ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশের দুর্ভাগ্যের ড্র

প্রকাশিত: ০৭:০৯, ১৭ আগস্ট ২০১৮

বাংলাদেশের দুর্ভাগ্যের ড্র

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ শক্তি-সামর্থ্যরে বিচারে বাংলাদেশের চেয়ে বেশ এগিয়ে থাইল্যান্ড। বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থান যেখানে ১৯৪, সেখানে থাইল্যান্ডের অবস্থান ১২২। বৃহস্পতিবার এশিয়ান গেমস ফুটবলে সেই দলটির সঙ্গে ম্যাচের ৭৯ মিনিট পর্যন্ত এক গোলে এগিয়ে থেকেও জিততে পারেনি লাল-সবুজের দল। এগিয়ে গিয়েও করেছে ১-১ গোলে দুর্ভাগ্যের ড্র! তারপরও ইন্দোনেশিয়ার সিবিনংয়ের পাকানসারি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে বাংলাদেশের এই ড্রকে জয়ের সমতুল্য ভাবছেন অনেকেই। কেননা দীর্ঘদিন ধরে ব্যর্থতার বৃত্তে আটকা ছিল বাংলাদেশ পুরুষ ফুটবল দল। নতুন কোচ জেমি ডে’র অধীনে এই সাফল্য কিছুটা হলেও আশা জাগিয়ে তুলেছে। অবশ্য চলমান এই গেমসে বাংলাদেশের শুরুটা মোটেও ভাল হয়নি। ‘বি’ গ্রুপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে উজবেকিস্তানের কাছে ৩-০ গোলে হেরেছিল বাংলাদেশ। এই থাইল্যান্ডের সঙ্গে এর আগে ১৪ ম্যাচ খেলেছিল বাংলাদেশ, জয় পেয়েছিল মাত্র দুটি। ১৯৮৫ সালে ১-০ এবং ১৯৮৯ সালে ৩-১ গোলে জিতেছিল বাংলাদেশ। মেয়েদের ফুটবলকে ঘিরে যখন একের পর এক আনন্দের জোয়ার, ছেলেদের ফুটবলে তখন অমাবস্যার অন্ধকার। সেই নিকষ কালো আঁধার কাটিয়ে ওঠার জন্য প্রয়োজন ছিল একটি জয়ের। এশিয়ান গেমসে থাইল্যান্ডের বিপক্ষে তেমন এক জয়ের দ্বারপ্রান্তে থেকে ড্রয়ের ফল পেল বাংলাদেশ। আগের ম্যাচে উজবেকিস্তানের বিপক্ষে ব্যর্থতা ভুলে পাকানসারি স্টেডিয়ামে থাইল্যান্ডের বিপক্ষে ভাল কিছুর প্রত্যয়ই দেখা গেছে বাংলাদেশের ফুটবলারদের মধ্যে। ম্যাচ শুরুর ৮ মিনিটের মধ্যে থাই গোলরক্ষককে একা পেয়েও গোল করতে পারেননি মাহবুবুর রহমান সুফিল। ৩৭ মিনিটে আবারও সুবিধাজনক জায়গায় বল পেয়ে দুর্বল শটে থাই ডিফেন্ডারদের বোকা বানাতে পারেনি এ ফরোয়ার্ড। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে গোল প্রায় হজম করেই বসেছিল বাংলাদেশ। ৪৮ মিনিটে সারিঙ্কান প্রমসুপার শট বাংলাদেশ গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানা ঝাঁপিয়ে ফিরিয়ে দেয়ায় সে যাত্রায় বিপদে পড়েনি জেমি ডে’র শিষ্যরা। ওই আক্রমণে ঘাবড়ে না গিয়ে উল্টো পাল্টা আক্রমণে ম্যাচে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। ৫২ মিনিটে বিশ্বনাথ ঘোষের লম্বা থ্রোতে বাংলাদেশের এক খেলোয়াড়ের মাথা ছুঁয়ে বল যায় সুফিলের পায়ে। জটলার মধ্য থেকে সেই বলে আলতো ভলিতে থাই গোলরক্ষককে পরাস্ত করে আগের দুই সুযোগ হাতছাড়ার প্রায়শ্চিত্ত করেন এ ফরোয়ার্ড (১-০)। গোলের পরেই যেন রাজ্যের ক্লান্তি এসে ভর করে বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের মাঝে। এই সুযোগে রক্ষণে চাপ বাড়ায় থাইল্যান্ড। অতীতে এগিয়ে থেকেও জয়হীনভাবে ফেরার পুরনো রোগ আবারও ভর করে শেষ অবধি। সাদউদ্দিন, মাশুক মিয়া জনিরা থাইদের মুহুর্মুহু আক্রমণের সামনে অসহায় হয়ে পড়েন। একসময় বেরিয়ে পড়ে রক্ষণের কঙ্কালও। গোলরক্ষক রানা একাধিক সেভ করলেও শেষ রক্ষা হয়নি। ৮০ মিনিটে হাওয়ায় ভাসানো বলে তার এক ব্যর্থতার সুযোগ নিয়ে সুপাচাই চাইদেদের গোলে সমতায় ফেরে থাইল্যান্ড। শেষদিকে থাইল্যান্ডের একটি সহজ সুযোগ হাতছাড়া না হলে ম্যাচ থেকে ছিটকে যেতে পারতো বাংলাদেশ। তবে মাটি কামড়ে শেষ কয়েক মিনিট পার করে দেয়ায় অন্তত এক পয়েন্ট যোগ হয়েছে বাংলাদেশের পয়েন্ট ভা-ারে। বাংলাদেশের গ্রুপপর্বের শেষ ম্যাচ আগামী ১৯ আগস্ট, কাতারের বিপক্ষে। বাংলাদেশ দল ॥ আশরাফুল ইসলাম রানা, সুশান্ত ত্রিপুরা, বিশ্বনাথ ঘোষ, জামাল ভুঁইয়া, টুটুল হোসেন বাদশা, তপু বর্মণ, মাহবুবুর রহমান সুফিল (মতিন মিয়া), আতিকুর রহমান ফাহাদ (মোঃ আবদুল্লাহ), সাদ উদ্দিন, মাসুক মিয়া জনি ও বিপুল আহমেদ।
×