ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সিআইএর সাবেক প্রধানও ট্রাম্পের রোষানল থেকে রেহাই পেলেন না

বিশেষ সুবিধা হারালেন ব্রেনান

প্রকাশিত: ০৬:২৯, ১৭ আগস্ট ২০১৮

বিশেষ সুবিধা হারালেন ব্রেনান

মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ’র সাবেক পরিচালক জন ব্রেনানের সিকিউরিটি ক্লিয়ারেন্স বাতিল করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্প বুধবার ব্রেনানের গোয়েন্দা তথ্য পাওয়ার বিশেষ সুবিধা বাতিল করে এইমর্মে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তার আরও কয়েকজন সমালোচককে কালো তালিকাভুক্ত করা হতে পারে। ব্রেনান প্রায়শ ট্রাম্পের সমালোচনা করতেন। এএফপি ও বিবিসি। নিষেধাজ্ঞা জারি করার ফলে ব্রেনান এখন থেকে গুরুত্বপূর্ণ গোয়েন্দা তথ্যের নাগাল পাবেন না। সিআইএ’র কোন সাবেক পারিচালককে তার সুবিধা বঞ্চিত করা একটি বিরল ঘটনা। ট্রাম্প ব্রেনানকে একজন ‘খেয়ালি’ মানুষ বলে অভিহিত করেছেন। উল্লেখ্য, ব্রেনান সিআইএ পরিচালক হওয়ার আগে গোয়েন্দা সংস্থাটির রিয়াদ স্টেশনের প্রধান ছিলেন। ব্রেনান প্রায়ই ট্রাম্পের সমালোচনা করতেন। বুধবার তাকে ওই সুবিধা থেকে বঞ্চিত করার আগেও ব্রেনান ট্রাম্পকে একজন সভ্যতা, ভব্যতা ও শিষ্টাচারবিহীন ব্যক্তি হিসেবে অভিহিত করেন। ট্রাম্পের ওই ঘোষণার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ব্রেনান একে তার ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে মন্তব্য করেন। ব্রেনান বলেন, ট্রাম্প মত প্রকাশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেন না। বুধবার হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র সারাহ স্যান্ডার্স ট্রাম্পের এক বিবৃতি পাঠের মাধ্যমে সিদ্ধন্তটি ঘোষণা করেন। নিরাপত্তা ছাড়পত্র বাতিলের জন্য ব্রেনানের ‘খেয়ালি চরিত্র ও আচরণকে’ দায়ী করেন ট্রাম্প। ব্রেনান বলেন, ‘খোলাখুলি কথা বলার মূল্য সম্পর্কে পেশাদার গোয়েন্দাসহ সকল মার্কিনীরই উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত। আমার নীতি ছাড়পত্রের চেয়েও অনেক বেশি মূল্যবান। আমি হাল ছাড়ব না’, সিআইএ’র সাবেক পরিচালক টুইটারে একথা বলেন। গত মাসে হেলসিংকিতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের সঙ্গে শীর্ষ বৈঠকের পর যৌথ সংবাদ ব্রিফিংয়ে ট্রাম্প যা বলেন তাকে ‘রাষ্ট্রদ্রোহীতার চেয়ে কম কিছু নয়’ বলেও মন্তব্য করেছিলেন ব্রেনান। ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের প্রচার টিমের সঙ্গে রাশিয়ার আঁতাত নিয়ে চলা তদন্ত ‘দৃঢ় ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত’ বলেও তিনি গত বছর মন্তব্য করেন। ট্রাম্প অবশ্য শুরু থেকেই রিপাবলিকানদের সঙ্গে মস্কোর আঁতাতের অভিযোগ অস্বীকার করে এ তদন্তগুলোকে ‘উইচ হান্ট’ হিসেবেও অ্যাখ্যা দিয়ে এসেছেন। ‘নির্বাহী বিভাগের প্রধান ও কমান্ডার ইন চীফ হিসেবে রাষ্ট্রের সংবেদনশীল তথ্যের সুরক্ষায় অনন্য সাংবিধানিক দায়িত্ব রয়েছে আমার, যার মধ্যে সেখানে প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রণের বিষয়টিও আছে। আমি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার সাবেক পরিচালক জন ব্রেনানের নিরাপত্তা ছাড়পত্র প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ‘সারাহ স্যান্ডার্স ট্রাম্পের এই বিবৃতিটি পড়ে শোনান। ট্রাম্প বলেন, কোন বিশেষ বিষয়ে মনোযোগসহ উত্তরসূরিদের বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দেয়া ও পেশাদারী সৌজন্যের অংশ হিসেবে ঐতিহাসিকভাবেই গোয়েন্দা সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাবেক প্রধানরা সরকারি চাকরি শেষেও নিরাপত্তা তথ্যে প্রবেশাধিকার পেয়ে আসছিলেন। এর একটিও সংবেদনশীল তথ্যে ব্রেনানের প্রবেশাধিকার বহাল রাখাকে সমর্থন করে না। ফেডারেল তদন্ত সংস্থা এফবিআইয়ের সাবেক প্রধান জেমস কোমি, জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার সাবেক পরিচালক জেমস ক্ল্যাপার, জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার সাবেক পরিচালক মাইকেল হেইডেন ও সাবেক এ্যাটর্নি জেনারেল স্যালি ইয়েটসের নিরাপত্তা ছাড়পত্রের বিষয়টিও পর্যালোচনা করা হচ্ছে বলে ওই বিবৃতিতে বলা হয়। গত বছর এফবিআই প্রধানের পদ থেকে বরখাস্ত হওয়া কোমি তার স্মৃতিচারণমূলক বই ‘এ হায়ার লয়ালিটিতে’তে ট্রাম্পকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ‘নেতিকভাবে অযোগ্য’ অ্যাখ্যা দেন। ব্রেনানের নিরাপত্তা ছাড়পত্র প্রত্যাহারের প্রতিক্রিয়ায় কোমি বলেন, ট্রাম্প ‘আরও একবার সমালোচকদের শাস্তি ও তোষণকারীদের পুরস্কারের বার্তাটিই দিলেন। আরও বড় সমস্যা থেকে ভোটারদের নজর সরাতে নিরাপত্তা ছাড়পত্রের বিষয়টিকে সস্তা রাজনৈতিক খেলায় দাবার ঘুঁটি হিসেবে ব্যবহার করা উচিত নয়। জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার সাবেক পরিচালক জেমস ক্ল্যাপার ও জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার সাবেক পরিচালক মাইকেল হেইডেনও ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে তাদের সমালোচনার বান অব্যাহত রেখেছেন।
×