ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

নাটোরে ৬শ’ কোটি টাকার গরু লালন-পালন

প্রকাশিত: ০৬:৩৭, ১৭ আগস্ট ২০১৮

নাটোরে ৬শ’ কোটি টাকার গরু লালন-পালন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে নাটোরে প্রায় ৬শ’ কোটি টাকার গরু লালন-পালন করা হয়েছে। এসব গরু স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হচ্ছে। এবার দেশী গরুর বাজার চাঙ্গা থাকায় অধিক লাভের আশা করছেন খামারিরা। তবে কোনভাবেই যেন অবৈধ পথে গরু আসতে না পারে এজন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন তারা। নাটোর প্রাণিসম্পদ বিভাগ সূত্র জানায়, কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে গরু হৃষ্টপুষ্টকরণে ঝুঁকেছেন নাটোর সদরসহ অন্যান্য উপজেলার খামারিরা। এখানকার সাড়ে ৫ হাজার খামারে গরু হৃষ্টপুষ্ট করা হচ্ছে। কোরবানির পশু হৃষ্টপুষ্ট করতে এখানকার খামারিরা বেছে নিয়েছেন স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। গমের ভুসি, চাউলের খুদ, খড়, কাঁচা ঘাসসহ বিভিন্ন খাবার দেয়া হচ্ছে গরুগুলোকে। উপযুক্ত পরিচর্যার কারণে এসব গরু মোটা ও স্বাস্থ্যবান হয়ে উঠছে। নাটোর সদর উপজেলার ডাল সড়কের খামারি রেকাত উদ্দিন জানান, কোরবানির ঈদকে টার্গেট করেই বিভিন্ন হাট ঘুরে ১০১টি উন্নত জাতের গরু যেমন শাহীওয়াল, রাজস্থানী, হরিয়ানা, উলুবাড়িয়া, নেপালী, দেশী শংকর জাতের গরু কিনেছেন। তারপর সাত থেকে আট মাস পরিচর্যা করেছেন। প্রাকৃতিক উপায়ে লালন-পালন করায় এখানকার গরুর চাহিদা রয়েছে দেশজুড়ে। দেশের বিভিন্নস্থানের পাইকারি ব্যবসায়ীরা এসে গরু কিনে নিয়ে যাচ্ছে এখানকার খামার থেকে। প্রতিবছরের মতো এবারও তিনি লাভের মুখ দেখবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন। তিনি আরও জানান, গরু মোটাতাজা করতে কোন রাসায়নিক বা স্টেরয়েড ব্যবহার করেন না। গরুগুলোকে সাধারণত কাঁচা ঘাস, খড়, খৈল. গমের ভুসি, চালের খুদ খাওয়ানো হয়। এ পদ্ধতিতে গরু লালন-পালন করলে অল্পদিনেই গরু হৃষ্টপুষ্ট হয় এবং বিক্রির উপযুক্ত হলে ভাল দাম পাওয়া যায়। গুরুদাসপুর উপজেলার কালাকান্দর গ্রামের খামারি ওমর শেখ জানান, গরু পালন লাভজনক হওয়ায় এ অঞ্চলে দিন দিন গরুর খামার বাড়ছে। তবে কোরবানির আগে ভারত থেকে অবৈধভাবে আসা গরুর কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হন দেশীয় খামারিরা। এজন্য সীমান্ত পথে অবৈধভাবে গরু আসা বন্ধের দাবি জানান তিনি। একই উপজেলার চাঁচকৈড় গাড়িষাপাড়ার খামারি আজাদ উদ্দিন জানান, তার খামারে বর্তমানে ৫০টি গরু আছে। পুঁজির অভাবে তিনি খামারটি বড় করতে পারছেন না। সহজ শর্তে ঋণ পেলে তিনি খামার বড় করাসহ অধিক লাভ করতে পারবেন। নাটোর জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার ডাঃ বেলাল হোসেন জানান, পশু মোটাতাজা করতে অবৈধপন্থা ঠেকাতে তাদের নজরদারি অব্যাহত আছে। এ বছর কোরবানির জন্য নাটোরে প্রায় ৮০ হাজার গরু হৃষ্টপুষ্ট করা হচ্ছে। যার বাজার মূল্য প্রায় ৬শ’ কোটি টাকা।
×