ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বছর ঘুরে আবার এসেছে ঈদ। ঈদ মানে খুশি, ঈদ মানে আনন্দ। ক’দিন আগেই পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরের আমেজ শেষ হলো। এখন আবার পবিত্র ঈদ-উল-আজহা। ঈদে সবচেয়ে বেশি আনন্দে মেতে ওঠেন তরুণ-তরুণীরা। ত্যাগের মহিমায় মহিমান্বিত ঈদ-উল-আজহায় তারুণ্যের মাঝে বেশ খোশ আমেজ দেখা যায়। তরুণ্য

তারুণ্যের ঈদ আনন্দ

প্রকাশিত: ০৪:০৯, ২১ আগস্ট ২০১৮

 তারুণ্যের ঈদ আনন্দ

ঈদের কেনাকাটা কোরবানির ঈদে সাধারণত পোশাক-আশাক তেমন একটা বেচাবিক্রি হয় না। সবারই ঝোঁক থাকে কোরবানির পশুর প্রতি। তবু তরুণ-তরুণীরা শপিংমলগুলোতে ভিড় জমান পায়জামা-পাঞ্জাবি, থ্রি-পিস, শাড়ি কেনার জন্য। তরুণদের মধ্যে আবার অনেককেই দেখা যায় কালো সানগ্লাস, বাহারি রঙের পাঞ্জাবি কিনতে। আবার মেয়েরা তাদের সাজগোজের জন্য মেকাপ, কানের দুল, হাতের ঘড়ি ও কিনতে দেখা যায়। . কোরবানির পশু কেনায় ব্যস্ততা সারা বিশ্বের মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে সবচেয়ে বড় উৎসব পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর ও ঈদ-উল-আজহা। ঈদ-উল-আজহা এলেই তরুণ-তরুণীরাও মেতে উঠেন পশু কেনার আনন্দ উপভোগে। গরুর হাটে গিয়ে গরু দেখে সেগুলো পছন্দ করা। ক্রয়ের ব্যাপারেও তরুণদের বেশ প্রাধান্য দেয় পরিবার। বিশেষ করে বহুদিন পর বাড়ি ফিরে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গরু কিনতে হাটে যাওয়াতে তরুণরা বেশ স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। লাল গরু না সাদা, কালো গরু এ নিয়েও চলে বেশ তর্ক-বিতর্ক। গরু কেনার জন্য এ হাট থেকে সে হাটে ছুটে বেড়িয়েও একটা অনাবিল আনন্দ খুঁজে বেড়ান তরুণরা। ঈদের আগের দিন পর্যন্ত গরুকে ঘিরে চলে নানা আলোচনা। . ঈদের দিন ঈদের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠেই, নতুন জামা পরে নামাজ পড়তে যাওয়া। দোস্ত, দুশমনের সঙ্গে কোলাকুলি। হাসি, খুশিতে সকলের সঙ্গে মোলাকাত। এছাড়া প্রাচীন সেলামি রেওয়াজ এখনও ধরে রেখেছে তারুণ্যের বাহকরা। বাড়ির বড়দের কাছ থেকে ঈদ সেলামি নেয়ার আনন্দটাও যেন কম কিছু নয়। নামাজ পড়ে এসেই বাড়ির মুরব্বিদের সালাম করলেই মিলে সালামি। সে টাকা দিয়ে বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে নিয়ে বেশ ঘটা করেই চলে খানাপিনা। এরপরই কোরবানির মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হলে কোরবানির গোশত কাটতে বসে যান অনেকেই। পরিবারের সবাই মিলে এমন আনন্দে অংশ নিতে কে না চায় বলেন। গরু কাটা থেকে শুরু করে মাংস বিলানো সব কিছুরই দায়িত্বভার পরে তরুণদের ওপর। কারণ তরুণদের প্রতিই ভরসা বেশি থাকে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের। ওই দিনটিতে তরুণরা কোরবানির মাংস নিয়ে এ বাড়ি থেকে সে-বাড়ি ছোটাছুটি করতে দেখা যায়। বেশির ভাগ তরুণ-তরুণীরা মধ্যবিত্ত ঘরের হওয়ায় ভাগে কোরবানি দিতে হয়। পাড়া-প্রতিবেশী, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, দুস্থদের মাঝে কোরবানির গোশত বিলিয়ে দিতেও বেশ আনন্দ পান তরুণ- তরুণীরা। এরপর মায়ের হাতের কোরবানির গোশত রান্না খেতে হুমড়ি খেয়ে বসে পড়েন তারা। . মিলনমেলা বেশির ভাগ তরুণ-তরুণীরাই আড্ডা মারতে ভালবাসেন। বিশেষ করে ঈদের ছুটিতে যারা গ্রামে আসেন ঈদ করতে তারা কোরবানি শেষ হওয়ার পর ব্যস্ত হয়ে পড়েন কখন তারা তাদের শৈশবের বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডায় মিলিত হবেন। মিলনমেলা ঘটবে বন্ধুদের মাঝে। যারা বিভিন্ন কারণে নিজেদের বাড়ি আসতে পারেন না তারা মুখিয়ে থাকেন ঈদ এলেই হয়ত প্রিয় বন্ধুটির সঙ্গে দেখা হবে। কথা হবে, বুকে জমিয়ে থাকা সকল কথার খই ফুটবে। . বেড়ানো ঈদে বেড়াতে কে না চায় বলেন। আর তারুণ্যের বেড়ানোর গল্প তো আরও মধুময়। ঈদ এলেই তরুণরা ভিড় জমান পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে। লম্বা ছুটি থাকায় ঐতিহাসিক স্থানগুলোই থাকে তাদের পছন্দের শীর্ষে। সাগর, নদী, পাহাড় সকল প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে তরুণ-তরুণীরা ব্যাকুল হয়ে থাকেন। বিশেষ করে এ সময়টাতে তরুণরা বিনোদন কেন্দ্রগুলোর দিকে ছুটতেও বেশি আনন্দ উপভোগ করেন। হৈ-হুল্লোড় আর নাচ-গানে নিজেদের সারাটি দিন মাতিয়ে রাখেন তরুণ-তরুণীরা। এছাড়া অনেকেই আবার আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতেও বেড়াতে যান। . শহুরে তরুণরা আবার শহুরে তরুণ-তরুণীদের মাঝে দেখা যায় ভিন্নরূপ। রাজধানী শহরে বসবাস করা তরুণ-তরুণীরা ছোটেন শহরের বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে। কেউ কেউ আবার ছোটেন সদ্য মুক্তি পাওয়া চলচ্চিত্র দেখতে সিনেমা হলে। এক সঙ্গে বহু তরুণ-তরুণী মিলে সিনেমা হলে গিয়ে চলচ্চিত্র দেখার আনন্দও কম নয়। ঈদে মুক্তি পাওয়া ছবিগুলোর প্রতি তরুণ-তরুণীদের বেশ ঝোঁক থাকে। অভিজাত সিনেমা হলগুলোতে তাই ঈদের সময় তারুণ্যের মেলা দেখা যায়।
×