ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ভুটানকে হারিয়ে ফাইনালে খেলার প্রত্যাশা মারিয়াদের

প্রকাশিত: ০৬:৪২, ১৬ আগস্ট ২০১৮

ভুটানকে হারিয়ে ফাইনালে খেলার প্রত্যাশা মারিয়াদের

রুমেল খান ॥ কাক্সিক্ষত সাফল্য স্পর্শ করতে দরকার আর মাত্র দুটি ধাপ। তারই প্রথমটি আজ। সন্ধ্যা ৭টায়। সেই ধাপের নাম সেমিফাইনাল। সাফ অনুর্ধ-১৫ মহিলা চ্যাম্পিয়নশিপে আজ বঙ্গকন্যাদের শেষ চারের (দ্বিতীয় সেমিফাইনাল ম্যাচ) পরীক্ষা। প্রতিপক্ষ ভুটান। থিম্পুর চাংলিমিথাং স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে ম্যাচটি। একই ভেন্যুতে এর আগে বিকেল ৪টায় নেপাল মোকাবেলা করবে গত আসরের রানার্সআপ ভারতকে। আগের আসরে ভুটানকে নিজেদের মাটিতে লীগ ম্যাচে ৩-০ গোলে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছিল বাংলাদেশ। এবার একই দলকে তাদেরই মাটিতে সেমিতে হারিয়ে ফাইনালে ওঠার পালা বাংলার বাঘিনীদের। ভুটানকে বয়সভিত্তিক ফুটবলে এর আগেও হারিয়েছে বাংলাদেশ। ২০১৫ সালে এএফসি অনুর্ধ-১৪ গার্লস রিজিওন্যাল চ্যাম্পিয়নশিপে ভুটানকে নাকাল করে বাংলাদেশ অপরাজিত গ্রুপসেরা ও শেষ চারে নাম লিখিয়েছিল। ওই ম্যাচে সানজিদা, মারিয়া ও মৌসুমীর হ্যাটট্রিকে বাংলাদেশ জিতেছিল বিশাল ব্যবধানে, ১৬-০ গোলে। এই আসরে বর্তমান শিরোপাধারী বাংলাদেশ ‘বি’ গ্রুপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে শোচনীয়ভাবে ১৪-০ গোলে হারায় পাকিস্তানকে। দ্বিতীয় ম্যাচে ৩-০ গোলে নেপালকে হারিয়ে অপরাজিত গ্রুপসেরা হয়ে নিশ্চিত করে শেষ চারে খেলা। পক্ষান্তরে ‘এ’ গ্রুপে ভুটান নিজেদের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ৬-০ গোলে উড়িয়ে শুভসূচনা করে। পরের ম্যাচে অবশ্য শক্তিশালী ভারতের কাছে হেরে যায় ১-০ গোলে। হারলেও ক্ষতি হয়নি তাদের। কেননা ঠিকই গ্রুপ রানার্সআপ হয়ে সেমিতে ওঠে তারা। বুধবার যথারীতি সকালে জিমে অংশ নেয় মেয়েরা। এরপর ম্যাচ ভেন্যু চাংলিমিথাং স্টেডিয়ামে গিয়ে হাল্কা অনুশীলন করে। সুখবর হলো এখনও দলে কোন ইনজুরি সমস্যা নেই। সেমিফাইনালে ভুটানকে শক্তিশালী মানলেও বাংলাদেশের কিশোরীদের নিয়ে আত্মবিশ্বাসী ছোটন, ‘তিনি বলেন, ‘ভুটান বাংলাদেশের চেয়ে শক্তিশালী দল। তাছাড়া তারা স্বাগতিক দল। স্থানীয় সমর্থন পাবে। সবকিছু ছাপিয়ে আমরা খেলব। আমাদের সর্বোচ্চটা দিয়ে খেলব এবং জেতার জন্যই খেলব।’ আজকের ম্যাচে ভুটানবধ করবে বাংলাদেশ। দেবে গোল। জিতবে ঠিকই। তবে সেটা কত গোলে, সেটাই হতে পারে প্রশ্ন। বাংলাদেশ দলের গোলরক্ষক রুপনা চাকমার অভিমত, ‘আমি খুবই খুশি। কারণ আমরা নেপালের বিপক্ষে ম্যাচ জিতে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হতে পেরেছি এবং সেমিফাইনালে উঠেছি। সেখানে আমাদের প্রতিপক্ষ স্বাগতিক ভুটান। আমরা নিজেদের সেরাটা দিয়ে ভুটানের বিপক্ষে জয়ের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। সবার কাছে দোয়া চাই যেন চ্যাম্পিয়নশিপ ধরে রাখতে পারি।’ স্ট্রাইকার রেহানা আক্তারের ভাষ্য, ‘গ্রুপ পর্ব পার হয়ে এখন আমরা সেমিফাইনালে। ভুটানের বিপক্ষে নিজেদের শতভাগ উজার করে দিয়ে জিতে ফাইনালে খেলতে চাই। আমার স্বপ্ন এবারের সাফ অ-১৫ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জেতা।’ সোমবার রাতের চাংলিমিথাংয়ে ফুটবল উৎসবে যোগ দেন প্রবাসী বাংলাদেশী দর্শকরাও। তাদের উল্লাসে আরও অনুপ্রাণিত হয়ে খেলে তহুরা, মারিয়ারা। মেয়েদের খেলা দেখতে স্টেডিয়ামে হাজির হন ভুটানে নিযুক্ত বাংলাদেশী রাষ্ট্রদূত জিষ্ণু রায় চৌধুরীও। বাংলার এই ফুটবলাররা একদিন বিশ্বকাপ খেলবে বলেও আশা করেন তিনি। নেপালের বিপক্ষে বড় জয় না পাওয়ায় কিছুটা আক্ষেপ আছে বাংলার বাঘিণীদের। তবে সব ভুলে সেমিফাইনালের জন্য তৈরি হতে চায় তারা। তহুরা খাতুনের ভাষ্য, ‘খেলার শেষ পর্যন্ত সবাই চেষ্টা করেছে সর্বোচ্চটা দেয়ার।’ আঁখি খাতুনের প্রতিক্রিয়া, ‘ম্যাচটা জিতে গেছি। এটার চিন্তা শেষ। এখন আমাদের চিন্তা সামনের ম্যাচটা ভাল করার।’ শুরুতে মানসিকভাবে কিছুটা পিছিয়ে থাকলেও, বাংলাদেশ তাদের স্বাভাবিক খেলাটা খেলেই জয় তুলে নিয়েছে। নেপালের বিপক্ষে জয়ের পর এমনটাই জানিয়েছেন বাংলাদেশ কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন। ফিটনেসের দিক থেকেও নেপালের তুলনায় বাংলাদেশ এগিয়ে ছিল বলে মনে করেন এই কোচ, ‘আমাদের ম্যাচটি জেতার দরকার ছিল। তারা নব্বই মিনিট একইভাবে খেলেছে। আমি মনে করি নেপাল এবং আমাদের মেয়েরা প্রথমার্ধে সমানতালে খেলেছে। দ্বিতীয়ার্ধে আমাদের মেয়েদের ফিটনেসের কাছে নেপাল তাদের খেলাটা ধরে রাখতে পারেনি। যখনই তাদের ফিটনেসে সমস্যা হয়েছে তখনই তারা মনোযোগ হারিয়েছে এবং আমাদের মেয়েরা সেই সুযোগ কাজে লাগিয়েছে।’ এদিকে সেমিফাইনালে ভুটানকে শক্তিশালী মানলেও বাংলাদেশের কিশোরীদের নিয়ে আত্মবিশ্বাসী ছোটন। বাংলাদেশ দল ॥ মাহমুদা আক্তার, রুপনা চাকমা, রুপা আক্তার, আঁখি খাতুন, আনাই মগিনি, নাজমা, নিলুফা ইয়াসমিন নীলা, ইলামনি, শাহেদা আক্তার রিপা, আনুচিং মগিনি, রেহানা আক্তার, মারিয়া মান্দা, মনিকা চাকমা, লাবণী আক্তার, তহুরা খাতুন, মুন্নী আক্তার, শামসুন্নাহার, সোহাগী কিসকু, ঋতুপর্ণা চাকমা, সাজেদা খাতুন, শামসুন্নাহার জুনিয়র, রোজিনা আক্তার, নওসুন জাহান।
×