ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কমলাপুরে ফিরতি টিকেট বিক্রি নিয়ে তুমুল হট্টগোল

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ১৭ আগস্ট ২০১৮

কমলাপুরে ফিরতি টিকেট বিক্রি নিয়ে তুমুল হট্টগোল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বড় কোন ঝামেলা ছাড়াই ট্রেনের অগ্রিম টিকেট বিক্রি কার্যক্রম শেষ করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু রিটার্ন টিকেট বিক্রির দ্বিতীয় দিনে কমলাপুরে তুমুল হট্টগোল হয়েছে। হট্টগোলের কারণে প্রায় আধাঘণ্টা পাশের কাউন্টার থেকে টিকেট বিক্রি বন্ধ হয়ে যায়। পরে রেল পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্য সদস্যরা এসে পরিস্থিতি শান্ত করেন। বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার রিটার্ন টিকেট বিক্রির কোন সিদ্ধান্ত ছিল না। তবে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বলছে, এসি চেয়ার ও এসি বার্থ টিকেট নিয়ে জটিলতা হয়েছে। অনেকেই চাহিদা মতো টিকেট না পেয়ে অভিযোগ করেছেন। এদিকে আজ শুক্রবার থেকে ঈদযাত্রা শুরুর কথা থাকলেও বৃহস্পতিবার কমলাপুর স্টেশনজুড়ে ছিল ঘরমুখো মানুষের ভিড়। প্রায় প্রতিটি ট্রেনেই বাড়তি যাত্রী দেখা গেছে। পাশাপাশি ঝুঁকি নিয়ে ট্রেনের ছাদেও যাত্রী সংখ্যা ছিল অনেক। নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের ছাদ ভ্রমণ ঠেতাতে কোন রকম তৎপরতা দেখা যায়নি। এদিকে টিকেট না কেটে ট্রেন ভ্রমণকারীর সংখ্যাও কম ছিল না। বেলা ১১টায় কমলাপুর রেল স্টেশনে গিয়ে দেখা গেছে, ৫ নম্বর কাউন্টারে শত-শত মানুষের লাইন। তারা জানিয়েছেন, অগ্রিম টিকেট কেটেছেন ঠিকই। কিন্তু ফিরতি টিকেট নিয়ে দুঃশ্চিন্তার শেষ নেই। তাই মধ্যরাতেই টিকেটের জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছেন তারা। স্টেশনের তথ্য কেন্দ্র থেকে বলা হয়েছে, ৫ নম্বর কাউন্টার থেকে ফিরতি টিকেট বিক্রি হবে। যাত্রীদের তীব্র হইচইয়ের পর দুপুর ১২টার দিকে কাউন্টার খোলা হয়। এরপর কাউন্টার থেকে জানানো হয়, আজ ফিরতি টিকেট বিক্রি হবে না। আগামীকাল শুক্রবার দেয়া হবে। এ নিয়ে কাউন্টার মাস্টারের সঙ্গে যাত্রীদের কথা কাটাকাটি হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কাউন্টার মাস্টার জানান, ঢাকার বাইরের বিভিন্ন রেল স্টেশন থেকে ফিরতি টিকেট দেয়া হচ্ছে। তবে কেন এখানে সবাই ভিড় করছেন। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী কমলাপুর রেল স্টেশন থেকেও অগ্রিম টিকেট বিক্রির কথা আছে। তখন কাউন্টার মাস্টারের বক্তব্য এ ব্যাপারে আমার কাছে কোন নির্দেশনা আসেনি। যাত্রীরা বললেন, তবে তথ্য কেন্দ্র থেকে কেন নিশ্চিত করা হয়েছিল ৫ নম্বর কাউন্টার থেকে ফিরতি টিকেট দেয়া হবে। এমন আশ্বাসে আমরা রাত জেগেছি। এক পর্যায়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। বন্ধ হয়ে যায় আশপাশের কাউন্টারগুলোর টিকেট বিক্রি। তবে তথ্য কেন্দ্রে কেউ না থাকায় যাত্রীদের অভিযোগের কোন উত্তর পাওয়া যায়নি। পবিত্র ঈদ-উল-আজহা উপলক্ষে ট্রেনের আগাম টিকেট বিক্রি ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। শুক্রবার থেকে ঈদযাত্রা শুরু হবে। অন্যদিকে ঘরে ফেরা মানুষের ঢাকা আগমন নির্বিঘœ করতে বুধবার থেকে শুরু হয়েছে ট্রেনের রিটার্ন টিকেট বিক্রির সেবা কার্যক্রম। কিন্তু ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে অপেক্ষা করার পরও কাক্সিক্ষত এই টিকেটও না পাওয়ার অভিযোগ করছেন অনেকে। স্টেশন সূত্রে জানা যায়, কমলাপুর স্টেশনের ৫ নম্বর কাউন্টার থেকে রিটার্ন টিকেট দেয়া হয়। এছাড়া দেশের নিজ নিজ স্টেশন থেকেও একযোগে দেয়া হচ্ছে টিকেট। বৃহস্পতিবার ২৬ আগস্টের ফিরতি টিকেট দেয়ার কথা ছিল। একইভাবে ১৭, ১৮ ও ১৯ আগস্ট যথাক্রমে পাওয়া যাবে ২৬, ২৭, ২৮ আগস্টের রিটার্ন টিকেট সিডিউল ঘোষণা করে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। সুস্মিতা জানালেন, আমি ভোরে আসি টিকেট সংগ্রহের জন্য। তথ্য কেন্দ্র থেকে জানানো হয়েছে অগ্রিম টিকেট মিলবে পাঁচ নম্বর কাউন্টার থেকে। কিন্তু দুপুরে কাউন্টার খোলার পর বলা হচ্ছে আজ কোন রিটার্ন টিকেট বিক্রি হবে না। একই অভিযোগ করলেন সোহান। তিনি জানান, রাত ২টায় লাইনে দাঁড়ান তিনি। কিন্তু দুপুরে বলা হয় টিকেট দেয়া হবে না। তবে শেষ পর্যন্ত ৫ নম্বর কাউন্টারের যাত্রীরা হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। এ বিষয়ে কমলাপুর স্টেশন ম্যানেজার সিতাংশু চক্রবর্তী বলেন, রিটার্ন টিকেট নিয়ে অভিযোগের কিছু নেই। এ টিকেট দেশের সব রেল স্টেশন থেকে অনলাইনের মাধ্যমে দেয়া হচ্ছে। যেহেতু সব স্টেশন থেকে একযোগে দেয়া হচ্ছে তাই সবাই এসি নিতে চাচ্ছেন, এতে কেউ পাচ্ছেন কেউ পাচ্ছেন না। তিনি বলেন, আমাদের সব ট্রেনে এসি কেবিন সংখ্যা কম। শোভন চেয়ার বেশি। তাছাড়া টিকেট থাকলে কাউকে ফিরিয়ে দেয়ার ইতিহাস নেই। যেহেতু অনলাইনে টিকেট, তাই স্কিনের মাধ্যমে টিকিট প্রত্যাশীরা সব দেখতে পান। আমরা একটি টিকেট থাকা পর্যন্ত বিক্রি করি, এটা সব স্টেশনের ক্ষেত্রে। তাছাড়া কালো বাজারে যেকোন টিকেট বিক্রি বন্ধ করতে পুলিশ, র‌্যাব, রেলওয়ের নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনী, আনসার সদস্য ও গোয়েন্দা সদস্যরা সব সময় নিয়োজিত আছেন।
×