ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

শান্তি ও মানবতার অগ্রদূতের অলৌকিক বেঁচে থাকা

প্রকাশিত: ০৪:১৮, ২১ আগস্ট ২০১৮

শান্তি ও মানবতার অগ্রদূতের অলৌকিক বেঁচে থাকা

শোকের মাস আগস্ট, রক্তাক্ত আগস্ট, বিভীষিকাময় আগস্ট। আগস্ট মাস এলেই মনে পরে শতাব্দীর মহানায়ক বঙ্গবন্ধুর কথা, ১৫ আগস্ট শহীদদের কথা। পক্ষান্তরে আগস্ট এলেই হৃদয়ের মণিকোঠায় ভিড় করে ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউ-এ বর্বরোচিত গ্রেনেড হামলায় নিহত ২৪ জন নেতাকর্মীর কথা। শান্তি ও মানবতার অগ্রদূত শেখ হাসিনার অলৌকিক বেঁচে থাকার কথা। আজ ভয়াল ২১ আগস্ট। ২০০১ সালে নির্বাচনে চারদলীয় জোট সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার পর টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া তথা ১ লাখ ৪৭ হাজার বর্গকিলোমিটারের এই ভূখন্ডটির রূপ পরিবর্তন হতে থাকে। বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের হত্যা ও নির্যাতন, সংখ্যালঘু নির্যাতন ও ধর্ষণ, মৌলবাদ ও উগ্র সাম্প্রদায়িকতার স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয় বাংলাদেশ। একদিকে ক্রমাগত সন্ত্রাস, অন্যদিকে ২০০৪ সালের ১ এপ্রিল চট্টগ্রামে ১০ ট্রাক অস্ত্র উদ্ধার, একই বছর ৭ মে আওয়ামী লীগের দলীয় সাংসদ ও টঙ্গীর মহানেতা আহসান উল্লাহ মাস্টারকে দিবালোকে প্রকাশ্য জনসভায় নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা, ২১ মে ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা ঘটনার প্রতিবাদে বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউয়ে ওই জনসভাটি ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ২১ আগস্ট নারকীয় ঘটনাটি কারা এবং কিভাবে ঘটিয়েছে, তাদের মূল উদ্দেশ্য দেশবাসীর কাছে আজ পরিষ্কার। বর্বরোচিত ঘটনাটি নিয়ে বিএনপি জোট সরকারের মিথ্যাচার ও জজ মিয়া নাটকের সমাপ্তি হয়েছে। বলা যায়, এক-এগারো পরবর্তী সময়ে ২১ আগস্টের ঘটনাটির প্রকৃত রহস্য বের হতে শুরু করে। সত্যের আলোয় এগিয়ে যেতে থাকে রক্তের বন্যা। দেশ-বিদেশেরে কোটি কোটি মানুষের কাছে ঘাতকদের মুখোশ উন্মোচিত হতে থাকে। একজন মন্ত্রীর সরকারী বাসভবনে বসে একটি দেশের বিরোধীদলীয় নেত্রীকে হত্যার ঘৃণিত পরিকল্পনার কথা, স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধুর রক্তের শেষ অস্তিত্ব শেখ হাসিনাকে হত্যার পরিকল্পনার মধ্য দিয়ে দেশকে নেতৃত্ব শূন্য করার হীন চক্রান্তের কথা আজ সমগ্র বাঙালী জাতির কাছে সুস্পষ্ট। ২১ আগস্ট ২০০৪ সাল। দিনটি ছিল শনিবার। সরকারের কাছ থেকে জনসভা করার জন্য মুক্তাঙ্গন কিংবা পল্টন ময়দান ব্যবহারের অনুমতি না পেয়ে ২৩ বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে একটি বড় ট্রাককে মঞ্চ হিসেবে ব্যবহারের জন্য সাজানো হয়। দুপুর ১টা থেকে দূর-দূরান্ত হতে হাজার হাজার নেতাকর্মী সমাবেশে হাজির হতে থাকে। বিকেল ৫টায় সমাবেশস্থলে আসেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা। বিকেল ৫টা ২২ মিনিটে শেখ হাসিনা জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু উচ্চারণের মধ্য দিয়ে তাঁর বক্তব্যে শেষ করে ট্রাক মঞ্চ হতে নিচে নামার জন্য অগ্রসর হচ্ছিলেন। তাঁকে হাত দিয়ে নামতে সাহায্য করছিলেন আইভি রহমান। ঠিক তখনই ঘাতক হায়েনারা আক্রমণ শুরু করে। মুহূর্তেই ঘটে যায় নারকীয় তান্ডব। গাঙ্গেয় অববাহিকার পলল সমৃদ্ধ বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় রচিত হয় আর এক ঘৃণিত অধ্যায়। রক্তের বন্যা আর মানুষের চিৎকার আর্তনাদে ভারি হয়ে ওঠে ঢাকার রাজপথ। নির্মম ও পৈশাচিক গ্রেনেড হামলায় ঘটনাস্থল ও হাসপাতালে প্রাণ হারায় ২৪ জন মানুষ। