অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত কোম্পানি ড্রাগন সোয়েটার এ্যান্ড স্পিনিং লিমিটেডের শেয়ার দর সম্প্রতি কোন কারণ ছাড়াই অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। গত ১৮ জুন যে শেয়ারের দাম ছিল ১৭ টাকা ৭০ পয়সা, ৫ আগস্ট তা ৫০ টাকা ৩০ পয়সায় লেনদেন হয়। এ হিসেবে দেড় মাসে কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ৩২ টাকা ৬০ পয়সা বা ১৮৫ শতাংশ। শেয়ারটি নিয়ে কারসাজির সন্দেহ করে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। বিএসইসি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত বছরের ১৬ আগস্ট কোম্পানিটির শেয়ার হাতবদল হয়েছিল ২২ টাকা ৭০ পয়সায়। চলতি বছরের জুনের ১৮ তারিখ পর্যন্ত তা ১৭ থেকে ২২ টাকায় হাতবদল হয়েছিল। এরপর হঠাৎ করে কোন কারণ ছাড়াই শেয়ারটির দর বাড়তে থাকে। গত ৫ আগস্ট তা ৫০ টাকা ৩০ পয়সায় হাতবদল হয়। সর্বশেষ সোমবার শেয়ারটি হাতবদল হয়েছে ৩৯ টাকা ২০ পয়সায়। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পক্ষ থেকে দর বৃদ্ধির কারণ জানতে চেয়ে গত দেড় মাসে কোম্পানিটিকে তিন দফায় কারণ দর্শানোর চিঠি দেয়া হয়। প্রতিবারই ড্রাগন সোয়েটার কর্তৃপক্ষ জানায়, দর বৃদ্ধির কোন কারণ তাদের জানা নেই। তারপরও কোম্পানিটির শেয়ার দর সম্প্রতি অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। এমন দাম বৃদ্ধির পেছনে কোম্পানির লোকজনও জড়িত বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ জন্য গত দুই মাস ধরেই কোম্পানিটিতে উদ্যোক্তা পরিচালকদের শেয়ার ধারণ কমে যাচ্ছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তথ্য বলছে, গত বছরের জুন মাসে উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে কোম্পানিটির মোট শেয়ারের ৪০ দশমিক ১১ শতাংশ থাকলেও চলতি বছরের জুন শেষে তা নেমে আসে ৩৭ দশমিক ৮২ শতাংশে। বাকি শেয়ারের মধ্যে বর্তমানে প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে ৩০ দশমিক ৪০ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছে রয়েছে ৩১ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
কোম্পানির জবাবে ডিএসই সন্তুষ্ট হতে না পেরে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসিকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলে। ডিএসইর দায়িত্বশীল পর্যায়ের এক সূত্র জানিয়েছে, গুটিকয়েক ব্যক্তি ড্রাগন সোয়েটারের শেয়ার নিয়ে কারসাজি করছে। চক্রটি কৃত্রিমভাবে শেয়ারটির দর বাড়িয়েছে। যা বিনিয়োগকারীদের জন্য ক্ষতিকর। এ জন্য বিষয়টি আরও খতিয়ে দেখা দরকার।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) দেয়া তথ্য অনুযায়ী, কোম্পানির অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী তৃতীয় প্রান্তিকে এসে কোম্পানিটি লোকসানে রয়েছে। প্রথম দুই প্রান্তিকে ১৪ কোটি ৬৯ লাখ টাকার মুনাফা করলেও সর্বশেষ প্রান্তিকে ২৩ কোটি টাকা লোকসান দিয়েছে। প্রসঙ্গত, পুঁজিবাজার থেকে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে ৪০ কোটি টাকা সংগ্রহ করে। কিন্তু ঘোষণা দিয়েও যথাসময়ে মেশিনারিজ ক্রয়ে অসমর্থ্য, আইপিওর অর্থ খরচ করতে না পারা ও অর্থ খরচের হিসাব দিতে না পারায় গত জানুয়ারিতে কোম্পানির ছয় পরিচালককে মোট ৩০ লাখ টাকা জরিমানা করেছে বিএসইসি।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: