কোর্ট রিপোর্টার ॥ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ৫০ লাখ টাকা অর্থ আত্মসাতের দুর্নীতির মামলার আসামি সাবেক প্রতিমন্ত্রী এলডিপি নেতা রেদোয়ান আহমেদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেছে আদালত। রবিবার ঢাকার ২ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক এএসএম রুহুল ইমরান এ আসামির চার্জ গঠনের আদেশ দেন। মামলার অপর আসামি মুক্তিযোদ্ধা সংসদের তৎকালীন অর্থসচিব শাহ আলম। তিনি পলাতক রয়েছেন। তার বিরুদ্ধেও রবিবার চার্জ গঠন করা হয়।
দুদকের পক্ষের প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম বলেন, মামলাটিতে রবিবারের আগেও চার্জ গঠনের শুনানি হয়েছে। আসামিপক্ষ বারবার সময় নেয়ার কারণে তা পিছিয়ে যাচ্ছিল। এর আগের ধার্য তারিখেও আসামি পক্ষ সময় আবেদন করায় আদালত সময় আবেদন মঞ্জুর করে ১৯ আগস্ট আসামিকে আদালতে হাজির থাকতে বলেছিলেন। কিন্তু রবিবারও আসামি আদালতে হাজির না হওয়ায় তিনি অসুস্থ বলে সময় প্রার্থনা করা হয়। আদালত সময়ের আবেদন নামঞ্জুর করে আসামির জামিন বাতিল করে চার্জ গঠন করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ হাট-বাজার থেকে প্রতিবছর যে টাকা মন্ত্রণালয় পায় তার ৪ ভাগ টাকা দুঃস্থ ও বেকার মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তার জন্য মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলকে দেয়া হয়। যার পরিমাণ প্রায় ৫ কোটি টাকা। এই টাকা জমা রাখার জন্য সোনালী ব্যাংক মগবাজার শাখায় একটি হিসাব রয়েছে। ২০০২ সালে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন প্রতিমন্ত্রী ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের চেয়ারম্যান রেদোয়ান আহমেদ ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদের অর্থসচিব শাহ আলম এই অর্থের জিম্মাদার হিসেবে বহাল থাকাবস্থায় তৎকালীন ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ কবির আহমদের প্ররোচনায় ওই হিসাব থেকে ৫০ লাখ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাত করেন। অভিযোগ জানিয়ে ২০০৭ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ নুরুল ইসলাম রমনা থানায় একটি মামলা করেন। তদন্তের পর ২০০৭ সালের ৮ অক্টোবর দুদকের সহকারী পরিচালক মোহাঃ আবুল হোসেন আসামি রেদোয়ান এবং শাহ আলমের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। তবে অপর আসামি কবির আহমদের অব্যাহতি প্রার্থনা করা হয়।
চার্জশিট দাখিল হওয়ার পর আসামি রেদোয়ান আহমদের পক্ষে মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে ২০০৭ সালে একটি রিট আবেদন করা হয়। ওই রিট ২০১০ সালের ২৫ অক্টোবর হাইকোর্ট খারিজ করে দেয়। পরে হাইকোর্টের ওই নির্দেশের বিরুদ্ধে তিনি লিভ টু আপীল করেন- যা আপীল বিভাগ ২০১৫ সালের ১৫ নবেম্বর খারিজ করে দেন। ওই রায় পুনঃপর্যালোচনার জন্য তিনি আপীল বিভাগে ২০১৬ সালে একটি রিভিউ আবেদন করেন- যা বিচারাধীন দেখিয়ে আসামি বার বার সময় নেন।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: