ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মূল লড়াই আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে

প্রকাশিত: ০৪:৪৭, ১৮ আগস্ট ২০১৮

 মূল লড়াই আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে

সঞ্জয় সরকার, নেত্রকোনা থেকে ॥ জাতীয় নির্বাচনের হাওয়া লেগেছে নেত্রকোনায়ও। একাদশ জাতীয় নির্বাচনের সময় যতই ঘনিয়ে আসছে, জেলার পাঁচটি নির্বাচনী এলাকায় ততই বাড়ছে রাজনৈতিক উত্তাপ। মনোনয়নের আশায় বড় দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপিতে রীতিমতো মনোনয়ন প্রত্যাশীর হিড়িক পড়েছে। এ কারণে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে দলগুলোতে গ্রুপিং, দ্বন্দ্ব ও বিভেদ। অনেক মনোনয়ন প্রত্যাশীই হাটে-বাজারে বা গ্রাম-গঞ্জে সরাসরি গণসংযোগ করে তৃণমূলের সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করছেন। আবার কেউ কেউ গণসংযোগ না করলেও ব্যানার, পোস্টার, বিলবোর্ড আর তোরণ টানিয়ে প্রার্থিতার জানান দিচ্ছে। নির্বাচনী এলাকার ভোটাররাও বসে নেই। নির্বাচনকে সামনে রেখে তারাও শুরু করে দিয়েছেন নানামুখী বিশ্লেষণ। বর্তমান ও সাবেক এমপিদের ভাল-মন্দ দিক বিশ্লেষণের পাশাপাশি নতুনদের নিয়েও চিন্তা-ভাবনা করছেন তারা। দলগতভাবে নেত্রকোনায় আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি- দু’দলই শক্তিশালী। তবে তৃণমূলের দিকে তাকালে দেখা যায়Ñ কোন দলই এখন আর রাজপথে ততটা সক্রিয় নয়। কেন্দ্র নির্দেশিত কিছু কর্মসূচীতে আওয়ামী লীগকে মাঠে নামতে দেখা গেলেও দলীয় কার্যালয়গুলো অনেকটা নিষ্প্রাণ। বিএনপি এ ক্ষেত্রে আরও পিছিয়ে। মাসের পর মাস তাদের দলীয় কার্যালয়ের তালাই খোলা হয় না। কেবল বিশেষ দিনগুলোতে একত্রিত হয় তারা। দু’দলেরই অনেক নেতা ব্যক্তিগত চেম্বারে বসে সময় কাটান। কয়েক বছর আগেও জাতীয় পার্টি (এরশাদ) এখানে তৃতীয় অবস্থানে ছিল। কিন্তু এখন তারা আরও দুর্বল। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী পুরো কোণঠাসা। সিপিবিসহ আর কিছু দলের কমিটি থাকলেও অবস্থান সুদৃঢ় নয়। এ কারণে আগামী নির্বাচনে জেলার প্রতিটি আসনেই আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির প্রার্থীদের মধ্যেই মূল লড়াই হবে। প্রধান এ দুই রাজনৈতিক দল থেকে মনোনয়নের আশা করছেন অর্ধশতাধিক প্রার্থী। এদের অনেকে বয়সে তরুণ। সংখ্যার বিচারে বিএনপির চেয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সংখ্যা কয়েকগুণ বেশি। এ কারণে প্রার্থী বাছাইয়ে বেকায়দায় পড়তে হবে দলটিকে। অন্যদিকে কৌশলগত কারণে বিএনপির প্রার্থীরা খুব একটা মাঠে না থাকলেও আড়ালে থেকে যোগাযোগ রক্ষা করছেন। প্রার্থী যারাই হোকÑ আওয়ামী লীগ চাচ্ছে তাদের দখলে থাকা পাঁচটি আসনই ধরে রাখতে। অন্যদিকে হারানো আসনগুলো ফিরে পেতে মরিয়া বিএনপিও। এখানে উল্লেখ্য, দশম জাতীয় নির্বাচনে বর্তমানে জেলার পাঁচটি নির্বাচনী আসনই রয়েছে আওয়ামী লীগের দখলে। তবে গত সাড়ে চার বছরে অনেক আওয়ামী লীগের এমপিই এলাকায় কম জনসংযোগ, আত্মম্ভরিতা, আত্মীয়-স্বজন ও অনুগত কর্মীদের লাগামহীন কর্মকা-, প্রতিশ্রুতির বরখেলাপ, দলের অভ্যন্তরে কোন্দল সৃষ্টি, পুরনো কোন্দল জিইয়ে রাখা, ত্যাগী নেতাকর্মীদের অবমূল্যায়ন, দুর্ব্যবহার প্রভৃতি কারণে তাদের আলোচিত-সমালোচিত হয়েছেন। সংসদ সদস্যদের তথাকথিত এপিএসরাও সুনাম ক্ষুণœ করেছেন দু-একজনের। সচেতন মহলের ধারণা, এসব ইস্যুতে মনোনয়নের ক্ষেত্রে ছিটকে পড়তে পারেন কেউ কেউ। এসব আসনে আসতে পারে নতুন মুখ। উন্নয়নের কথা বলতে