ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

জেনারেটর চালু করতে রোগীদের কিনতে হচ্ছে ডিজেল

বিদ্যুত সঙ্কটে বিপর্যস্ত সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল

প্রকাশিত: ০৪:৩৭, ২০ আগস্ট ২০১৮

  বিদ্যুত সঙ্কটে বিপর্যস্ত সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল

স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা ॥ গত তিন দিন ধরে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে সিজারসহ সকল ধরনের অপারেশন বন্ধ রয়েছে। বিদ্যুত সঙ্কটে বিপর্যস্ত সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবা। তিনদিন ধরে বিদ্যুত না থাকায় অপারেশন থিয়েটার, এক্সরে ও সিটিস্ক্যানসহ পরীক্ষার যন্ত্রপাতি বন্ধ রয়েছে। এ কারণে ব্যাপক দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন স্বাস্থ্যসেবা নিতে আসা রোগীরা। পরিস্থিতি এতই নাজুক, রোগীর স্বজনদের ডিজেল কিনে দিয়ে জেনারেটর চালু করে সিজার করাতে হয়েছে। সিজারিয়ান মা ও নবজাতক বাচ্চারা অসহনীয় গরমে তাদের নাভিশ্বাস উঠছে। ভোগান্তিতে রয়েছেন হাসপাতালে ভর্তি প্রায় তিন শ’ রোগী। তবে কর্তৃপক্ষের দাবি, বিদ্যুত সঙ্কট কাটাতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছেন তারা। রোগীদের অভিযোগ, জরুরী প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা না পেয়ে তারা ফিরে যাচ্ছেন হাসপাতাল থেকে। এদিকে বিদ্যুতের পাশাপাশি পানি না থাকায় হাসপাতালের পরিবেশ দূষণ দেখা দিয়েছে। নিচ থেকে পানি নিয়ে রোগীদের বাথরুম ও অন্যান্য কাজ সারতে হচ্ছে। সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিসাধীন শেফালি খাতুনের স্বামী মহব্বত আলি জানান, তিন দিন আগে তার স্ত্রীকে সিজার করার জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলে, সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে বিদ্যুত নেই। স্ত্রীকে যদি সিজার করতে হয় তাহলে জেনারেটরে তেল কিনে দিতে হবে। তিনি তেল কিনে দিলে তারপর ডাক্তার তার স্ত্রীকে সিজার করেন বলে তিনি অভিযোগ করেন। সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডাঃ তওহীদুর রহমান শনিবার বিকেলে জনকণ্ঠকে বলেন, গত এক সপ্তাহ আগে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের ট্রান্সফরমারটি নষ্ট হয়ে যায়। সাতক্ষীরা সদর হাতপাতালের প্রয়োজন ১৫০ কেভি পাওয়ার ট্রান্সফরমার। বিদ্যুত অফিস থেকে ৫০ কেভির একটি ট্রান্সফরমার লাগিয়ে দেয়া হয়। শনিবার বিকেলে আরও একটি ৫০ কেভি পাওয়ারের পুরনো ট্রান্সফরমার লাগানো হয়েছে বলে সিভিল সার্জনকে বিদ্যুত অফিস থেকে জানানো হয়েছে। তবে এটি কত সময় চলবে এর কোন নিশ্চয়তা নেই বলে জানিয়েছে বিদ্যুত বিভাগ। সিএস বলেন, এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে খুলনা স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরে ১৫০ পাওয়ার কেভি ট্রান্সফরমার চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। নতুন ট্রান্সফরমারটি পাওয়া গেলে অপারেশনসহ যাবতীয় কাজ করা যাবে বলে তিনি জানান। বর্তমানে সদর হাসপাতালে ২৫০ থেকে ৩০০ জন রোগী ভর্তি আছে। দূর দূরান্ত থেকে অপারেশন করতে আসা রোগীরা ফিরে যাচ্ছে বলেও তিনি স্বীকার করেন। এ ছাড়া হাসপাতালের অপারেশন আপাতত বন্ধ আছে বলেও সিভিল সার্জন জানিয়েছেন। সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোঃ ইফতেখার হোসেন সাংবাদিকদের জানান, রোগীদের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে সাতক্ষীরা বিদ্যুত অফিস থেকে ৫০ কেভি পাওয়ারের একটি ট্রান্সফরমার লাগানো হয়েছে। নতুন ১৫০ কেভি ট্রান্সফরমারটি দুই একদিনের মধ্যে পাওয়া যাবে। নতুন ট্রান্সফরমারটি হাতে পেলে আগের মতো অপারেশনসহ যাবতীয় কার্যক্রম শুরু হবে বলে তিনি আশা করছেন।
×