ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

চলে গেলেন নৃত্যগুরু বজলুর রহমান

প্রকাশিত: ০৫:০৪, ২০ আগস্ট ২০১৮

 চলে গেলেন নৃত্যগুরু  বজলুর রহমান

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ ‘স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত’ দেশের প্রখ্যাত নৃত্যগুরু বজলুর রহমান বাদল আর নেই। রবিবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে তিনি রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্নালিল্লাহি... রাজিউন)। রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জামিলুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘তিনি সাড়ে তিনটার দিকে মারা গেছেন। তারপরও আমরা পর্যবেক্ষণ করছিলাম। সাড়ে ৫টার দিকে ঘোষণাটি দিতে হয়েছে। ৯৫ বছর বয়সী ওস্তাদ বজলুর রহমান বাদল শ্বাসকষ্ট, হৃদরোগসহ শারীরিক নানা সমস্যায় ভুগছিলেন। থাকতেন নগরীর শিরোইল এলাকায় মেয়ের বাসায়। গত শুক্রবার দিবাগত রাত পৌনে দুইটার দিকে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে রামেক হাসপাতালে নেয়া হয়। শনিবার দুপুর পর্যন্ত শয্যা না পাওয়ায় হাসপাতালের ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের একটি কক্ষের মেঝেতেই শুয়ে চিকিৎসা নিতে হয় তাকে। খবরটি ছড়িয়ে পড়লে এ নিয়ে হস্তক্ষেপ করেন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। তৎপর হয় জেলা প্রশাসনও। পরে নৃত্যগুরু বাদলকে একটি শয্যায় তোলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। গঠন করা হয় তিন সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড। বোর্ডের পরামর্শে রবিবার বেলা ১১টার দিকে নৃত্যগুরুকে আইসিইউতে নেয়া হয়। জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে গেল বছর স্বাধীনতা পদক পান ৯৫ বছর বয়সী নৃত্যশিল্পী বজলুর রহমান বাদল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর হাতে পদক তুলে দেন। এ ছাড়া শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার, নজরুল একাডেমি পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কারে তিনি ভূষিত হয়েছেন। পেয়েছেন ‘নৃত্যগুরু’ উপাধি। বহু সংবর্ধনা এবং সম্মাননাও পেয়েছেন তিনি। দেশের গুণী এই শিল্পী ১৯২৩ সালের ১৮ অক্টোবর পশ্চিমবঙ্গের মালদহ জেলা শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পূর্বপুরুষ কলকাতার মানুষ। দাদা আশাক হোসেন আমের ব্যবসা করতে এসে মালদহে বাড়ি করেছিলেন। সেখানেই তাঁর জন্ম। বাবার নাম আবুল কাশেম। মা সখিনা বিবি। বজলুর রহমান ১৯৪৫ সালে মালদহ জিলা স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন। পরের বছর নাটক করতে রাজশাহী আসেন। তারপর এখানেই পুরো জীবনটা কাটিয়ে দিলেন তিনি। এ দিকে নৃত্যগুরুর মৃত্যুতে রাজশাহীতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তাঁর মৃত্যুতে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, রাজশাহী সদর আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা ছাড়াও রাজনৈতিক, সামাজিক ও সংস্কৃতিক নেতৃবৃন্দ গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। এক শোক বার্তায় রাসিকের নবনির্বাচিত মেয়র উল্লেখ করেন, স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত নৃত্যগুরু বজলুর রহমান বাদলের মৃত্যুকে রাজশাহীসহ দেশবাসী গুণী ও প্রতিভাবান নৃত্যশিল্পীকে হারাল। তাঁর মৃত্যুতে যে শূন্যতা সৃষ্টি হলো, তা অপূরণীয়।
×