স্টাফ রিপোর্টার ॥ দীর্ঘ দশ বছর প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে ঢাকায় অবতরণ করেছে স্বপ্নের ড্রিমলাইনার ৭৮৭। পড়ন্ত বিকেলে শত শত অতিথির উপস্থিতিতে ওয়াটার ক্যানন স্যালুটের মাধ্যমে স্বাগত জানানো হয় সর্বাধুনিক প্রযুক্তিসম্বলিত নতুন বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজ ‘আকাশবীণা’কে। রবিবার বিকেল পাঁচটা ১৯ মিনিটে আকাশবীণা’ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়ে স্পর্শ করে। এ সময় বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও এএম মোসাদ্দিক আহমেদ, সিভিল এভিয়েশনের চেয়ারম্যান নাঈম হাসান, বিমানের পরিচালক প্রশাসন মমিনুল ইসলামসহ উর্ধতন কর্মকর্তারা। তারা স্বাগত জানান ড্রিমলাইনার থেকে বের হয়ে আসা অতিথি বিমানের চেয়ারম্যান ও সিভিল এভিয়েশনের চেয়ারম্যানসহ অন্যদের। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান এয়ার মার্শাল (অব) ইনামুল বারীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল উড়োজাহাজটি নিয়ে আসে। গত বুধবার দলটি সিয়াটলে বোয়িং কোম্পানি থেকে ড্রিমলাইনারটি আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করেন। এ উড়োজাহাজ যুক্ত হওয়ার মধ্যদিয়ে বিমান বহরে উড়োজাহাজের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৫। আগামী ১ সেপ্টেম্বর এটির উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেদিন বিকেলে প্রথম বাণিজ্যিক ফ্লাইট হিসেবে ভাগ্যবান ২৭১ যাত্রী নিয়ে কুয়ালালামপুরের উদ্দেশে উড়বে এই ড্রিমলাইনার। এ সময় এয়ার মার্শাল ইনামুল বারি ও এয়ারভাইস মার্শাল নাইম হাসান সাংবাদিকদেরকে আশার বাণী শুনান আগামী জানুয়ারির দিকে সিভিল এভিয়েশনের ক্যাটাগরি ওয়ান হবার পরই কেবল বিমানের ফ্লাইট যাবে নিউইয়র্কে। মূলত কানাডা ও নিউইয়র্ক যাত্রাই ড্রিমলাইনারের প্রধান রুট হিসেবে বিবেচিত হবে। সেভাবেই বিমান এগুচ্ছে। এজন্য ইতোমধ্যে বেশকিছু পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।
দুপুর থেকেই সাংবাদিকরা ছিল আকাশবীণার অপেক্ষায়। বেলা বারোটায় ওই ড্রিমলাইনারের যাত্রী বিমান ও সিভিল এভিয়েশনের দুই চেয়ারম্যানকে এ প্রতিনিধি ভাইবারে ফোন কল দেয়ার পর তারা জানান, সেই মুহূর্তে তারা ছিলেন ৪৩ হাজার ফুট ওপরে বেইজিংয়ে। শিয়াটল থেকে উড্ডয়নের পর বিরতিহীন মাত্র ১৫ ঘণ্টায় ঢাকায় পৌঁছে এটি। ড্রিমলাইনারকে বলা হয় বিশ্বের সবচেয়ে কম সাশ্রয়ী উড়োজাহাজ। এ কারণেই এটি বাণিজ্যিক সফল বলে বিবেচনা করা হয়।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ২০০৮ সালে মার্কিন উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িং কোম্পানির সঙ্গে দশটি নতুন বিমান ক্রয়ের জন্য দুই দশমিক এক বিলিয়ন ইউএস ডলারের চুক্তি করে। ইতোমধ্যে চারটি নতুন বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর, দুটি নতুন বোয়িং ৭৩৭-৮০০ ও একটি বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজ বিমান বহরে যুক্ত হয়েছে। বাকি তিনটির প্রথমটি এ বছর নবেম্বর এবং সর্বশেষ দুটি ড্রিমলাইনার বিমানবহরে যুক্ত হবে আগামী বছর সেপ্টেম্বর মাসে। আকাশবীণার আসন সংখ্যা থাকছে ২৭১। এর মধ্যে বিজনেস ক্লাস ২৪ আর ২৪৭ ইকোনমি ক্লাস। বিজনেস ক্লাসে ২৪টি আসন ১৮০ ডিগ্রী পর্যন্ত রিক্লাইন্ড সুবিধা এবং সম্পূর্ণ ফ্ল্যাটবেড হওয়ায় যাত্রীরা আরামদায়ক ভ্রমণ করতে পারবেন। বিমানটিতে যাত্রীরা ইন্টারনেট ও ফোন কল করার সুবিধা পাবেন।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: