ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

দেশের হয়ে খেলতে আর্জেন্টাইন ফুটবল এ্যাসোসিয়েশন প্রেসিডেন্টের অনুরোধ, তবে খেলবেন না চলতি বছর

ইচ্ছা থাকলেও অবসর নিতে পারছেন না মেসি!

প্রকাশিত: ০৬:৪৩, ১৬ আগস্ট ২০১৮

ইচ্ছা থাকলেও অবসর নিতে পারছেন না মেসি!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ব্যর্থতার বোতলে বন্দী ছিলেন ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই। বারবার চেষ্টা করেছেন সেই বৃত্ত ভাঙ্গার। কিন্তু পারেননি। লিওনেল মেসি আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে অনুজ্জ্বলই থেকে গেছেন। অথচ এই মেসি প্রশ্নাতীতভাবে বর্তমান বিশ্ব ফুটবলের অন্যতম সেরা তারকা। ক্লাব ফুটবলে বার্সিলোনার হয়ে অবিশ্বাস্য সাফল্যগাঁথার কারণেই এ স্বীকৃতি। অথচ জাতীয় দলের হয়ে অর্জনের ভা-ারটা বরাবরই শূন্য ফুটবলের ক্ষুদে জাদুকরের। এই অপূর্ণতা রেখেই ২০১৬ সালের ২৭ জুন আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় জানিয়েছিলেন ৩১ বছর বয়সী মেসি। পরে দেশের শীর্ষকর্তা ও ভক্তদের অনুরোধে অবসর ভেঙ্গে ফিরেও এসেছেন। এরপর তার কারণেই ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপে খেলতে পেরেছে দিয়াগো ম্যারাডোনার দেশ। কিন্তু বিশ্বকাপের মূলমঞ্চে আবারও অনুজ্জ্বল মেসি। যে কারণে আর্জেন্টিনার বেশ কয়েকজন ফুটবলার অবসর নিয়েছেন। গুঞ্জন ছিল, মেসিও অবসরে যাবেন। বার্সা জাদুকর নাকি সত্যিই জাতীয় দলকে বিদায় জানাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাকে আবারও আটকানো হয়েছে। এবার তাকে জোর করে থামিয়েছেন আর্জেন্টাইন ফুটবল এ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট ক্লাউডিও টাপিয়া। আপাতত আটকাতে পারলেও মেসি চলতি বছর আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে খেলবেন না। অর্থাৎ গুয়েতেমালা ও কলম্বিয়ার বিপক্ষে সেপ্টেম্বরের দু’টি প্রীতি ম্যাচে আর্জেন্টিনা দলে যোগ দিচ্ছেন না মেসি। আর্জেন্টিনার অন্তর্র্বর্তীকালীন কোচ লিওনেল স্কালোনিকে যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন দু’টি প্রীতি ম্যাচে না খেলার বিষয়টি জানিয়ে দিয়েছেন। পুনরায় কবে আবারও জাতীয় দলে ফিরবেন এ সম্পর্কেও নিশ্চিত করে কিছু বলেননি। রাশিয়া বিশ্বকাপে শেষ ষোলো থেকেই বিদায় নিয়েছিল আর্জেন্টিনা। পুরো টুর্নামেন্টে ৩১ বছর বয়সী মেসি নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। আর্জেন্টিনার বিদায়ে দ্বিতীয়বারের মতো মেসির অবসর নিয়েও গুঞ্জন উঠেছিল। বিশ্বকাপের ব্যর্থতায় কোচের পদ থেকে জর্জ সাম্পাওলিকে সরিয়ে স্কালোনিকে অস্থায়ী দায়িত্ব দেয়া হয়। ২০১৬ সালে কোপা আমেরিকার ফাইনালে চিলির কাছে পরাজিত হবার পর মেসি আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারকে বিদায় জানিয়েছিলেন। যদিও দুইমাস পরে নিজের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে আবারও জাতীয় দলে ফিরে আসেন মেসি। এই সুযোগে আর্জেন্টিনার ভারপ্রাপ্ত কোচ দলে মেসি নির্ভরতা কমাতে চান। প্রীতি ম্যাচ দিয়েই হয়তো সেটা শুরু করতে যাচ্ছেন। তবে মেসিকে ছাড়া আর্জেন্টিনা কতটুকু সাফল্য পাবে সেটা ভাবনার বিষয়। পাঁচটি ব্যালন ডি’অর জয়ী এ তারকা দলটির প্রাণভোমরা। তাকে ছাড়া আর্জেন্টিনা দল গঠন করার কথা ভাবা যায় না। অবশ্য জাতীয় দলে মেসির এক যুগের ক্যারিয়ারটা মোটেও সুখকর নয়। ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে হাঙ্গেরির বিরুদ্ধে অভিষেক হয় এই বিস্ময় বালকের। ম্যাচের ৬৩ মিনিটে বদলি খেলোয়াড় হিসেবে বুদাপেস্টের মাঠে নেমেছিলেন। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই লালকার্ড দেখে মেসির অভিষেকটা হয়েছিল কালিমাময়। ২০১৪, ২০১৫ ও ২০১৬Ñ টানা তিন বছর অপবাদ ঘোচানোর সুবর্ণ সুযোগ আসে আর্জেন্টাইন অধিনায়কের সামনে। তিনবারই তীরে এসে তরী ডুবিয়েছেন রেকর্ড সর্বোচ্চ পাঁচবারের ফিফা সেরা ফুটবলার। সর্বশেষ যুক্তরাষ্ট্রে শতবর্ষী কোপা আমেরিকা ফুটবলের ফাইনালে মেসির আর্জেন্টিনা টাইব্রেকারে ৪-২ গোলে হেরেছে চিলির কাছে। ফলে টানা দ্বিতীয়বার শিরোপা জয়ের উৎসব করেছে চিলি। আর আর্জেন্টিনার ২৩ বছরের শিরোপাখরা ঘোচানোর স্বপ্ন স্বপ্নই রয়ে গেছে। ২০১৪ সালে বিশ্বকাপে জার্মানির কাছে হার দিয়ে হতাশার যাত্রা শুরু হয় আর্জেন্টিনার। এরপর ২০১৫ ও ২০১৬ সালে টানা দুটি কোপা আমেরিকার ফাইনালে হারলো দিয়াগো ম্যারাডোনার দেশ। সঙ্গত কারণেই হতাশ গোটা আর্জেন্টিনা দল। দুঃখ, কষ্টের বারতা সবচেয়ে বেশি ছেয়ে গেছে মেসির মানসপটে।
×