গেলে, গত পাঁচ বছরে নেত্রকোনায় বেশ কিছু উন্নয়ন দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়েছে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে একটি বিশ^বিদ্যালয় স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে নেত্রকোনায়। রাজধানী থেকে নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ পর্যন্ত চালু হয়েছে দু’-দুটি আন্তঃনগর ট্রেন। জেলা শহরে নির্মাণ করা হয়েছে অত্যাধুনিক অডিটরিয়াম। দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত থাকার পর শ্যামগঞ্জ-দুর্গাপুর সড়কের উন্নয়ন কাজ এগিয়ে চলছে। ঠাকুরাকোনা-কলমাকান্দা সড়কের প্রকল্প পাস হয়েছে একনেকে। অন্যদিকে মদন থেকে খালিয়াজুরি পর্যন্ত সাবমার্সিবল সড়কের কাজও এগিয়ে গেছে অনেক দূর। জাতীয়করণ হয়েছে ৯টি কলেজ ও ৯টি উচ্চ বিদ্যালয়। গত বছর জেলার হাওড়াঞ্চলে অকালবন্যায় ভয়াবহ দুর্যোগ দেখা দিলে তাও ভালভাবে মোকাবেলা করতে পেরেছে আওয়ামী লীগ সরকার। কাজেই এসব উন্নয়ন কর্মকা-ের জন্য বাহবা অবশ্যই নিতে পারবেন সরকার দলীয় প্রার্থীরা। নেত্রকোনা-১ (কলমাকান্দা-দুর্গাপুর) ॥ সীমান্তবর্তী এবং আদিবাসী অধ্যুষিত এ আসনে নবম জাতীয় সংসদের এমপি ছিলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আনন্দমোহন কলেজের সাবেক ভিপি মোশতাক আহমেদ রুহী। দশম নির্বাচনে তিনি বাদ পড়েন। তার বদলে আওয়ামী লীগের টিকিটে নির্বাচিত হন কৃষকলীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ছবি বিশ^াস। মনোনয়নবঞ্চিত রুহী তখন স্বতন্ত্র (বিদ্রোহী) প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হন। সংসদ সদস্য ছবি বিশ^াস এবারও দলের অন্যতম মনোনয়ন প্রত্যাশী। এদিকে সাবেক এমপি মোশতাক আহমেদ রুহীও মনোনয়ন আশা করছেন। এ দু’জন ছাড়াও মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন আরও প্রায় ডজনখানেক প্রার্থী। তাদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনায় ওঠে এসেছেন ঢাকা কলেজের সাবেক ছাত্রনেতা এবং কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য রোটারিয়ান আতাউর রহমান খান আখির। মুক্তিযোদ্ধার সন্তান আখি বয়সে তরুণ হলেও প্রচার এবং গণসংযোগের মধ্য দিয়ে এলাকাবাসীর দৃষ্টি কাড়তে সক্ষম হয়েছেন। তিনি এ আসনের নতুন মুখ। আরেক প্রার্থী হচ্ছেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য উপাধ্যক্ষ রেমন্ড আরেং। এলাকার ২৮ হাজার আদিবাসী ভোট তার জন্য ভোটব্যাংক হিসেবে প্রভাব রাখবে বলে মনে করেন এ আদিবাসী নেতা। আওয়ামী লীগের অপর প্রার্থীরা হলেনÑযুবলীগের কেন্দ্রীয় সদস্য এরশাদুর রহমান মিন্টু, কলমাকান্দা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ মোঃ ফখরুল ইসলাম ফিরোজ, জেলা আওয়ামী লীগের দুই সহ-সভাপতি আব্দুল খালেক তালুকদার (সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান) ও মানু মজুমদার, চার্টার্ড এ্যাকাউন্ট্যান্ট আফতাব উদ্দিন, সাবেক এমপি জালাল উদ্দিন তালুকদারের পুত্র শাহ কুতুবউদ্দিন তালুকদার রুয়েল (গত নির্বাচনের স্বতন্ত্র বা বিদ্রোহী প্রার্থী), কন্যা জান্নাতুল ফেরদৌস ঝুমা তালুকদার, লন্ডন প্রবাসী শাহ মহসিন, জাপান প্রবাসী সাবেক ছাত্রনেতা আশীষ রঞ্জন রায় ভানু ও সাবেক যুবলীগ নেতা উসমান গণি। এদিকে নবম সংসদ নির্বাচনে এ আসনে বিএনপির প্রার্থী হয়েছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির বর্তমান আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। বেগম খালেদা জিয়ার অনেক মামলার আইনজীবী তিনি। সরকারী দলের বাধা এবং দলীয় প্রধান কারান্তরীণ থাকায় কৌশলগত কারণে আপাতত মাঠে না থাকলেও তৃণমূলের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। তিনি ছাড়াও বিএনপির মনোনয়ন চাইবেন- জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি (জাপার সাবেক এমপি) গোলাম রব্বানী, জাতীয়তাবাদী কর আইনজীবী ফোরামের (ঢাকা ট্যাক্সেস বার) সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রদল নেতা এ্যাডভোকেট মোস্তফা নূরুল আলম খান, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম মাসুদ এবং স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় নেতা অধ্যাপক সৈয়দ মাজহারুল হক সোহাগ। এক সময় এ আসনে বিএনপির ডাকসাইটে প্রার্থী ছিলেন সাবেক হুইপ এ্যাডভোকেট আব্দুল করিম আব্বাছী। পরবর্তীতে তিনি এলডিপিতে যোগ দেন। আগামী নির্বাচনে তাকে এলডিপির প্রার্থী হিসেবে দেখা যেতে পারে। আবার এলডিপি কোন জোটের আওতায় গেলে তিনি জোটের গুরুত্বপূর্ণ প্রার্থী হয়ে উঠতে পারেন। এদিকে সিপিবি থেকে এবারও প্রার্থী হতে পারেন কেন্দ্রীয় নেতা ডাঃ দিবালোক সিংহ। নেত্রকোনা-২ (সদর-বারহাট্টা) ॥ জেলা সদরের আসন হওয়ায় এটি আওয়ামী লীগ-বিএনপি উভয়ের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। দু’দলই চায় আসনটি দখলে রাখতে। তাই প্রার্থী বাছাই করতে হবে খুব হিসেব-নিকেশ করে। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এখান থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও মুক্তিযোদ্ধা আশরাফ আলী খান খসরু। দশম সংসদ নির্বাচনে খসরুর পরিবর্তে মনোনয়ন পান সাবেক ফুটবল তারকা আরিফ খান জয়। মনোনয়ন না পেয়ে আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি লে. কর্নেল (অব) আব্দুন নূর খান নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হলেও বিপুল ভোট পেয়ে নির্বাচনী এলাকায় তার শক্ত অবস্থানের কথা জানান দেন। তবে প্রথমবার এমপি হয়েই আরিফ খান জয় যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী হন। তিনি এবারও মনোনয়নের ব্যাপারে দৃঢ় আশাবাদী। সাবেক এমপি আশরাফ আলী খান খসরু ও লে. কর্নেল (অব) আবদুন নূর খান মনোনয়ন পেতে নির্বাচনী এলাকায় ব্যাপক গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। অন্যদিকে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং জেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসক (তিনবার নির্বাচিত সাবেক মেয়র) মতিয়র রহমান খানও ব্যানার-পোস্টার-তোরণের মাধ্যমে নিজ প্রার্থিতার জানান দিচ্ছেন। এদিকে ব্যাপক প্রচার ও গণসংযোগের মধ্য দিয়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন আরেক তরুণ প্রার্থী। তিনি হলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও নেত্রকোনা সরকারী কলেজের সাবেক ভিপি শামছুর রহমান লিটন (ভিপি লিটন)। জোট আমলে নির্যাতিত এ নেতা গত নির্বাচনের আগে থেকেই মাঠÑঘাট চষে বেড়াচ্ছেন। প্রচারে সাধারণ ভোটারদের দৃষ্টি কাড়তে সক্ষম হয়েছেন তিনি। এছাড়াও এখান থেকে মনোনয়নের প্রত্যাশায় গণসংযোগ করছেনÑজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক এবং নেত্রকোনা পৌরসভার বর্তমান মেয়র (দুইবার নির্বাচিত) আলহাজ নজরুল ইসলাম খান, অপর যুগ্ম সম্পাদক এবং জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান (সাবেক মেয়র) প্রশান্ত কুমার রায়, চিত্রনায়ক রানা হামিদ, জেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক অধ্যাপক ওমর ফারুক এবং সাবেক কাস্টমস কর্মকর্তা ও মুক্তিযোদ্ধা আবু আক্কাছ আহমেদ। এদিকে ১৪ দলের শরিক দল জাসদের কেন্দ্রীয় নেতা মুখলেছুর রহমান মুক্তাদিরও এ আসন থেকে মনোনয়ন চাইতে পারেন। নবম সংসদ নির্বাচনে এ আসন থেকে বিএনপির প্রার্থী হয়েছিলেন জেলা বিএনপির তিন-তিনবারের সভাপতি ও সাবেক এমপি মুক্তিযোদ্ধা আশরাফ উদ্দিন খান। আগামী নির্বাচনেও তিনি মনোনয়ন প্রত্যাশী। এ আসনে বিএনপির আরেক শক্তিশালী প্রার্থী হলেন জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক এবং বিশিষ্ট চিকিৎসক ডাঃ আনোয়ারুল হক। গত নির্বাচনের আগে থেকে প্রচার-গণসংযোগে ব্যস্ত থেকে নিজের শক্ত ভিত গড়ে তুলেছেন তিনি। বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এ্যাডভোকেট আরিফা জেসমিন নাহীনও গণসংযোগ করছেন। এছাড়াও এখান থেকে বিএনপির মনোনয়ন চাইতে পারেনÑ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক এটিএম আব্দুল বারী ড্যানী, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এ্যাডভোকেট খোরশেদ আলম মিয়া, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ডাঃ দেলোয়ার হোসেন টিটো, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান খান রেজভী এবং জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম মনিরুজ্জামান দুদু। তবে এদের অনেকেরই নির্বাচনী গণসংযোগ নেই এলাকায়। নেত্রকোনা-৩ (কেন্দুয়া-আটপাড়া) ॥ নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রনেতা মঞ্জুর কাদের কোরাইশী। গত (দশম) নির্বাচনে তিনি বাদ পড়েন। তার বদলে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচিত হন শিল্পপতি ইফতিকার উদ্দিন তালুকদার পিন্টু। এমপি হওয়ার পর নানা কারণে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে তার দূরত্ব বেড়েছে। এরপরও মনোনয়নের ব্যাপারে আশাবাদী তিনি। তবে এ আসনে এবার হেভিওয়েট প্রার্থী হয়ে ওঠেছেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক ও ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অসীম কুমার উকিল। এর আগেও একাধিকবার মনোনয়ন চেয়ে বঞ্চিত হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ’৯০ এর গণআন্দোলনের অন্যতম এ নেতা। এবার অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে তিনি বেশি গণসংযোগ করছেন। তার জন্যে আঁটঘাট বেঁধে মাঠে নেমেছেন তার স্ত্রী যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি অধ্যাপিকা অপু উকিল। উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের অনেক নেতাই একাট্টা হয়েছেন তাদের সঙ্গে। ওদিকে সাবেক এমপি মঞ্জুর কাদের কোরাইশীও মনোনয়নের জন্য তৎপর রয়েছেন। এছাড়াও এ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাইবেনÑ কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক এ্যাডভোকেট আব্দুল মতিন, শিল্পপতি সামসুল কবীর খান, আটপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান খায়রুল ইসলাম (সাবেক এমপি আব্দুল খালেকের পুত্র), জেলা কৃষকলীগের সভাপতি কেশব রঞ্জন সরকার, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা আলমগীর হাসান, ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও মুক্তিযোদ্ধা এ্যাডভোকেট সাইদুর রহমান মানিক, জেলা পরিষদের নারী সদস্য ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সালমা আক্তার প্রমুখ। বিএনপি থেকে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও বর্তমানে কেন্দুয়া উপজেলা কমিটির সভাপতি ড. রফিকুল ইসলাম হিলালী। তখন আওয়ামী লীগের