ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

‘সরকারী চাকরি আইন ২০১৮’ মন্ত্রিসভায় অনুমোদন

অনুমতি ছাড়া ফৌজদারি মামলায় সরকারী কর্মচারী গ্রেফতার নয়

প্রকাশিত: ০৪:৩৬, ২১ আগস্ট ২০১৮

 অনুমতি ছাড়া ফৌজদারি মামলায় সরকারী কর্মচারী গ্রেফতার নয়

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দায়িত্ব পালনের সঙ্গে সম্পর্কিত অভিযোগে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কোন সরকারী কর্মচারীকে ফৌজদারি মামলায় গ্রেফতার করা যাবে না, এমন বিধান রেখে ‘সরকারী চাকরি আইন, ২০১৮’ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠেয় মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এ আইনের অনুমোদন দেয়া হয়। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব শফিউল আলম এ তথ্য জানান। তিনি জানান, নতুন খসড়া আইনের ৪১ ধারার উপধারা (১)-এ বলা আছে, কোন সরকারী কর্মচারীর দায়িত্ব পালনের সঙ্গে সম্পর্কিত অভিযোগে দায়েরকৃত ফৌজদারি মামলায় আদালত কর্তৃক অভিযোগপত্র গৃহীত হওয়ার আগে তাকে গ্রেফতার করতে হলে সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি গ্রহণ করতে হবে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, চাকরি আইনের ৪২ ধারায় ফৌজদারি মামলায় দ-িত কর্মচারীর ক্ষেত্রে ব্যবস্থা সংক্রান্ত উপধারা (১) এ বলা হয়েছে, কোন সরকারী কর্মচারী ফৌজদারি মামলায় আদালত কর্তৃক মৃত্যুদ- বা ১ (এক) বছর মেয়াদের অধিক মেয়াদের কারাদ-ে দ-িত হলে, উক্ত দ- আরোপের রায় বা আদেশ প্রদানের তারিখ থেকে চাকরি থেকে তাৎক্ষণিকভাবে বরখাস্ত হবেন। একই ধারার (২) উপধারায় বলা হয়েছে, কোন সরকারী-কর্মচারী ফৌজদারি মামলায় আদালত কর্তৃক অনুর্ধ এক বছর মেয়াদের কোন কারাদন্ড বা অর্থদন্ড বা উভয় দণেড দন্ডি হলে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ তাকে তিরস্কার, নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য পদোন্নতি বা বেতন বৃদ্ধি স্থগিতকরণ, নিম্ন পদ বা নিম্নতর বেতন স্কেলে অবনমিতকরণ বা সরকারী সম্পত্তি ক্ষতিসাধন পূরণের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। শফিউল আলম জানান, সরকারী কর্মচারীদের শাস্তির ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতি যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হন যে, আদালত কর্তৃক কারাদন্ডে দন্ডে বা চাকরি হইতে বরখাস্তকৃত কোন ব্যক্তিকে অনুরূপ বরখাস্ত হইতে অব্যাহতি প্রদানের বিশেষ কারণ বা পরিস্থিতি রহিয়াছে, তাহা হইলে তিনি উক্ত ব্যক্তিকে অব্যাহতি প্রদান করিতে পারিবেন এবং অনুরূপ আদেশ প্রদান করা হইলে উক্ত কর্মচারী চাকরিতে পুনর্বহাল হইবেন। সরকারী চাকরি আইনের ৩৫ ধারায় বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতি কর্তৃক ধারা ৩২ বা ধারা ৩৩ এর উপধারা (১) এর অধীন প্রদত্ত আদেশের বিরুদ্ধে আপীল করা যাবে। মন্ত্রিসভায় আজ কওমি মাদ্রাসার দাওরায়ে হাদিস (তাকমিল) সনদকে ইসলামিক স্টাডিজ ও এ্যারাবিক স্নাতকোত্তর ডিগ্রীর মতো সমমান প্রদান করে একটি আইনের খসড়ায় নীতিগতভাবে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মাদ শফিউল আলম বলেন, কওমি মাদ্রাসাগুলোকে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার মূল স্রোতে নিয়ে আসতে দাওরায়ে হাদিসকে (তাকমিল) স্নাতকোত্তর ডিগ্রীর (ইসলামিক স্টাডিজ ও এ্যারাবিক) সমমান প্রদান করে প্রণীত এ আইনের খসড়ার অনুমোদন দেয়া হয়। সচিব বলেন, ২০১৭ সালের ১৩ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এ সম্পর্কিত এক গেজেট নোটিফিকেশনের ভিত্তিতে এই খসড়া আইন প্রণীত হয়েছে। ওই গেজেটে দাওরায়ে হাদিস ডিগ্রীকে স্নাতকোত্তর সমমান দেয়া হয়েছে। শফিউল বলেন, বর্তমানে দেশে যে ৬টি কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড রয়েছে সেগুলোর সমন্বয়ে ‘আল-হায়াতুল উলিয়া লিল-জমিয়াতিল কাওমিয়া বাংলাদেশ’ নামে একটি বোর্ড গঠন করা হবে। এর অফিস হবে ঢাকায়। পদাধিকারবলে, বিফাকুল মাদরিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ’র চেয়ারম্যানই হবেন (বর্তমান ছয়টি বোর্ডের একটি) ১৭ সদস্যের সমন্বিত বোর্ডের চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, বোর্ড চেয়ারম্যান এক বা একাধিক ব্যক্তিকে বোর্ডের সদস্য হিসেবে কো-অপ্ট করতে পারবেন, কিন্তু এই ধরনের সদস্য সংখ্যা ১৫ এর বেশি হবে না। সচিব বলেন, বোর্ড কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যসূচী এবং প্রশ্নপত্র তৈরি করবে, পরীক্ষা এবং পুরস্কার সনদের নিয়ম-নীতি পরিচালনা করবে। তিনি বলেন, ‘তারা শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে কার্যক্রম সম্পর্কে জানাবে, এই জন্য বোর্ড পরিচালনার জন্য অনেক উপ-কমিটি গঠন করতে পারবে এবং তা রাজনীতির উর্ধে থাকবে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, মন্ত্রিসভা এছাড়াও প্রস্তাাবিত বাংলাদেশ মাছ গবেষণা ইনস্টিটিউট আইন- ২০১৮ চূড়ান্ত অনুমোদন করেছে, ১৯৮৪ সালে এটি অধ্যাদেশ থেকে আইনে পরিণত হয়। আলম বলেন, ১৯৮৪ সালের অধ্যাদেশের মাধ্যমে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এর সদর দফতর ময়মনসিংহে অবস্থিত। তিনি বলেন, নতুন আইন গঠন করতে অধ্যাদেশে একটু পরিবর্তন আনতে হয়েছে। তিনি বলেন, ইনস্টিটিউট চালানোর জন্য ১৫ সদস্যের একটি পরিচালনা পর্ষদ থাকবে এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী এর চেয়ারম্যান হবেন। শফিউল বলেন- ‘বাংলাদেশে পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ সহযোগিতার বিষয়ে বাংলাদেশ ও রাশিয়ান ফেডারেশনের মধ্যে ২০১১ সালের ২ নবেম্বরে করা প্রোটোকল চুক্তি স্বাক্ষরটি আজ মন্ত্রিসভার অনুমোদন করা হয়েছে।
×