ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ ৫-০ ভুটান, শনিবার থিম্পুতে শিরোপা নির্ধারণী লড়াইয়ে মাঠে নামবে মারিয়ারা

আবারও বাংলাদেশ-ভারত ফাইনাল

প্রকাশিত: ০৭:০৭, ১৭ আগস্ট ২০১৮

আবারও বাংলাদেশ-ভারত ফাইনাল

রুমেল খান ॥ যেমনটা প্রত্যাশা ছিল, ঠিক তেমনটাই ঘটেছে। প্রথম আসরের মতো সাফ অনুর্ধ-১৫ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের দ্বিতীয় আসরেও হেসে খেলেই ফাইনালে উঠেছে বাংলার বাঘিনীরা। বৃহস্পতিবার থিম্পুর চাংলিথিমাং স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় সেমিফাইনালে বাংলাদেশ ৫-০ গোলে হারায় স্বাগতিক ভুটানকে। ম্যাচের প্রথমার্ধে বিজয়ী দল এগিয়েছিল ৩-০ গোলে। এদিকে একইদিনে একই ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত প্রথম সেমিতে ভারত ২-১ গোলে নেপালকে হারিয়ে ফাইনালে ওঠে। আগামী শনিবার বাংলাদেশ ফাইনালে মোকাবেলা করবে ভারতকে। গত আসরেও এই দুই দলই ফাইনালে উঠেছিল। মেয়েদের ফুটবলে এ পর্যন্ত সিনিয়র ও বয়সভিত্তিক দল মিলিয়ে বাংলাদেশ পাঁচবার মুখোমুখি হলো ভুটানের। সবকটি ম্যাচেই জিতেছে বাংলাদেশ। ২০১০ সালে কক্সবাজারে মেয়েদের সাফে প্রথমবার ভুটানকে ৯-০ গোলে, ২০১২ সালে কলম্বোতে ১-০ গোলে, নেপালে ২০১৫ সালে এএফসি অনুর্ধ-১৪ আঞ্চলিক চ্যাম্পিয়নশিপে ১৬-০ গোলে এবং গত বছর ঢাকায় শেষ মোকাবেলায় সাফ অনুর্ধ-১৫ টুর্নামেন্টে ৩-০ গোলে জিতেছিল বাংলাদেশ। পুরো খেলায় বাংলাদেশ খেলে দাপটের সঙ্গে। প্রতিপক্ষকে নাচিয়ে ছাড়ে। ১৮ মিনিটে গোলের দেখা পায় বাংলাদেশ। কর্নার পায় তারা। বক্সের ভেতর জটলা থেকে ভুটানী এক ডিফেন্ডার ঠিকমতো বল বিপদমুক্ত করতে পারেনি। বল চলে যায় বাংলাদেশের ডিফেন্ডার আনাই মগিনির পায়ে। ডি-বক্সের বাইরে থেকে আনাইয়ের ডান পায়ের জোরালো উঁচু শট ভুটানের গোলরক্ষকের মাথার ওপর দিয়ে আশ্রয় নেয় জালে (১-০)। এটি চলতি আসরে আনাইয়ের দ্বিতীয় গোল। ৩৬ মিনিটে ভুটানের বক্সের মধ্যে বল পায় নাজমা। জটলার মধ্যে বল পেয়ে নাজমা গোল করলেও ফাউলের কারণে রেফারি গোলটি বাতিল করে দেন। ৩৮ মিনিটে আবারও গোল করে ব্যবধান দ্বিগুণ করে বাংলার বাঘিনীরা। বাঁ প্রান্ত দিয়ে লেফটব্যাক নীলা সেন্টার করে ভুটানের ডি-বক্সের ঠিক মাথায়। ভুটানের এক ডিফেন্ডার বল ঠিকমতো বিপদমুক্ত করতে পারেনি। শূন্য বল পেয়ে ঠিক সে জায়গা থেকেই ডান পায়ের চমৎকার হাওয়ায় ভাসানো জোরালো ভলি শটে বল জালে পাঠিয়ে উল্লাসে মেতে ওঠে ফরোয়ার্ড আনুচিং মগিনি। যমজ বোন আনাই মগিনির মতো তার নামেরও পাশেও যোগ হয় গোলটি (২-০)। পাঁচ মিনিট পরই আবারও গোলের দেখা পায় বেঙ্গল টাইগ্রেস দল। ভুটানের বক্সের ডানপ্রান্তে ঢুকে নাজমার গড়ানো ক্রস থেকে দ্বিতীয় চেষ্টায় গোল করে স্ট্রাইকার তহুরা খাতুন। মজার ব্যাপারÑ বলের সঙ্গে সঙ্গে সে নিজেও জালের ভেতর ঢুকে ‘গোল’ হয়ে যায় (৩-০)। এটা চলতি আসরে তহুরার ব্যক্তিগত চতুর্থ গোল, যা স্বদেশী শামসুন্নাহার জুনিয়র এবং ভারতের সিল্কি দেবীর সঙ্গে যুগ্মভাবে সর্বোচ্চ। এই স্কোরলাইন নিয়েই বিরতিতে যায় দুই দল। প্রথমার্ধে বাংলাদেশ দল বল নিয়ন্ত্রণে (৯০%-১০%), গোলমুখে শট নেয়ায় (১১-০) এবং কর্নার নেয়াতে (৪-০) ছিল এগিয়ে। দ্বিতীয়ার্ধেও আধিপত্য বজায় রেখে খেলে বাংলাদেশ। তবে এই অর্ধে গোল করে দুটি। ৬৯ মিনিটে চতুর্থ গোলের সন্ধান পায় লাল-সবুজ বাহিনী। মাঝ মাঠে বল পায় অধিনায়ক-মিডফিল্ডার মারিয়া মান্দা। কোন বাধা না পেয়ে দ্রুতগতিতে ভুটানের গোলসীমানায় এগিয়ে যায় সে। মারিয়া যখন ডি-বক্সের বাইরে এবং গোলপোস্ট থেকে ৩৫ গজ দূরে তখন অবশ্য সামনে থেকে তাকে বাধা দিতে এগিয়ে আসে ভুটানের ডিফেন্ডাররা। আশেপাশের সতীর্থতের না পেয়ে নিজেই তখন বাঁ পায়ের উঁচু শটে প্রতিপক্ষ গোলরক্ষককে পরাস্ত করে দারুণভাবে (৪-০)। চলতি আসরে এটি মারিয়ার ব্যক্তিগত তৃতীয় গোল। ৮৬ মিনিটে ভুটানের হারের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকে বাংলাদেশ। শামসুন্নাহার জুনিয়রের কাছ থেকে বল পেয়ে ডানপ্রান্ত দিয়ে এগিয়ে যায় বদলি ফরোয়ার্ড সাজেদা আক্তার রিপা। এরপর ডি-বক্সের কোণা থেকে ডান পায়ের দারুণ প্লেসিং শটে বল জালে জড়িয়ে দেয় (৫-০)।
×