প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন তিনি। সাবেক এ ছাত্রনেতা এবারও মনোনয়নের জন্য তৎপর। এ আসনে বিএনপির আরেক শক্তিশালী প্রার্থী হচ্ছেন জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি, কেন্দুয়া উপজেলা বিএনপির তিন-তিনবারের সাধারণ সম্পাদক এবং স্থানীয় উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন ভূঁইয়া দুলাল। তৃণমূল পর্যায় থেকে ওঠে আসা এই নেতা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছাড়াও দুইবার ইউপি চেয়ারম্যান এবং একবার কেন্দুয়া পৌরসভার মেয়র ছিলেন। নির্বাচনকে সামনে রেখে বহু আগে থেকেই গণসংযোগ করে আসছেন পরিচ্ছন্ন ইমেজের এই প্রার্থী। দলের নেতাকর্মী এবং সাধারণ ভোটারদের সঙ্গেও সুসম্পর্ক রয়েছে তার। এছাড়াও বিএনপির মনোনয়ন চাইবেন দলীয় চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা সৈয়দ আলমগীর খসরু, জাতীয়তাবাদী টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার্স ফোরামের সহ-সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মোস্তফা-ই-জামান সেলিম। নেত্রকোনা-৪ (মদন-মোহনগঞ্জ-খালিয়াজুরি) ॥ এ আসনটি হাওড়াঞ্চলের তিন উপজেলা নিয়ে গঠিত। খালিয়াজুরি উপজেলা আওয়ামী লীগের জন্য ভোট ব্যাংক। আর মদন উপজেলার পরিচিতি বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে। এখানকার বর্তমান এমপি আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতিম-লীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আব্দুল মমিনের স্ত্রী রেবেকা মমিন। স্বামীর মৃত্যুর পর দুইবার এমপি নির্বাচিত হন তিনি। নির্বাচনী এলাকায় কিছুটা কম আসলেও তার পরিচ্ছন্ন ইমেজ রয়েছে। তাই এবারও মনোনয়নের ব্যাপারে দৃঢ় আশাবাদী এই নারী প্রার্থী। এদিকে ডাক, টেলিযোগাযোাগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের বাড়ি খালিয়াজুরি উপজেলায়। মনোনয়ন দৌড়ে তিনি কোন দিনই ছিলেন না। এবারও নেই। নির্বাচন প্রসঙ্গে আলাপকালে এ প্রতিবেদককে তিনি বলেন, ‘আমার প্রার্থী হওয়া না হওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে দলের প্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের ওপর। তিনি চাইলে আমি যে কোন দায়িত্ব নিতে পারি।’ এদিকে সাবেক এমপি আব্দুল মমিনের মৃত্যুর পর থেকে এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়ে আসছেন ’৯০ এর গণআন্দোলনের আরেক প্রভাবশালী নেতা শফী আহমেদ। ভোটারদের কাছে তিনি পরিচিত মুখ। ২০০৬ সালে তাকে মনোনয়ন দেয়া হলেও ১/১১ এর প্রেক্ষাপটে সে নির্বাচন হয়নি। এরপর ২০০৮ সালে তাকে পুনরায় মনোনয়ন দেয়া হয়। কিন্তু দাখিলের পর তার মনোনয়নপত্রটি প্রত্যাহার করে ওই আসনে মনোনয়ন দেয়া হয় বর্তমান এমপি রেবেকা মমিনকে। এসব কারণে নৌকার কা-ারি হওয়ার সৌভাগ্য থেকে বারবার বঞ্চিত হয়ে আসছেন তিনি। তবে সাবেক ছাত্রনেতা শফী আহমেদ এখনও হাল ছাড়েননি। মনোনয়নের জন্য এবারও জোর তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়াও এ আসন থেকে মনোনয়ন পেতে চেষ্টা করছেন জেদ্দা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং মুক্তিযোদ্ধা মমতাজ হোসেন চৌধুরী। গত নির্বাচন থেকেই গণসংযোগ করে আসছেন তিনি। এবার প্রবাসের চাকরি ছেড়ে সরাসরি ভোটের মাঠে নেমে এসেছেন। নৌকার জনমত গঠনে ছুটছেন ভোটারদের কাছে। লবিং করছেন কেন্দ্রের নেতা-নেত্রীদের সঙ্গেও। মনোনয়নের ব্যাপারে তিনিও আশাবাদী। এ আসনে আওয়ামী লীগের আরেক প্রার্থী ক্যাপ্টেন (অব) মনজুর। এর আগেও কয়েকবার মনোনয়ন চেয়ে ব্যর্থ হন তিনি। হাওড়-বাঁওরের এ আসনটি এক সময় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের ‘দুর্গ’ বলে পরিচিত ছিল। