ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

উবাচ

প্রকাশিত: ০৬:০১, ১৭ আগস্ট ২০১৮

উবাচ

দিনের আলোতে খেলুন স্টাফ রিপোর্টার ॥ নির্বাচন আসন্ন। ফের তৎপর গণফোরাম নেতা ড. কামাল হোসেন। রাজনীতিতে আবারও তৃতীয় জোট গঠনের চেষ্টা করছেন তিনি। যদিও বার বারই একই চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন আওয়ামী লীগ থেকে দলছুট এই নেতা। কার্যকর কিছুই দেখাতে পারেননি তিনি। তবে হাল ছাড়তে রাজি নন। ক্ষমতায় যাওয়ার সুপ্ত বাসনা নানা সময়ে নানা অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যে প্রকাশ পায়। সম্প্রতি তাকে নিয়ে সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্রের কথা বলছেন সরকারের দায়িত্বশীল একাধিক মন্ত্রী! তার মানে সত্যিকার অর্থেই তিনি আওয়ামীবিরোধী তৎপরতায় লিপ্ত। তাই হয়ত সংবিধান প্রণেতা গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনদের উদ্দেশে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেছেন, দিনের আলোতে খেইলেন; ‘নিশিতে যাইও ফুলে বনে’ এটা করতে যাইয়েন না। সে বয়সটাও আপনাদের নেই। মঙ্গলবার রাজধানীর খাদ্য ভবন চত্বরে বঙ্গবন্ধুর শাহাদাতবার্ষিকীর আলোচনাসভায় তিনি একথা বলেন। মতিয়া বলেন, ‘শব্দটা একটু উল্টাপাল্টা করলে মাকাল হয়ে যায়। আমি ওদিকে যাব না। যাই হোক কামাল হোসেন সাহেবরা নামছেন। কিন্তু জীবনে তো কোন দিন ডাইরেক্ট ইলেকশনে পাস করেননি। একটা সিট দেখান যেখানে উনি ইলেকশনে পাস করে আসবেন। আপনার বিরুদ্ধে বিলাই (বিড়াল) দাঁড়া করে দিব। বিলাই পাস করবে। ষড়যন্ত্রকারীদের বাংলার মাটিতে ঠাঁই হবে না’- যোগ করেন তিনি। কৃষিমন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনা একের পর এক সংগ্রাম করে এগিয়ে যাচ্ছেন। এই সংগ্রামে ইনশাআল্লাহ বাংলার মানুষও শেখ হাসিনার সঙ্গে রয়েছেন। শুধু মানুষ না; আল্লাহও তার সহায়ক। ষড়যন্ত্র হয়েছে একটার পর একটা। কিন্তু তিনি মানুষের ভালর জন্য কাজ করেন। সেজন্য তার জয়রথ এগিয়ে যাচ্ছে। ইনশাআল্লাহ এটা আরও এগিয়ে যাবে। তিনি বলেন ডায়রিয়া, রাতকানা রোগ, গলগ- রোগ বাংলাদেশে এখন আর এ শব্দগুলো খুঁজে পাওয়া যায় না। আসলে রোগের নাম রাতকানাও না, গলগ- না, রোগের নাম ডায়রিয়া না, রোগের নাম ক্ষুধা। ওই ক্ষুধাকে জনগণের শক্তিতে বলিয়ান হয়ে শেখ হাসিনা জয় করেছেন। মতিয়া চৌধুরীর আগে আইনমন্ত্রী এ্যাডভোকেট আনিসুল হক কামাল হোসেনের বিষয়ে মুখ খুলেছেন। আইনমন্ত্রী বলেছেন, ড. কামাল হোসেনরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে সঙ্গে নিয়ে সরকার পতনের অপচেষ্টায় লিপ্ত। এর অংশ হিসেবে ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে নিয়ে কামাল হোসেনরা একটি সভাও করেছেন। গত শুক্রবার আখাউড়া উপজেলার আওয়ামী লীগ আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন তিনি। আইনমন্ত্রী আরও বলেন, স্কুল ছাত্রদের আন্দোলনের ঘটনায় সরকার সকল দাবি মেনে নেয়ার পরও তারা ষড়যন্ত্র করে সরকার পতনের। তিনি বলেন, আমার মোবাইলে এসএমএস দিয়ে বলা হয়েছে- ক্ষমতা তো গেলো, বেরুবেন কোন্দিক দিয়ে! আমাদের ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। আমরা ছোট মন নিয়ে রাজনীতি করি না। আমরা জনগণকে নিয়ে রাজনীতি করি, আমাদের মন বিশাল। আমাদের ভয় দেখাতে আসবেন না। তিনি বলেন, ড. কামাল হোসেনরা সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে নিয়ে জুডিশিয়ালি ক্যুর চেষ্টা করেছিলেন। সেই চেষ্টা নস্যাৎ করা হয়েছে। সব মামলা সাজানো স্টাফ রিপোর্টার ॥ নানা কথাই বলেন বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী। তবে নতুন কথা খুবই কম। পাবেন কোথায়। পুরনো কথাই বার বার ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে বলার চেষ্টা করেন। সত্য-মিথ্যে যাচাইও করেন না। কিংবা বলার পর রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া নিয়েও ভাবেন না তিনি। এটাই হয়ত তার ব্যক্তিগত রাজনৈতিক কালচার। হতেও পারে। অমূলক কিছু নয়। প্রতিদিন সাংবাদিকরা তার দফতরে ভিড় করেন। বার বার অনুরোধ আসে, একটা কিছু বলেন। কিন্তু কি বলবেন তিনি। তাই কোন কিছু বলে মাঠ গরম রাখার হয়ত চেষ্টা করেন রিজভী। সর্বশেষ তিনি বলেছেন, বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে সব মামলা সাজানো। মামলাগুলো রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির এই সিনিয়র যুগ্মমহাসচিব। বৃহস্পতিবার নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন। রিজভী বলেন, অবৈধ সরকারের অন্যায় আর জুলুমের শিকার হয়ে খালেদা জিয়া ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাকে সব অধিকার থেকে দূরে সরিয়ে রাখা হয়েছে। এমনকি তাকে সুচিকিৎসাও দেয়া হচ্ছে না। বাংলাদেশকে এখন জুলুমের গ্যাসচেম্বারে পরিণত করা হয়েছে। কথা হলো মামলা হয়েছে আদালতে। তদন্ত হয়েছে। তদন্তে দোষী সাব্যস্ত হয়েছে আসামি। রায় দিয়েছে আদালত। যার মধ্যে রাজনৈতিক কোন সংশ্লিষ্টতার সুযোগ নেই। তবে মামলা সাজানো বলা হয় কোন্ যুক্তিতে। আইনজীবীদের বক্তব্য, রিজভীর বক্তব্য কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এটি রাজনৈতিক বক্তব; যা আদালত অবমাননার শামিল। তিনি বিভিন্ন সময় আদালতের বিষয়ে মন্তব্য করেন। বিএনপির অনেকে মনে করেন, এ রকম বক্তব্য না দিয়ে আদালতের বিষয় আইনজীবীর মাধ্যমে মোকাবেলা করা উচিত। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের বিপরীতে স্টাফ রিপোর্টার ॥ একি বললেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শকে ধারণ করে ক্ষমতাসীন দল রাজনীতি করছে এটা কারো অজানা থাকার বিষয় নয়। কিন্তু এ ব্যাপারে দ্বিমত এই বাম নেতার। তিনি দাবি করে বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর দল আওয়ামী লীগও এখন তার আদর্শ অনুসরণ করছে না। যদিও সরকারপ্রধান থেকে শুরু করে মন্ত্রী ও নেতাদের বক্তব্যে এমন চিত্র উঠে আসে না। সেলিম বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে ১৫ আগস্ট প্রথমবার হত্যা করা হয়েছে। তার আদর্শ থেকে দেশকে বিচ্যুত করে এখন পর্যন্ত যারা রেখেছে তারা বঙ্গবন্ধুকে দ্বিতীয়বার হত্যা করল। ইতিহাসে এই কথাটা থাকবে।’ বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিপরীত দিকে নিতে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছিল মন্তব্য করে সিপিবির সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম বলেছেন, ‘বর্তমান আওয়ামী লীগও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে এক শ’ আশি ডিগ্রীতে উল্টে গেছে।’ বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বার্ষিকী উপলক্ষে মঙ্গলবার সিপিবি আয়োজিত আলোচনা সভায় দলটির শীর্ষ দুই নেতা এসব কথা বলেন। স্বাধীনতা সংগ্রামে আওয়ামী লীগের পাশে থাকা কমিউনিস্ট পার্টি স্বাধীন বাংলাদেশেও বঙ্গবন্ধুর পাশে ছিল। এক সময় শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১৫ দলীয় জোটেও ছিল সিপিবি। কিন্তু ৯০ এর দশকের পর আওয়ামী লীগ তাদের ঘোষণাপত্র থেকে সমাজতন্ত্র বাদ দিলে তাদের সঙ্গ ছাড়ে বাম দলটি। পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর আওয়ামী লীগের তৎকালীন নেতাদের দোদুল্যমানতার কথা বলেন ডাকসুর ভিপি হিসেবে বঙ্গবন্ধুর সংস্পর্শ পাওয়া সেলিম। তখন নিজে ছাত্রলীগের কয়েকজনকে নিয়ে মিছিল করার প্রস্তুুতি নিয়েছিলেন জানিয়ে সিপিবি সভাপতি বলেন, ‘এর আগেই তিন বাহিনীর প্রধান শপথ নিলেন, এক ঘণ্টার মধ্যে একজন একজন করে মন্ত্রী শপথ নিলেন। পুরো কেবিনেট ভরে গেল আওয়ামী লীগে। আওয়ামী লীগের ভেতরে প্রশ্ন উঠল, বঙ্গবন্ধুকে তো আর ফেরত পাওয়া যাবে না, যাই হোক আল্লাহর রহমতে আওয়ামী লীগের সরকারই বহাল আছে! দায়িত্ব পাওয়াদের অনেকে তখন অন্যদের বলেছিল, তোমরা বেশি বাড়াবাড়ি করিও না, তাহলে এই দায়িত্ব থাকবে না।’ বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের জন্য মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী শক্তিকে দায়ী করে সেলিম বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু যদি মুক্তিযুদ্ধের ধারা থেকে দেশকে উল্টোপথে নিয়ে যেতেন, তাহলে তাকে হত্যা করার প্রয়োজন ছিল না। এই কারণে প্রয়োজন হয় যে, তারা মনে করত এই লোকটা জীবিত থাকলে আবার ঘুরে-ফিরে যত ভুল-ত্রুটি করুক এই ধারা থাকবেই, এই ধারা থেকে বের করে আবার পাকিস্তানী ধারা আনতে পারবে না।’ তিনি বলেন, ‘আমরা বঙ্গবন্ধুর প্রথম হত্যাকা-ের প্রতিবাদ করেছি। দ্বিতীয়বার তার আদর্শকে হত্যা করার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে আবারও যে হত্যা করা হলো, তার বিরুদ্ধেও আমরা আগামীতে প্রতিবাদ চালিয়ে যাব, যা আছে কপালে।’
×