ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ঈদ-উল-আজহার সময়ে সরকারী হাসপাতালে চিকিৎসা চালু থাকবে

প্রকাশিত: ০৫:০৪, ২০ আগস্ট ২০১৮

 ঈদ-উল-আজহার সময়ে সরকারী হাসপাতালে চিকিৎসা চালু থাকবে

নিখিল মানখিন ॥ পবিত্র ঈদ-উল-আজহা উপলক্ষে সরকারী ছুটির সময় সরকারী হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসাধীন রোগীদের স্বাভাবিক চিকিৎসা অব্যাহত রাখতে বিশেষ রোস্টার তৈরি করা হয়েছে। আর ২৪ ঘণ্টা জরুরী বিভাগ ও অপারেশন থিয়েটার খোলা থাকবে। তবে ঈদের দিন ও পরের দিন বহির্বিভাগের চিকিৎসাসেবা সীমিত পরিসরে চলবে। বিশেষ টিম চিকিৎসাসেবা তদারকি করবে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের নির্দেশে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাঃ আবুল কালাম আজাদ ইতোমধ্যে এ বিষয়ে সিভিল সার্জনদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন। এই বিশেষ ব্যবস্থা ঈদের আগের দিন থেকে ঈদের পরদিন পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাঃ আবুল কালাম আজাদ জনকণ্ঠকে জানান, ঈদের ছুটিগুলোতেও প্রতিটি সরকারী হাসপাতালে স্বাভাবিক চিকিৎসাসেবা চালু থাকে। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটবে না। ঈদের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সকল চিকিৎসক-নার্স ও কর্মচারী যাতে ঈদ উদ্যাপন করতে পারে, সেজন্য ঈদের দিন ও পরের দিন বহির্বিভাগের চিকিৎসাসেবা একটু সীমিত করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, স্বাস্থ্য অধিদফতর ইতোমধ্যে দেশের প্রত্যেক সিভিল সার্জনসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে এ বিষয়ে নির্দেশনা পাঠিয়েছে। এছাড়া প্রতিটি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে চিকিৎসাসেবা প্রদান করতে নিজেদের প্রয়োজন অনুযায়ী রোস্টার তৈরি করতে বলা হয়েছে। জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকল্পে জেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে প্রয়োজনীয় ওষুধ, ডাক্তার, নার্স ও সুসজ্জিত এ্যাম্বুলেন্স এবং মেডিক্যাল টিম নিয়োজিতকরণসহ প্রাথমিক চিকিৎসার পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট জেলার সিভিল সার্জনকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে জানান অধিদফতরের মহাপরিচালক। ঈদের পরেও হাসপাতালের অনেক চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীরা ছুটিতে থাকবেন। কমে যাবে জনবল। আর জনবল কমে গেলে সরকারী হাসপাতালগুলোর স্বাভাবিক চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হওয়ার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এ বিষয়ে রাজধানীর সরকারী হাসপাতালগুলোর সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এবার ঈদের ছুটিতেও স্বাভাবিক চিকিৎসেবা অব্যাহত থাকবে। ঈদের ছুটির মধ্যেও রোগীদের স্বাভাবিক সেবা দিয়ে যাবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়। বন্ধের দিনগুলোতে রোগীদের সুবিধার্থে অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের হাসপাতালের ইনডোর সেবাসমূহ ও বিভিন্ন জরুরী বিভাগসমূহ যথারীতি চলবে। বন্ধের দিনগুলোতে বিভিন্ন বিভাগের ওয়ার্ডসমূহে এবং কেবিনগুলোতে যাতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসক ও নার্স চিকিৎসাসেবায় নিয়োজিত থাকেন সেজন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডাঃ কনক কান্তি বড়ুয়া ইতোমধ্যে একাধিক সভা করে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন। স্বাভাবিক চিকিৎসাসেবা চালু রাখার কথা জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, ঈদকে সামনে রেখে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসাসেবায় সামান্য পরিবর্তন আসতে পারে। তবে স্বাভাবিক চিকিৎসাসেবা অব্যাহত থাকবে। স্বাভাবিক চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে প্রতিটি বিভাগের জন্য পৃথক পৃথক রোস্টার তৈরি করা হয়েছে। অপারেশন থিয়েটার চালু থাকবে। বিশেষ টিম চিকিৎসাসেবা তদারকি করবে। ঈদে কিছুসংখ্যক চিকিৎসক, নার্স ও কর্মকর্তা-কর্মচারী ছুটিতে যেতে পারেন। কিন্তু এমন অবস্থার প্রেক্ষিতেই চিকিৎসাসেবার কৌশল সাজানো হয়েছে বলে জানায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ২৪ ঘণ্টা চিকিৎসেবা চালু রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে নগরীর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালেও (মিটফোর্ড হাসপাতাল)। ওই হাসপাতালের কর্মকর্তারা জানান, ঈদের ছুটিতে স্বাভাবিক চিকিৎসাসেবা অব্যাহত রাখার সব ধরনের ব্যবস্থা করে রেখেছি আমরা। ওই সময় চিকিৎসকের সংখ্যা অর্ধেকে নেমে আসতে পারে। তবে এ নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। ঈদের ছুটিতে আমাদের হাসপাতালে রোগীর সংখ্যাও কম থাকতে পারে। স্বাভাবিক সময়ে এখানে দৈনিক ৯শ’ রোগী চিকিৎসা নেয়। ঈদের ছুটিতে এ সংখ্যা ৪শ’তে নেমে আসে। তাই ছুটিতে চিকিৎসকের সংখ্যা কম থাকলেও স্বাভাবিক চিকিৎসা ব্যাহত হবে না। তাছাড়া এমন পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য প্রতিটি বিভাগের জন্য পৃথক পৃথক রোস্টার তৈরি করা হয়েছে বলে জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। শেরে বাংলা নগরের সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক উত্তম কুমার বড়ুয়া জানান, ঈদে ভর্তি হওয়ার রোগীর সংখ্যা কমে যায়। চিকিৎসক ও নার্সের সংখ্যা একটু কম হলেও রোস্টার তৈরি করার কারণে চিকিৎসাধীন রোগীদের চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হয় না। তবে বহির্বিভাগে বেশি রোগী দেখা হয় না। এছাড়া হাসপাতালের অন্য সব কার্যক্রম স্বাভাবিক থাকবে বলে জানান অধ্যাপক উত্তম কুমার বড়ুয়া। রাজধানীর অন্য সব সরকারী হাসপাতালেও স্বাভাবিক চিকিৎসাসেবা চালু থাকবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে। জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (পঙ্গু হাসপাতাল) পরিচালক অধ্যাপক ডাঃ মোঃ আবদুল গনি মোল্লা জনকণ্ঠকে জানান, এই হাসপাতালে প্রতিবছরই ঈদের ছুটিতে স্বাভাবিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না। ইতোমধ্যে রোস্টার তৈরি করা হয়েছে।
×