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাবর বিএনপির মনোনয়ন বঞ্চিত হন। তখন ধানের শীষের মনোনয়ন পান সৈয়দ আতাউল হক। কিন্তু ভোটাররা অপরিচিত এই প্রার্থীকে গ্রহণ করেননি। ফলে জামানত বাজেয়াপ্ত হয় তার। অন্যদিকে বাবর স্বতন্ত্র বা বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে লড়ে পরাজিত হলেও ভাল ভোট পান। একাধিক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বাবর কারাগারে থাকায় তার নির্বাচনে অংশগ্রহণ সম্ভব নয়। এ কারণে প্রার্থী সঙ্কটে পড়েছে দলটি। তবে বাবরের স্ত্রী তাহমিনা জামান শ্রাবণীকে বিএনপির মনোনয়ন দেয়া হতে পারেÑ এমন প্রচার রয়েছে এলাকায়। যদিও শ্রাবণীকে কখনও মাঠে নামতে দেখেননি ভোটাররা। তবে এ কথা সত্যÑ তিনি মনোনয়ন পেলে বাবরের ইমেজকে কাজে লাগিয়ে শক্তিশালী প্রার্থী হয়ে ওঠবেন। তখন একটু নড়েচড়ে দাঁড়াতে হবে আওয়ামী লীগকে। কেন্দ্রীয় নেতা কৃষিবিদ আব্দুল্লাহ আল ফারুক এবং নেত্রকোনা সরকারী কলেজের সাবেক জিএস এ্যাডভোকেট মাসুদ রানা চৌধুরীও বিএনপির মনোনয়ন পেতে চেষ্টা করছেন। সিপিবি থেকে এ আসনে প্রার্থী হতে পারেন কেন্দ্রীয় নেত্রী কমরেড জলি তালুকদার। নেত্রকোনা-৫ (পূর্বধলা) ॥ এ আসনের বর্তমান এমপি ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল বীরপ্রতীক। তিনি পূর্বধলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং শহীদ কর্নেল তাহেরের আপন ভাই। পর পর দুই মেয়াদে এমপি থাকাকালে এলাকায় বেশ উন্নয়ন কর্মকা- করেছেন তিনি। তাই দলীয় মনোনয়নের ব্যাপারে এবারও তিনি দৃঢ় আশাবাদী। তবে ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল ছাড়াও এ আসন থেকে মনোনয়ন চাইবেন আওয়ামী লীগের আরও কয়েকজন প্রার্থী। তাদের মধ্যে দুই হেভিওয়েট প্রার্থী হলেনÑ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রনেতা আহমদ হোসেন এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার প্রধান সমন্বয়ক আবদুল হান্নান খান। দু’জনই গত কয়েকটি নির্বাচন থেকে মনোনয়ন চেয়ে আসছেন। গত নির্বাচনে মনোনয়ন বঞ্চনার পর আহমদ হোসেনকে কেন্দ্রের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে পূর্বধলার পাশাপাশি গোটা জেলাতেই তার গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পায়। তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে তার নিবিড় যোগাযোগ রয়েছে। এমনও প্রচার আছেÑ আহমদ হোসেনকে শেষ পর্যন্ত নেত্রকোনা-৫ (পূর্বধলা) আসন থেকে প্রার্থী করা না গেলে তাকে নেত্রকোনা-২ (সদর-বারহাট্টা) আসন থেকে প্রার্থী করা হতে পারে। অন্যদিকে সাবেক পুলিশের ডিআইজি ও মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হান্নান খান বর্তমানে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার প্রধান সমন্বয়কের (আইজিপি মর্যাদায়) দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগেও বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা এবং জেল হত্যা মামলার প্রধান তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন। এবার সংসদে গিয়ে এলাকাবাসীর উন্নয়নের কা-ারি হতে চান তিনি। প্রায় সময় এলাকায় এসে সভা-সমাবেশ ও গণসংযোগ করছেন এই প্রার্থী। