ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ফের করতোয়া দখল করে স্থাপনা

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ১৯ আগস্ট ২০১৮

ফের করতোয়া দখল করে স্থাপনা

স্টাফ রিপোর্টার, বগুড়া অফিস ॥ করতোয়া নদী দখল থেমে নেই। যে যেভাবে পারছে দখল করে স্থাপনা বানিয়ে নদীর ভিতরের দিকে যাচ্ছে। সর্বশেষ শনিবার নবাববাড়ি সড়কের ধারে দেলওয়ারা শেখ শরীফ উদ্দিন সুপার মার্কেটের পেছনের সড়ক ও নদীর ভিতরে ভরাট করে চারদিকে টিন দিয়ে ঘিরে ভিতরে অবকাঠামো নির্মাণ শুরু হয়। বাইরে থেকে বোঝার উপায় নেই ভিতরে কি হচ্ছে! দখলের প্রতিবাদে মানববন্ধন সমাবেশ করা হচ্ছে। শনিবার সকালে নগরীর কেন্দ্রস্থল সাতমাথায় বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনসহ (বাপা) কয়েকটি সংগঠন করতোয়া দখলের প্রতিবাদে মানববন্ধন সমাবেশ করেছে। মার্কেট কর্তৃপক্ষ বলছেন, দখল নয় নিজেদের জায়গায় ব্যবসায়ী সমিতির অফিস নির্মাণ করা হচ্ছে। এর আগে গত ক’বছরে বগুড়া শহরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া করতোয়া নদীর দুই তীর ও নদীর ভিতরে ভরাটের পর দখল করে অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে। এখন করতোয়া নদীকে মনে হবে নগরীর একটি বড় ড্রেন। বাপার নির্বাহী পরিচালক জিয়াউর রহমান বলেন, নদী রক্ষায় গত মার্চ মাস থেকে তারা বগুড়া পৌর এলাকাসহ সকল উপজেলায় গণস্বাক্ষর অভিযান শুরু করে। সর্বস্তরের মানুষ নদী বাঁচাতে স্বাক্ষর করে একাত্মতা প্রকাশ করে। এই স্বাক্ষর ওপর মহলে পৌঁছে দেয়া হয়। করতোয়া নদী তীরে গিয়ে দেখা যায়, জেলা প্রশাসন অফিসের পিছনেও প্রাচীর দিয়ে ঘিরে জায়গা দখল করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন এই কাজ বন্ধ করে দেয়। তারপর ফের কাজ শুরু হয়। এভাবে নদীর ভেতরে ২৮টি পয়েন্টে জায়গা দখল করে কোথাও সাইন বোর্ড দেয়া হয় পৈত্রিক সূত্রে এই ভূমি তাদের। রাজস্ব বিভাগের দেয়া তার এক হিসাবে বলা হয় করতোয়া নদী ভূমির অন্তত সাড়ে ৫ একর দখল হয়েছে (তবে খালি চোখে এই পরিমাণ আরও বেশি)। টাকার অঙ্কে যার মূল্য অন্তত ৬শ’ কোটি টাকা। সর্বশেষ দখল হয়েছে, দেলওয়ারা শরীফ উদ্দিন সুপার মার্কেট ও লুপ্ত বাম্বি সিনেমা হলের পেছনে নদীর ভেতরে। এ বিষয়ে মার্কেটের পরিচালক আনোয়ার হোসেন বলেন, নদী ভূমি দখল করা হয়নি। সেখানে একটি ছাপড়া ঘর ছিল। সেখানেই ব্যবসায়ী সমিতির অফিস নির্মাণ করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসক জানান, নদী ভূমি উদ্ধারে দখলকারীদের নোটিস দেয়া শুরু হয়েছে। শীঘ্রই অভিযান চালিয়ে নদী ভূমি উদ্ধার কাজ শুরু হবে। এর আগে জেলা প্রশাসনের রাজস্ব শাখা করতোয়া নদী দখলের সঙ্গে জড়িত অভিযোগে ২৮ জনের তালিকা করে। এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান জানান, করতোয়া নদীকে স্বাভাবিক অবস্থায় আনতে একটি প্রকল্প প্রস্তাব আন্তঃমন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। পরিবেশবিদ আবু হায়দার জানান, বাংলাদেশ-ভারতের আন্তঃসীমা নদী করতোয়া। বর্তমানে বাংলাদেশ অংশে দৈর্ঘ ১শ’ ৮৭ কিলোমিটার। সর্পিলাকার এই নদীর এক সময়ে প্রস্থ ছিল প্রায় ৫শ’ মিটার। দখল আর দূষণের ফলে প্রস্থ নেমে এসেছে প্রায় ২০ মিটারে।
×