ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

মক্কা থেকে আজ মীনায় যাবেন হজযাত্রীরা ॥ আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে হজের

প্রকাশিত: ০৪:৪৯, ১৮ আগস্ট ২০১৮

   মক্কা থেকে আজ মীনায় যাবেন হজযাত্রীরা ॥ আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে হজের

আজাদ সুলায়মান ॥ আজ শনিবার মক্কা থেকে মীনায় গমনের মধ্য দিয়ে শুরু হচ্ছে হজের আনুষ্ঠানিকতা। এ জন্য মদিনায় অবস্থান করা হজযাত্রীরা সবাই মক্কা ফিরে এসেছেন শুক্রবার। এদিন মক্কা শরীফে এক সঙ্গে ১৩ লাখ হজযাত্রী জুমার নামাজ আদায় করেন। এদিকে বাংলাদেশী হজযাত্রীরা সবাই মক্কায় পৌঁছেছেন। শুক্রবারও সাউদিয়া এয়ারের দুটো ফ্লাইটে ৫ শতাধিক হজযাত্রী ঢাকা ছেড়েছেন। এ নিয়ে এ বছর বাংলাদেশ থেকে মোট ১ লাখ ২৬ হাজার ১৮৩ জন হজযাত্রী সৌদি আরব গেছেন। তারা সবাই নিরাপদে রয়েছেন। তবে তওয়াফ করা ও হাজরে আসওয়াদ পাথরে চুমু দিতে গিয়ে কিছু সংখ্যক হজযাত্রী অসুস্থ হয়েছেন বলে জানিয়েছে মক্কাস্থ বাংলাদেশ হজ মিশনের মেডিক্যাল ইউনিট। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পর হুইল চেয়ার ও গাড়িতে বসে হজ পালনের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। জানা গেছে, বিশ্বের বিœ দেশ থেকে পত্র হজ পালন করতে প্রায় ১৭ লাখ মানুষ এখন মক্কা শহরে অবস্থান করছেন। আজ শনিবার থেকে হজের কার্যক্রম শুরু হবে। এদিন হজযাত্রীরা সবাই মীনার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করবেন। মক্কা থেকে সাংবাদিক মশিউর রহমান খান জানিয়েছেন-আজ শনিবার রাত থেকেই সব হজযাত্রী মীনার মাঠে তশরিফ নিবেন। সেখানে প্রত্যেক হজযাত্রী নিজ নিজ খিমায় অবস্থান করবেন। খিমাতেই নামাজ ও দোয়া দরুদ পড়বেন। আগামীকাল রবিবার তারা সবাই মীনার মাঠে এবাদত বন্দেগীতে মশগুল থাকবেন। সোমবার বাদ ফজর সবাই চলে যাবেন আরাফাতের ময়দানে। মূলত ৯ জিলহজ সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করার নামই হজ। তিনি জানান-গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজ কাবা চত্বরে জামাতের সঙ্গে আদায় করতে ছুটে আসেন। অনেকেই বৃহস্পতিবার এশার নামাজ পড়ে কাবা ঘরের আশপাশে খাওয়া-দাওয়া করে আবার কাবাঘরে প্রবেশ করেছেন। তারা গভীর রাতে তাহাজ্জুদের নামাজ, জিকির ও দোয়া দরুদ পড়ে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে ফজরের নামাজ পড়েছেন। ফজরের পর থেকে তারা হেরেম শরীফেই অবস্থান করেন-যাতে কাবাঘরের খুব কাছে তারা জুমার নামাজ আদায় করবেন। এদিন মক্কার ইব্রখও মিসফালাহসহ বিভিন্ন সড়ক থেকে কাবাঘর অভিমুখে হজযাত্রীর পাশপাাশি ধর্মপ্রাণ মুসল্লির ঢল নামে। এদিকে জাতীয় দৈ সৌদ গেজেট সূত্রে জানা গেছে, চলবছর সৌদ সরকার বিশ্বের বিœ দেশের মোট ১৭ লাখ হজ ভিসা প্রদান করেছে। ইতোমধ্যে ১৬ লাখ ৮৪ হাজার ৬২৭ জন সৌদ আরব পৌঁছেছেন। বাকিরা আজ শনিবার পৌঁছাবেন। মোট হজযাত্রীর মধ্যে ১৫ লাখ ৮৪ হাজার ৮৫ জন বিমানবন্দর, ৮৩ হাজার ৩৮২ জন স্থল ও ১৬ হাজার ১৬৩ জন নৌবন্দর হয়ে প্রবেশ করেছেন। সংসদীয় কমিটির সভাপতি বজলুল হক হারুণ জনকণ্ঠকে বলেন, ঢাকা থেকে নিয়মিত হজের সার্বিক কার্যক্রম মনিটর করা হচ্ছে। প্রতিমূহূর্তের তথ্য হালনাগাদ করা হচ্ছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে প্রতিদিন মক্কা মদিনায় ফোন করে হজ কার্যক্রম তদারকি করছি-যাতে প্রত্যেকেই নিজ নিজ দায়িত্ব ও আল্লাহর মেহমানদের সেবা নিশ্চিত করতে পারেন। যদি কারোর বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ পাওয়া যায় সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এতদিন ঢাকার হজ কার্যক্রম সুষ্ঠুুভাবে পরিচালনা করা হয়েছে। এখন মক্কা মদিনার পালা। বজলুল হক হারুণ জানান- ২৫০ জন বাংলাদেশী কর্মকর্তা হজ পালনের সময় গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে মোতায়েন থাকবেন। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের বেশিরভাগ কর্মকর্তা ইতোমধ্যেই সৌদি আরব গিয়েছেন বাংলাদেশী হজযাত্রীদের সহযোগিতা ও সেবা দেয়ার জন্য। জেদ্দা, মক্কা ও মদিনাতে তিনটি মেডিক্যাল স্থাপন করা হয়েছে। এসব ক্যাম্পে ৩০ জন চিকিৎসক ও নার্স হজযাত্রীদের চিকিৎসা সেবা দেবেন। একেবারে জরুরী অবস্থার ক্ষেত্রে স্থানীয় হাসপাতালে হজযাত্রীদের পাঠানোর ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হয়েছে।
×