ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জাকার্তায় এশিয়ান গেমসের বর্ণাঢ্য উদ্বোধন

প্রকাশিত: ০৬:৫৪, ১৯ আগস্ট ২০১৮

জাকার্তায় এশিয়ান গেমসের বর্ণাঢ্য উদ্বোধন

মোঃ মামুন রশীদ ॥ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়ে গেল এশিয়ার অলিম্পিক খ্যাত এশিয়ান গেমসের ১৮তম আসর। শনিবার বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭টা ২২ মিনিটের সময় ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইডোডো মঞ্চে উঠে গেমসের উদ্বোধন ঘোষণা করেন। ‘ফিল দ্য এনার্জি ফর এশিয়া’ স্লোগান নিয়ে এবার যাত্রা শুরু হলো এই গেমসের। এরপর পর্যায়ক্রমে অংশগ্রহণকারী ৪৫ দেশের এ্যাথলেটদের প্যারেড এবং ৩ ঘণ্টাব্যাপী চোখ ধাঁধানো সব মনোমুগ্ধকর অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শুরু হয়ে যায় এ বহুমাত্রিক ক্রীড়া আসরের। অলিম্পিকের পর দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ এ ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় আগামী ১৬ দিনে মূলত ৪৬৫ ইভেন্টে ৪৭২ স্বর্ণের লড়াই চলবে ২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সবচেয়ে ঐতিহাসিক ব্যাপার ছিল দুই যুদ্ধ-বিগ্রহে লিপ্ত কোরিয়ার (উত্তর কোরিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়া) সম্মিলিত প্যারেড। এবার লাইটওয়েট রোয়িং, ড্রাগন বোট রেসিং ও বাস্কেটবলে সম্মিলিতভাবে অংশ নেবে দুই কোরিয়া। তবে বাকিগুলোতে ভিন্ন ভিন্ন দল রয়েছে তাদের। ভারোত্তোলক মাবিয়া আক্তার সীমান্ত বাংলাদেশের পতাকাবাহক হিসেবে প্যারেডে অংশ নেন। জাকার্তার গেলোরা ব্যাং কারনো স্পোর্টস কমপ্লেক্সে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের কার্যক্রম ঠিক সন্ধ্যা ৬টা ১ মিনিটে শুরু হয়ে গেলেও ৯ মিনিট পর উদ্বোধনী মঞ্চে আসেন আয়োজক ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট উইডোডো। শিশুদের একটি নৃত্য পরিবেশনার মাধ্যমে শুরু হয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের। এরপরই ৪০০০ ইন্দোনেশিয়ান নৃত্যশিল্পী একটি পারফর্মেন্স প্রদর্শন করেন। এ সময় প্রায় হাজারখানের বাদক অর্কেস্ট্রা বাজিয়েছেন যার নেতৃত্বে ছিলেন ইন্দোনেশিয়ার দুই বিখ্যাত মিউজিশিয়ান এডি এম.এস ও রোনাল্ড স্টিভেন। ৬টা ১৯ মিনিটেই শুরু হয়ে যায় অংশগ্রহণকারী ৪৫ দেশের প্যারেড। বর্ণানুক্রমিকভাবে প্রথমেই মাঠে প্রবেশ করে আফগানিস্তান এ্যাথলেটদের দল। ৬টা ৩১ মিনিটে দুই কোরিয়ার সম্মিলিত দল প্যারেডে প্রবেশ করে। সবার শেষে প্যারেডে আসে স্বাগতিক ইন্দোনেশিয়া। প্যারেড শেষেই এবারের এশিয়ান গেমসের থিম সং- মেরাইয়াহ বিনটাং গাইতে মঞ্চে আসেন ইন্দোনেশিয়ার গায়ক ভায়া ভ্যালেন। এর মাধ্যমেই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যায়। এরপর ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় সঙ্গীত গান দেশের প্রখ্যাত গীতিকার ও গায়ক তুলুস। সন্ধ্যা ৭টায় ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় পতাকা উত্তোলক জাতীয় বাহিনী এসে পতাকা ওঠায়। এরপরই গেমস শুরুর ঘোষণা দেন ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট। তারপরই শুরু হয়ে যায় মূল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বিশেষভাবে তৈরি করা ১২০ মিটার দৈর্ঘ্য, ৩০ মিটার প্রস্থ ও ২৬ মিটার উচ্চতার উদ্বোধনী মঞ্চটি পর্বতসদৃশ পটভূমি সবার দৃষ্টি কেড়ে নেয় আলোক উজ্জ্বলতায়। এ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সময়ে মঞ্চে উঠে গান পরিবেশন করেন ইন্দোনেশিয়ার বিখ্যাত শিল্পীরা। তাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন- আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আংগুন, রাইসা, তুলুস, শেরিল শেইনাফিয়া, মারুলি ট্যাম্পোবোলন, সাকরা খান, রায়ান ডি’ম্যাসিভ, এডো কনডোলোজিট, পুত্রি আয়ু, ফাতিন, জিএসি, কামাসিয়ান এবং ভায়া ভ্যালেনরা। এর ফাঁকে ছিল ইন্দোনেশিয়ার কৃষ্টি, সংস্কৃতির বিভিন্ন প্রদর্শনী, আতশবাজি এবং ডিজিটাল ডিসপ্লে। এবার এশিয়ান গেমসে মূল ক্রীড়া ইভেন্টের বাইরেও বেশ কিছু ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অন্তর্ভুক্ত আছে যেগুলোয় কোন পদক দেয়া হবে না। সেদিক থেকে প্রায় ৫৮ ক্রীড়ায় ১০ হাজার এ্যাথলেট এবারের এশিয়ান গেমসে অংশ নেবেন। সবমিলিয়ে ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তা ও সুমাত্রার বন্দর নগরী প্যালেমবাংয়ের ১১টি ভেন্যুতে এই প্রতিযোগিতাগুলো অনুষ্ঠিত হবে।
×