর ফাঁকা মাঠে খেলতে দেয়া হবে না ॥ রিজভী

রাজধানীতে খালেদার মুক্তি দাবিতে বিএনপির ঝটিকা মিছিল

প্রকাশিত: ০৫:১৪, ২৫ আগস্ট ২০১৮

   রাজধানীতে খালেদার মুক্তি দাবিতে বিএনপির ঝটিকা মিছিল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে রাজধানীতে ঝটিকা মিছিল করেছে বিএনপি। শুক্রবার সকাল ৯টায় বনানী কামাল আতাতুর্ক রোডে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বে এ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। এ মিছিলে বিএনপির অন্য কোন কেন্দ্রীয় নেতাকে না দেখা গেলেও দল ও এর বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। এদিকে বৃহস্পতিবার দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগকে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের মতো শূন্য মাঠে আর খেলতে দেয়া হবে না। শুক্রবার সকাল ৯টায় রিজভীর নেতৃত্বে হঠাৎ করে দলের কিছু নেতাকর্মী বনানী কামাল আতাতুর্ক রোডে জড়ো হয়ে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে মিছিল শুরু করে। মিছিলটি মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যে বনানী কাকলী মোড়ে পৌঁছে। এ সময় মিছিলের কাছে পুলিশ এসে পৌঁছলে গ্রেফতারের ভয়ে দ্রুত সটকে পড়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা। ঝটিকা মিছিলে অংশ নেয়া বিএনপি নেতাকর্মীদের মুখে স্লোগান ছিল এমন-‘খালেদা জিয়া বন্দী কেন শেখ হাসিনা জবাব চাই’, ‘অবিলম্বে খালেদা জিয়ার মুক্তি দাও দিতে হবে’। উল্লেখ্য, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ৫ বছরের সাজা মাথায় নিয়ে ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে বন্দী হন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। এরপর বিএনপি এই ইস্যুতে রাজপথে তেমন কোন কর্মসূচী পালন করতে না পারলেও মাঝে মধ্যেই ঝটিকা মিছিল করে দলের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগকে আর শূন্যমাঠে খেলতে দেয়া হবে না- রিজভী ॥ আওয়ামী লীগকে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের মতো শূন্যমাঠে আর খেলতে দেয়া হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। বৃহস্পতিবার দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো একতরফা নির্বাচন আবারও করতে চাইলে জনগণ তা প্রতিহত করবেই। রিজভী অভিযোগ করেন, শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন মানেই ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের আসতে না দেয়া। একতরফা নির্বাচন করবেন বলেই তিনি প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ খালেদা জিয়াকে মামলায় সাজা দিয়ে কারাবন্দী করেছেন। তিনি গণমাধ্যমকে সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণে নিয়েছেন। সমালোচনাকারী বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গুম ও ক্রসফায়ার করতেও দ্বিধা করেন না। তাই শেখ হাসিনার অধীনে কখনই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। সরকারকে উদ্দেশ করে রিজভী বলেন, আপনাদের চিরকাল ক্ষমতায় থাকার স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে পরিণত হবে। একের পর এক বেআইনী কাজ করে যাবেন, জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নেবেন, আর জনগণ বসে থাকবে, ঘরে বসে আঙ্গুল চুষবে এটা ভাবার কোন কারণ নেই। রিজভী বলেন, খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঈদের দিন বিএনপির সিনিয়র নেতাদের দেখা করতে দেয়া হয়নি। আর অনেক দেরিতে কারা ফটকের বাইরে আত্মীয়-স্বজনদের অপেক্ষা করিয়ে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে দিলেও বাসা থেকে সঙ্গে আনা রান্না করা খাবার তাকে দেয়া হয়নি। সকাল থেকে না খেয়ে অভুক্ত অবস্থায় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া অপেক্ষা করছিলেন স্বজনদের সঙ্গে নিয়ে একসঙ্গে আহার করবেন, অনেকদিন পর প্রিয় নাতনিকে সঙ্গে নিয়ে খাবেন। কিন্তু কারা কর্তৃপক্ষ সরকারকে খুশি করতেই খাবার নিতে দেয়নি। রিজভী বলেন, কারা কর্তৃপক্ষের অমানবিক আচরণ দেখে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার আত্মীয়-স্বজনরা কাঁদতে কাঁদতে কারাগার থেকে বেরিয়ে আসেন। এ সরকার যে অমানবিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে তা শুধু মনুষ্যত্বহীনতায় নয়, তা ক্ষমতার অনমনীয় হিংস্র্রতার একটি ভয়াবহ রূপ। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশে রিজভী বলেন, শূন্য মাঠে আর খেলতে দেয়া হবে না। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনেই নির্বাচন হতে হবে। আর দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বেই বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ আবারও একতরফা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে এবং তার আলামত স্পষ্ট। ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদকে নোয়াখালীর নিজ বাড়িতে কয়েকদিন অবরুদ্ধ করে রাখার অভিযোগ করে রিজভী বলেন, ঈদের দিনেও তাকে তার বাবা-মায়ের কবর জিয়ারত করতে দেয়া হয়নি। এটাই হচ্ছে আওয়ামী লীগ ও ওবায়দুল কাদের মার্কা গণতন্ত্রের নমুনা। অর্থাৎ নির্বাক, নিঃশব্দ পরিবেশ থাকবে, আর সেখানে তারা একতরফা নির্বাচন করবে। আমরা বলে দিতে চাই, ভোটারবিহীন বাকশালী নির্বাচন ঠেকাতে জনগণের শক্তির বিপুল উদ্গিরণ হচ্ছে। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, নাজমুল হক নান্নু, ফরহাদ হালিম ডোনার, দলের স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সফু, দলের কেন্দ্রীয় নেতা এম এ মালেক, আবদুস সালাম আজাদ, মুনির হোসেন প্রমুখ।
×