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক (সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান) এরশাদ হোসেন মালু এবং বাকৃবির সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ইঞ্জিনিয়ার মিছবাহুজ্জামান চন্দনও মনোনয়ন চাইবেন। এছাড়াও মনোনয়নের জন্য গণসংযোগ করে যাচ্ছেন লন্ডন প্রবাসী প্রার্থী তুহিন খান। তবে এখানে উল্লেখ্য, পূর্বধলার আওয়ামী লীগ চরম কোন্দলে জর্জরিত। এখানে যত নেতা, তত গ্রুপ। এক গ্রুপ বর্তমান এমপি ওয়ারেসাত হোসেন বেলালের অনুসারী। আরেক গ্রুপ অনুসরণ করে কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এরশাদ হোসেন মালুকে। তৃতীয় আরেকটি গ্রুপ আছে সাবেক ডিআইজি আবদুল হান্নান খানের সঙ্গে। এমপির দূর সম্পর্কের ভাগ্নে বলে পরিচিত উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম সুজন এক সময় এমপির ডানহাত ছিলেন। এখন তিনিও এমপির বিপক্ষ দলে। লন্ডন প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা তুহিন খানকে নিয়ে কিছুদিন চতুর্থ আরেকটি গ্রুপের নেতৃত্ব দেন। সম্প্রতি ওই গ্রুপটি আহমদ হোসেনের সমর্থকদের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়। উপজেলা কমিটির সভাপতি-সম্পাদক দু’জন দুই মেরুতে অবস্থান করায় কিছুদিন আগে পূর্বধলার প্রতিটি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দু’টি করে কমিটি গঠন করা হয়। পাল্টাপাল্টি কমিটির কারণে জেলা সম্মেলনের আগে পূর্বধলা উপজেলা শাখার সম্মেলন করা সম্ভব হয়নি। প্রায় এক যুগ ধরে মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে আছে উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটি। এতে পদবঞ্চিত হয়ে আছেন অনেক উঠতি নেতা। এদিকে অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে পূর্বধলায় বিশেষ দিনের সাংগঠনিক কর্মসূচীগুলোও আলাদাভাবে, এমনকি আলাদা অফিসে পাল্টাপাল্টিভাবে পালন করা হয়। খ-িত-বিখ-িত এসব গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় হামলা-মামলাও হয়েছে। কিছুদিন আগে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম সুজন এবং যুবলীগ নেতা রাজা মিয়ার বাসা-বাড়িতে হামলা করে নিজ দলীয় প্রতিপক্ষ। প্রকাশ্যে লাঞ্ছিত করা হয় মনোনয়ন প্রত্যাশী তুহিন খানকে। মাথা ন্যাড়া করে দেয়া হয় স্বপন দাস নামে এক ছাত্রলীগ কর্মীর। এসব অভিযোগের তীর নিক্ষিপ্ত হয়েছে স্থানীয় এমপির সমর্থকদের ওপর। সাধারণ নেতাকর্মীদের বক্তব্য- এবার প্রার্থী মনোনয়নে এসব বিষয়কে অবশ্যই বিবেচনা করতে হবে। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন সাবেক এমপি ডাঃ মোহাম্মদ আলী। তিনি আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল বীর প্রতীকের কাছে পরাজিত হন। ডাঃ মোহাম্মদ আলীর মৃত্যুর পর আসনটিতে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে গণসংযোগ করে আসছেন জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং নেত্রকোনা সরকারী কলেজের সাবেক ভিপি আবু তাহের তালুকদার। তার পাশাপাশি গণসংযোগ এবং দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগের মধ্য দিয়ে আলোচনায় উঠে এসেছেন দলের আরেক তরুণ প্রার্থী এ এস এম শহীদুল্লাহ ইমরান। কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি ইমরান গত নির্বাচনের আগে থেকেই মনোনয়ন চেয়ে আসছেন। এছাড়াও বিএনপির মনোনয়নের জন্য চেষ্টা করছেন আইনজীবী নেতা ড. আব্দুল জলিল, সাবেক এমপি ডাঃ মোহাম্মদ আলীর স্ত্রী অধ্যক্ষ রাবেয়া আলী এবং জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি শরীফ আহমেদ। জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন চাইবেন ওয়াহিদুজ্জামান তালুকদার আজাদ।
×