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভাগ্যক্রমে বেঁচে যাওয়া শেখ হাসিনার সমগ্র জীবনই এক অলৌকিক ইতিহাস, যা বিশ্বের এক বিরল মহাকাব্য। ১৯৭৫ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত দেশের বাইরে প্রবাস জীবন। অবর্ণনীয় দুঃখ-কষ্ট ও স্বজন হারানোর আকুতি নিয়ে কেটে যায় ছয়টি বছর। ১৯৮১ সালে দেশের টানে, দেশপ্রেমের মন্ত্রে উদ্দীপ্ত হয়ে নিজ জন্মভূমিতে ফিরে আসেন শেখ হাসিনা। এরপর বাংলাদেশে গণতন্ত্রের ইতিহাসে রচিত হতে থাকে নতুন ইতিহাস। শেখ হাসিনার জীবনে শুরু হয় নতুন অধ্যায়। স্বৈরাচার এরশাদ কিংবা খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আন্দোলনের নেতৃত্ব তথা গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধারে নিরন্তর চেষ্টা চালাতে গিয়ে তিনি বহুবার হামলার শিকার হয়েছেন, ঘাতকদের টার্গেটে পরিণত হয়েছেন। কিন্তুু গণতন্ত্রের মানসকন্যা হয়ে সৃষ্টিকর্তার অলৌকিক মহিমায় তিনি আজও আমাদের মাঝে বেঁচে আছেন। ১৯৮১ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত অসংখ্যবার ঘাতকদের হত্যা চেষ্টাকে পরাজিত করে কখনও রাষ্ট্রনায়ক, কখনও বা বিরোধীদলীয় নেত্রী, আবার কখনও রাজপথের প্রতিবাদী কা-ারী হয়ে দেশের মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে সংগ্রাম করে যাচ্ছেন। এ কথা স্বীকার করতেই হবে ঘাতকদের হিংস্র থাবা থেকে, স্বাধীনতা বিরোধীদের হামলা থেকে, মৌলবাদী ও জঙ্গীদের ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা থেকে একাধিকবার বেঁচে গিয়ে শেখ হাসিনা আজ ইতিহাসের জীবন্ত কিংবদন্তিতে পরিণত হয়েছেন। সন্ত্রাস মুক্ত, দুর্নীতি মুক্ত, দারিদ্র্য মুক্ত, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে মৃত্যুভয়কে উপেক্ষা করে ছুটে চলেছেন টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া, রূপসা থেকে পাটুরিয়া। তাঁর শরীরে বইছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের সৎ, সংগ্রামী, প্রতিবাদী এবং দেশ প্রেমের রক্তের ধারা। ১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি শেখ হাসিনার জীবনে একটি রক্তাক্ত দিন। স্বৈরাচার এরশাদের বিরুদ্ধে আন্দোলনের নেতৃত্ব দিতে গিয়ে চট্টগ্রামের লালদীঘি ময়দানের সমাবেশে যাবার প্রাক্কালে এরশাদের মদদপুষ্ট তৎকালীন পুলিশ কমিশনারের নির্দেশে গুলিতে প্রাণ হারান ৪০ জন নেতাকর্মী। শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে বৃষ্টির মতো গুলি করলেও ৪০ নেতাকর্মীর রক্তের বিনিময়ে ঘাকতদের টার্গেট ব্যর্থ করে বেঁচে যান শেখ হাসিনা। একই বছর ১০ আগস্ট রাত ১১টায় ধানম-ির ৩২ নম্বর সড়কে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু ভবনে একদল দুষ্কৃতকারী গুলিবর্ষণ করে। ঘাতকদের টার্গেট শেখ হাসিনা এ সময় বাড়ির ভিতরই অবস্থান করছিলেন? কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে যান তিনি। এরপরও থেমে থাকেনি ষড়যন্ত্রকারীরা। ৬ ডিসেম্বর ১৯৯০ সালে পতন হয় স্বৈরশাসক এরশাদের। শেখ হাসিনার রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত জীবনে শুরু হয় আরেক অধ্যায়। ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি সরকার গঠন করে। শেখ হাসিনা বিরোধী দলীয়-নেত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। একই বছর ১৫ সেপ্টেম্বর ঢাকায় উপনির্বাচনে ধানম-ি স্কুলে ভোটদানের পর ধানম-ির গ্রীন রোডে একটি ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনে গেলে শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করে ঘাতকরা। কিন্তু সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছায় সেবারও ঘাতকদের টার্গেট ব্যর্থতায় পরিণত হয়। ১৯৯৪ সালে ডিসেম্বরে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার দাবিতে সারাদেশ যখন আন্দোলন সংগ্রামে উত্তাল, সেই মুহূর্তে দেশব্যাপী লংমার্চের নেতৃত্ব দিতে গিয়ে ট্রেনে যাবার পথে পাবনার ঈশ্বরদী ও নাটোর স্টেশনে শেখ হাসিনার ট্রেনের কামরা লক্ষ্য করে বৃষ্টির মতো গুলি করে ঘাতকরা। কিন্তু শেখ হাসিনা অক্ষত অবস্থায় বেঁচে যান। এরপর ১৯৯৫ সালের মার্চে পান্থপথে আওয়ামী লীগের দলীয় সভায় শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করা হয়। একই বছর ৭ ডিসেম্বর শেখ রাসেল স্কয়ারে একটি অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেয়ার সময় শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করা হয়, কিন্তু এবারও লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে যান। ১৯৯১-১৯৯৬ সালের বিএনপি সরকারের আমলে শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে শেষ হামলা চালানো হয় ১৯৯৬ সালে। কার্জন হলের একটি অনুষ্ঠান শেষে ফেরার পথে। কিন্তু প্রতিবারই ঘাতকরা ব্যর্থ হয়েছে, জননেত্রী শেখ হাসিনা অক্ষত অবস্থায় বেঁচে গেছেন। ১২ জুন ১৯৯৬ সালে অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক পন্থায় আওয়ামীলীগ সরকার গঠন করে। শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর ’৭৫ সালে ১৫ আগস্ট ঘাতক চক্র এবং দোসররা, স্বাধীনতা বিরোধীরা তাকে হত্যার নতুন পন্থা খুঁজতে থাকে। ১৯৯৬ সালের ১৫ আগস্ট টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর মাজারে বোমা হামলার পূর্ব পরিকল্পনা গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে আগেই ফাঁস হওয়ায় চক্রান্তকারীরা ব্যর্থ হয়। এরপর ১ মে ১৯৯৭ সালে রমনার বটমূলে শেখ হাসিনার অনুষ্ঠানে প্রবেশকালে ২৩ রাউন্ড গুলি ও রিভলবারসহ আনিছুল বারি নামে এক যুবককে পুলিশ গ্রেফতার করে। এবারও ঘাতকের টার্গেট ছিল শেখ হাসিনা। ২০০০ সালের ২০ জুলাই গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় শেখ হাসিনার জনসভাস্থলের কাছে ৭৬ কেজি ওজনের শক্তিশালী বোমা পুঁতে রাখে ঘাতকরা। জঙ্গী তথা মৌলবাদী নেতা মুফতি হান্নানের নেতৃত্বে ঐ হত্যার চেষ্টা চালানো হয়। কিন্তু গোয়েন্দা সংস্থার তৎপরতায় ঘাতকদের পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। শেখ হাসিনা প্রাণে বেঁচে যান। ২০০১ সালের ২৯ মে খুলনার রূপসা সেতুর উদ্বোধনের দিন শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা চালানো হয়। ২৬ সেপ্টেম্বর ২০০১ সালে নির্বাচনী প্রচারাভিযানে সিলেট আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে জনসভাস্থলের অদূরে বোমা বিস্ফোরণে ২ জনের মৃত্যু হয়। কিন্তু শেখ হাসিনা বেঁচে যান। ২০০২ সালে ৪ মার্চ উত্তরবঙ্গ সফরকালে নওগাঁ সরকারী মহিলা কলেজের সামনে শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গাড়ির বহরে হামলা চালানো হয়। এরপর ২০০২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর দক্ষিণাঞ্চল সফরকালে সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়ায় সড়ক