ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ভুটানকে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বার স্বপ্নের ফাইনালে বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ১৭ আগস্ট ২০১৮

ভুটানকে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বার স্বপ্নের ফাইনালে বাংলাদেশ

জাহিদুল আলম জয় ॥ সাফ অনুর্ধ-১৫ মহিলা চ্যাম্পিয়নশিপ ফুটবলে টানা দ্বিতীয়বার স্বপ্নের ফাইনালে নাম লিখিয়েছে বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার রাতে সেমিফাইনালে স্বাগতিক ভুটানকে ৫-০ গোলে হারিয়েছে বাংলার দুরন্ত কিশোরীরা। ভুটানের রাজধানী থিম্পুর চাংলিমিথাং স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের হয়ে গোল করেন দুই বোন ডিফেন্ডার আনাই মগিনি ও ফরোয়ার্ড আনুচিং মগিনি। বাকি তিন গোল করেন স্ট্রাইকার তহুরা খাতুন, অধিনায়ক মারিয়া মান্দা ও বদলি ফরোয়ার্ড সাজেদা আক্তার রিপা। শনিবার শিরোপা ধরে রাখার লক্ষ্যে ফাইনালে ভারতের বিরুদ্ধে খেলবে গোলাম রব্বানী ছোটনের দল। এর আগে প্রথম সেমিফাইনালে নেপালকে ২-১ গোলে হারিয়ে ফাইনালের টিকেট কাটে ভারতীয় মেয়েরা। গত বছর বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত প্রথম আসরেও ফাইনালে খেলেছিল বাংলাদেশ ও ভারতের কিশোরীরা। সেবার ১-০ গোলে জিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলার বাঘিনীরা। আগের ম্যাচগুলোর মতো ভুটানের বিরুদ্ধেও শুরু থেকে আধিপত্য বিস্তার করে খেলতে থাকে বাংলাদেশের মেয়েরা। স্বাগতিকরা শক্তিশালী বাংলাদেশ দলের বিরুদ্ধে রক্ষণাত্মক কৌশল বেছে নেয়। মাঝে মধ্যে পাল্টা আক্রমণে যাওয়াই ছিল তাদের মূলনীতি। কিন্তু বাংলাদেশের মুহুর্মুহু আক্রমণের ঢেউয়ে বেশিক্ষণ নিজেদের জাল অক্ষত রাখতে পারেনি ভুটান। ১৮ মিনিটে চোখ ধাঁধানো গোলে এগিয়ে যায় অতিথি বাংলাদেশ। কর্নার থেকে উড়ে আসা বল জটলা পেরিয়ে আসে ডি বক্সের বাইরে। চলতি বলে দূরপাল্লার শটে গোল করেন ডিফেন্ডার আনাই মগিনি (১-০)। কাক্সিক্ষত গোল পাওয়ার পর আক্রমণের ধার আরও বাড়ান তহুরা, মারিয়ারা। ৩৬ মিনিটে জটলার মধ্য থেকে গোলও করে ছোটনের শিষ্যারা। কিন্তু ফাউলের কারণে গোলটি বাতিল করেন রেফারি। তবে দ্বিতীয় গোলের জন্য বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি। ৩৮ মিনিটে আরেকটি দর্শনীয় গোল উপহার দেয় বাংলার দুরন্ত কিশোরীরা। এবারও ডি বক্সের মাথা থেকে চলতি বলে অনেকটা বাইসাইকেল কিকে ভুটানের জাল কাঁপান প্রথম গোলদাতা আনাই মগিনির বোন আনুচিং মগিনি (২-০)। ৪৩ মিনিটে বাংলাদেশকে তিন নম্বর গোল উপহার দেন দারুণ ফর্মে থাকা ফরোয়ার্ড তহুরা খাতুন। বাংলাদেশের সংঘবদ্ধ আক্রমণ প্রতিহত করতে ব্যর্থ হন ভুটানী গোলরক্ষক। ফসকে যাওয়া বল চলে আসে ডানপ্রান্তে। সেখান থেকে বাড়ানো পাসে টোক দিয়ে লক্ষ্যভেদ করেন তহুরা (৩-০)। বিরতির আগেই পরিষ্কার ব্যবধানে এগিয়ে থেকে ফাইনালে খেলা এক প্রকার নিশ্চিত করে ফেলে বাংলার মেয়েরা। বিরতির পরও স্বভাবজাত আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলতে থাকে তহুরা, মারিয়ারা। অন্যদিকে ম্যাচে ফিরতে ভুটানও আক্রমণ করে খেলার চেষ্টা করে। যে কারণে ম্যাচ উপভোগ্য হয়ে ওঠে। তবে বাংলাদেশের জমাট রক্ষণভাগ ভাঙ্গতে পারেনি স্বাগতিকরা। এখন পর্যন্ত আসরে বাংলাদেশের জালে কেউ বল জড়াতে পারেনি। ভুটানীরা জাল খুঁজে না পেলেও ম্যাচের ৬৯ মিনিটে চার নম্বর গোল আদায় করে নেয় ছোটনের দল। এবারের গোলটিও দৃষ্টিনন্দন। প্রায় মাঝ মাঠ থেকে একক প্রচেষ্টায় ভুটানের কয়েকজন খেলোয়াড়কে কাটিয়ে আনুমানিক ৩৫ গজ দূর থেকে বাঁ পায়ের উড়ন্ত শটে গোল করেন অধিনায়ক মারিয়া মান্দা (৪-০)। ৮৬ মিনিটে স্বাগতিকদের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেন বদলি ফরোয়ার্ড সাজেদা আক্তার রিপা। সংঘবদ্ধ আক্রমণে শামসুন্নাহার জুনিয়রের কাছ থেকে বল পেয়ে ডানপ্রান্ত দিয়ে এগিয়ে যান রিপা। এরপর ডি বক্সের কোণা থেকে প্লেসিং শটে বল জালে জড়িয়ে দেন (৫-০)। দাপুটে জয়ে ফাইনালে ওঠার পর বাংলাদেশ কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন ও অধিনায়ক মারিয়া মান্দা শিরোপা জয়ের প্রত্যয়ের কথা জানিয়েছেন।
×