ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

প্রচুর বেচাকেনা

রাজধানীর হাটগুলো কোরবানির পশুতে ভরপুর

প্রকাশিত: ০৫:০৭, ২১ আগস্ট ২০১৮

   রাজধানীর হাটগুলো কোরবানির পশুতে ভরপুর

ওয়াজেদ হীরা ॥ গরু-মহিষ কিংবা ছাগল-ভেড়া সব ধরনের কোরবানির পশুতে ভরপুর রাজধানীর পশুরহাটগুলো। সেই সঙ্গে চলছে হাটগুলোতে জমজমাট বেচাকেনাও। গতবছর শেষের দিকে রাজধানীর বাজারে হঠাৎ ‘পশু সঙ্কট’ দেখায় এ বছর অনেকেই আগেই কিনে নিয়েছেন কোরবানির পশু। ইতোমধ্যেই রবি ও সোমবার রাজধানীর প্রায় সবহাটেই প্রচুর বেচাকেনা হয়েছে। দিনরাত ২৪ ঘণ্টাই বেচাকেনায় সরগরম পশুরহাটগুলো। যারা এখনও কেনেন নি তারা আজই ছুটবেন হাটে। কেননা, আগামীকালই কোরবানির ঈদ। রাজাধানীর কয়েকটি হাটঘুরে জমজমাট বিক্রি দেখা গেছে। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটিতে একটি স্থায়ীসহ মোট ২৩টি পশুর হাট বসেছে। সিটি কর্পোরেশনের নির্দেশনা অনুযায়ী ঈদের তিনদিন আগে থেকে পশু উঠানোর কথা থাকলেও এর প্রায় সপ্তাহ খানেক আগে থেকে বিভিন্ন জায়গার পশু নিয়ে আসতে থাকবে বেপারীরা। তবে বেচাকেনাটা শুরু হয় রবিবার থেকেই। রবিবার অল্প অল্প পশু বিক্রি হয় এবং সোমবার প্রচুর বিক্রি হয়েছে। যারা চাকরিজীবী তারা অফিস শেষে সন্ধ্যায় ছুটেছেন গরুর হাটে। ইতোমধ্যেই অনেকেই কিনে নিয়েছেন পছন্দসই কোরবানির পশু। সাধ্যমতো কেউ গরু-মহিষ বা কেউ ছাগল-ভেড়া কিনেছেন। অনেকেই গরু-ছাগল দুটোই কিনেছেন। আজ মঙ্গলবার দিনরাত মিলিয়ে প্রচুর বিক্রি হবে আশা করছেন হাটের ইজারাদারসহ বেপারীরাও। আফতাব নগর হাটের হাসিলঘরের দায়িত্বরত মোসলেম উদ্দিন বলেন, সাধারণত ঈদের আগের দিন এবং রাতে বেশি বিক্রি হয়। ঈদের দিনও অনেক গরু বিক্রি হয় এবছর দুইদিন আগে থেকেই ভালো বিক্রি হচ্ছে। গতবারের গরু সঙ্কটের আশঙ্কা থেকে এটি হতে পারে বলে জানালেন তিনি। রাজধানীর স্থায়ী পশুর হাট গাবতলিতেও দেখা যায়, প্রচুর মানুষের সমাগম হাটে। ক্রেতারা পশু দেখছেন এবং কিনছেন। হাটের ১নং হাসিল ঘরের মাসুম মিয়া বলেন, ইতোমধ্যেই রাজধানীবাসীর অনেকেই পশু কিনে নিয়েছেন। তবে মূলচাপটা পড়বে মঙ্গলবার সারাদিন এবং রাতে সমানতালে। শাজাহানপুর হাটের কতর্ব্যরত ব্যক্তিরা জানালেন বেচাকেনা জমজমাট শুরু হয়ে গেছে। এদিকে, শুরু থেকে বিক্রেতারা বেশি দাম হাঁকালেও রবিবার রাত থেকে কিছুটা দাম ছাড়তে শুরু করেছেন বলে জানা যায়। এতে করে রাজধানীর অনেকেই রবিবার রাতে এবং সোমবার গরু কিনে নিয়েছেন। হাসিল ঘরগুলোর সামনে বিক্রি হওয়া গরুর হাসিল পরিশোধের জন্য দীর্ঘ লাইনও দেখা যায়। কমলাপুর হাটে গরু কিনে ফিরার পথে মাসুদ করিম বলেন, ৮০ হাজার টাকায় কিনলাম। গতবার গরু সঙ্কটে পাওয়া কষ্ট ছিল তাই এবার আগেই কিনে নিলাম, যেহেতু কিনতেই হবে। বাজার নিয়ে বলেন, গতবারের চেয়ে কিছুটা বেশি তবে দেশী গরু একটু বেশি দাম সবসময়ই থাকে। রাজধানীর ভাটারা (সাঈদ নগর) হাট, তেজগাঁও শিল্প এলাকার পলিটেকনিক্যাল কলেজ মাঠ, উত্তর শাহজাহানপুর খিলগাঁও মৈত্রী সংঘের মাঠ সংলগ্ন খালি জায়গা, ব্রাদার্স ইউনিয়নের বালুর মাঠ সংলগ্ন খালি জায়গার হাট ঘুরে দেখা গেছে পশুতে ভরপুর হাট। অন্যান্য হাটের খোঁজ নিয়ে জানা গেছে প্রচুর গরু আমদানি হয়েছে। হাটে আসা ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়- বড় গরুর তুলনায় ছোট ও মাঝারি আকৃতির দেশী গরুর চাহিদা বেশি। এদিকে, সোমবারও রাজধানীর বিভিন্ন হাটে ট্রাক ভর্তি গরু-ছাগল আসতে দেখা গেছে। জানা গেছে, এই মুহূর্তে যারা আসছে এরা রাজধানীর আশপাশ জেলারই বেশি। এছাড়াও দৌলদিয়া ঘাটে এবং যমুনা সেতু পাড় হতেও অনেকের বেশি সময় লাগার জন্য একটু দেরিতে হাঠে উঠেছেন। জমজমাট হাটকেন্দ্রিক ভ্রামমাণ ব্যবসা ॥ কোরবানি পশুর হাটকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠা নানা ধরনের ভ্রামমাণ ব্যবসাও বেশ জমজমাট। বিশেষভাবে অস্থায়ীভবে গড়ে উঠ গো-খাদ্যের বাজার বেশ জমজমাট। প্রতিটি হাটের আশপাশে খড়, ভুষি বা কাচা ঘাষ বিক্রি হচ্ছে। একই সঙ্গে কাগজ ও জরির মালা, ঘণ্টি মালা, নানা ধরনের কাপড়ের মালা এবং রঙ-বেরঙের দড়িসহ নানা উপকরণও জমজমটা বিক্রি করতে দেখা গেছে। এসবের মূল্য খুব বেশি না হলেও ঈদ আর কোরবানির হাটকে কেন্দ্র করে মৌসুমী ব্যবসায়ীরা সাময়িকভাবে বিক্রি করেন অনেকেই।
×