ব্যারিকেড দিয়ে শেখ হাসিনার ওপর হামলা চালানো হয়। ভাগ্যক্রমে এবারও তিনি বেঁচে যান। ১ অক্টোবর ২০০১ সালের নীল নকশার নির্বাচনে বিএনপি- জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতা দখল করে। শুরু হয় হত্যা, সন্ত্রাস, দুর্নীতি, জঙ্গীবাদ, কালো টাকার জোয়ার এবং সংখ্যালঘু নির্যাতন-তথা মানবতাবিরোধী সব অপরাধী কর্মকা-ে জর্জরিত হয়ে সৃষ্টি হয় বিবর্ণ এক বাংলাদেশ। ২০০১ সালের ১ অক্টোবরের পর মৌলবাদী, জঙ্গীবাদী এবং স্বাধীনতা বিরোধী তথা জোট সরকারের প্রত্যক্ষ পরোক্ষ মদদে কিংবা আশ্রয়ে বিরোধী দলের কত লোকের মৃত্যু হয়েছে, কত সংখ্যক মানুষ ঘড়-বাড়ি বসত-ভিটা ছেড়েছে কিংবা মোহিমা- পূর্ণিমাদের মতো কত নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছে সে তথ্য আমাদের জানা নেই। তবে এ কথা নিশ্চিত করে বলতে পারি, ২০০১ সালের নির্বাচন পরবর্তী দিনগুলোতে বাংলাদেশের মানবতাবিরোধী ও বর্বরোচিত ঘটনাগুলো বিশ্ববিবেককেও নাড়া দিয়েছে। কিন্তু বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারে মন্ত্রী-এমপিদের বিবেককে আদৌ স্পর্শ করেনি। ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ পর্যন্ত রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকাকালীন শেখ হাসিনাকে যতবার হত্যা চেষ্টা করা হয়েছে, তা একটি নজিরবিহীন ঘটনা। এ পরিস্থিতিতে এবং গণদাবির প্রেক্ষিতে ২০০১ সালে সংসদে জাতির পিতার পরিবারের সদস্যদের সর্বক্ষণিক নিরাপত্তার জন্য বিল পাস হয়। কিন্তু বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ২০০১ সালের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন হওয়ার পর পরিকল্পিতভাবে সে আইন বাতিল করে শেখ হাসিনাকে নিরাপত্তাহীন অবস্থায় ফেলে ঘাতকদের উস্কে দিয়ে হত্যার পথ প্রশস্ত করে দিয়েছিল। জোট সরকারের প্রত্যক্ষ মদদে সে ঘৃণিত পরিকল্পনার বাস্তবায়ন ঘটে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউয়ে নারকীয় হত্যাকা-ের মধ্য দিয়ে। কিন্তু ঘাতকদের মূল টার্গেট ব্যর্থ হয়। গুরুতর আহত হয়েও বেঁচে যান শেখ হাসিনা। এরপর তারেক-বাবরের পরিকল্পনায় ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাকারীদের আড়াল করতে ঘৃণিত ধিকৃত মিথ্যাচারের নাটক, যা আমাদের সকলেরই জানান। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি সাধারণ নির্বাচনে জয়ের পর বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবারও স্বাধীনতাবিরোধী, মৌলবাদীগোষ্ঠী, ইসলামী জঙ্গী এবং ’৭৫ সালের ঘাতক ও দোসরদের রক্তচক্ষুতে পরিণত হয়েছেন। তার সামনে এখন অসংখ্য যুদ্ধের ফ্রন্ট। প্রতি মুহূর্তেই ওৎ পেতে বসে আছে ঘাতকচক্র। সুযোগ পেলে তারা শেখ হাসিনাকে হত্যা করে বাংলাদেশের ইতিহাস আবারও বিকৃত করবে। দেশকে ওরা বানাতে চায় জঙ্গীবাদী কিংবা মৌলবাদীদের অভয়ারণ্য। সেই সঙ্গে খুন, ধর্ষণ, দুর্নীতি, লুটপাট তথা নৈরাজ্যময় এক বিবর্ণ বাংলাদেশে পরিণত করতে তারা সদা তৎপর। যেমনটি করেছিল ২০০১-২০০৬ সালে। কিন্তু আমাদের বিশ্বাস ওরা পরাজিত হবে। সৃষ্টিকর্তার অসীম কৃপায় জননেত্রী শেখ হাসিনা বহুমুখী যুদ্ধের এ ময়দানে অবশ্যই সফল হবেন। তাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রতিটি প্রগতিশীল বাঙালীকে এ যুদ্ধে শরিক হতে হবে। সামাজিক আন্দোলন এবং গণজোয়ার সৃষ্টির মাধ্যমে যুদ্ধের কাতারে শামিল হওয়ার এখনই উপযুক্ত সময়। লেখক : সদস্য, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন
×