ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ ॥ জাতীয় শোক দিবসে জঙ্গী সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে দৃঢ় উচ্চারণ

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ১৬ আগস্ট ২০১৮

ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ ॥ জাতীয় শোক দিবসে জঙ্গী সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে দৃঢ় উচ্চারণ

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ ৪৩ বছর হয়ে গেল। মৃত্যুঞ্জয়ী মহানায়ক জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে এতটুকু ভোলেনি কৃতজ্ঞ বাঙালী জাতি। তাঁর প্রয়াণ দিবসে বুধবার যেন শোকস্তব্ধ ছিল দেশের সব প্রান্তর। শোকাচ্ছন্ন নীরবতায় থমকে গিয়েছিল গোটা দেশ। ঘাতকরা বঙ্গবন্ধুর নশ্বর শরীর কেড়ে নিলেও তাঁর অবিনশ্বর চেতনা ও আদর্শ যে মৃত্যুঞ্জয়ী, ঘাতকের সাধ্য ছিল না ইতিহাসের সেই মহানায়কের অস্তিত্বকে বিনাশ করেÑ কৃতজ্ঞ বাঙালী জাতি স্বাধীনতার প্রাণপুরুষ বঙ্গবন্ধুর প্রতি সর্বজনীন শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে প্রতি বছর তারই জানান দেয়। শেখ মুজিব বাড়ন্ত বটবৃক্ষের মতো ধাপে ধাপে বাঙালীর সামনে উদ্ভাসিত হয়েছিলেন। মৃত্যুর চার দশক পরও সমানভাবেই রয়েছেন সমুজ্জ্বল। শোককে শক্তিতে পরিণত করে নতুন শপথে বলীয়ান বাঙালী জাতি ৪৩ বছর আগের ভয়াল এক রাতের শোকাবহ স্মৃতি গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করে। এবার শ্রদ্ধা জানাতে আসা শোকার্ত মানুষের স্রোত থেকে প্রধান তিনটি দাবি উচ্চারিত হয়েছে সর্বত্র। তা হলো জঙ্গীবাদ-সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ, বঙ্গবন্ধুর হত্যার নেপথ্য ষড়যন্ত্রকারীদের খুঁজে বের করে বিচারের মুখোমুখি করতে জাতীয় কমিশন গঠন এবং বিদেশে পালিয়ে থাকা বঙ্গবন্ধুর খুনীদের দেশে ফিরিয়ে এনে ফাঁসির রায় কার্যকর করা। গোটা জাতি বিনম্র শ্রদ্ধায় বঙ্গবন্ধুকে স্মরণের পাশাপাশি তাঁর স্বপ্নের অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ ও ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত সোমবার বাংলা প্রতিষ্ঠার দৃঢ় শপথও নিয়েছে। এই দৃঢ় প্রত্যয় আর অঙ্গীকারের মধ্য দিয়ে পুরো জাতি বুধবার স্মৃতিভারাতুর হয়ে এবং বিনম্র চিত্তে শোক ও শ্রদ্ধায় স্মরণ করেছে স্বাধীনতার মহানায়ক, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। সম্পূর্ণ রাষ্ট্রীয় যথাযোগ্য মর্যাদায় ও নানা আনুষ্ঠানিকতায় দেশব্যাপী পালিত হয় জাতির পিতার ৪৩তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস। প্রাণের অর্ঘ্যে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর পাশাপাশি সাম্প্রতিক একাত্তরের পরাজিত শক্তির দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত, জঙ্গীবাদ-সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধ ও নির্মূল করে আরও উন্নত দেশ গড়ার শপথও নিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শুধু ব্যক্তি নন, তিনি একটি আদর্শ। ইতিহাসের স্রষ্টা। তাঁর আদর্শ ছড়িয়ে পড়েছে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে। বঙ্গবন্ধু মৃত্যুঞ্জয়ী। তাই ব্যক্তি বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করলেও তাঁর আদর্শকে যে হত্যা করা সম্ভব হয় না তা আবারও চোখে আঙ্গুল দিয়ে পঁচাত্তরের ঘাতক ও নেপথ্যের ষড়যন্ত্রকারীদের জানিয়ে দিল জাতি। আদর্শিক বঙ্গবন্ধু যে চিরঞ্জীব তা টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া, দেশের পথে-প্রান্তরে শ্রদ্ধা জানাতে আসা শোকার্ত মানুষের অস্বাভাবিক ঢল আবারও তা প্রমাণ করেছে। বাঙালী জাতি এতটুকু ভোলেননি বজ্রকণ্ঠের এই মহামানবকে। যিনি জাতিকে উপহার দিয়েছিলেন স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ, লাখো শহীদের রক্তস্নাত লাল-সবুজের পতাকা। শুনিয়েছিলেন সেই অমর বাণীÑ ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ ধানম-ির ৩২ নম্বর ছিল আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন ও নানা শ্রেণী-পেশাসহ সর্বস্তরের শোকার্ত মানুষের ঢল। শহরজুড়ে দেয়ালে দেয়ালে শোকের পোস্টার। সর্বত্র শোকের তোরণ, কালো পতাকা, বঙ্গবন্ধুর বজ্রকণ্ঠের সেই ৭ মার্চের ভাষণ ও স্মৃতি জাগানিয়া গানে বুধবার রাজধানীসহ পুরো দেশের পরিবেশটাই পাল্টে গিয়েছিল। বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ আগস্টের শহীদদের স্মরণের পাশাপাশি দেশের সর্বত্র শোকার্ত মানুষের কণ্ঠে ছিল অভিন্ন সেøাগান- ‘কে বলেছে মুজিব নাই, মুজিব আছে সারা বাংলায়’, মুজিবের বাংলায় জামায়াত-শিবির-জঙ্গীদের ঠাঁই নাই’ ইত্যাদি। জাতির পিতার শাহাদাতবার্ষিকী জাতীয় শোক দিবস পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় পালিত হয়েছে। সকালে দেশ ও জাতির পক্ষ থেকে ধানম-ির ৩২ নম্বরে জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের মাধ্যমে শোকের কর্মসূচী সূচনা করেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পুষ্পস্তবক অর্পণের পর সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল দল গার্ড অব অনার প্রদান করে। এ সময় বিউগলে বেজে ওঠে করুণ সুর। বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পর সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী। পরে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ আগস্টের শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে তাঁরা মোনাজাত করেন। এ সময় বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ রেহানাসহ বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্য, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, সংসদ সদস্য, ১৪ দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ, তিন বাহিনী প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন। বিদেশে থাকায় প্রাণে বেঁচে যাওয়া বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় সব হারানোর বেদনার্ত অশ্রু সবাইকে আবেগতাড়িত করে। সরকারীভাবে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর দলের নেতাদের নিয়ে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও জাতির জনকের প্রতি শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পর জাতীয় সংসদের স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। নির্বাচন কমিশনের পক্ষে শ্রদ্ধা জানান নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ছোট বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ধানম-ি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক স্মৃতিবিজড়িত বাড়ির ভেতরে যান। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের কালরাতে যে সিঁড়িতে বঙ্গবন্ধুর মতো মহাপুরুষের নিথর দেহ পড়ে ছিল, সেখানে ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে ও নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে-ভয়াল ওই রাতের শোকাবহ স্মৃতি স্মরণ করেন বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা। আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ এই বাঙালীর। পরে ওই ভবনের একটি কক্ষে বসে কিছু সময় পবিত্র কোরান তেলাওয়াত করেন প্রধানমন্ত্রী। প্রায় আধা ঘণ্টা পর বঙ্গবন্ধু জাদুঘর থেকে বোন শেখ রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে বনানী কবরস্থানে যান শেখ হাসিনা। সেখানে মা, ভাইসহ পরিবারের অন্য সদস্যদের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। ১৫ আগস্ট শহীদদের প্রতিটি কবরে গোলাপের পাপড়ি ছিটান শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানাসহ আওয়ামী লীগ নেতারা যান গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায়। সেখানে জাতির পিতার সমাধিতে প্রধানমন্ত্রী পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন। এছাড়া টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে ফুল দেয়ার পর মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে অংশ নেন তারা। পরে সেখানে বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। মোনাজাতে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী। মোনাজাতে দেশ-জাতি এবং সমগ্র মুসলিম উম্মাহর শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করা হয়। এ দুটি স্থানেও তিন বাহিনীর একটি সুসজ্জিত দল বঙ্গবন্ধুর প্রতি গার্ড অব অনার প্রদান করে। বাদ আছর বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে মহিলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আয়োজিত মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধুর মাজার, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ও বনানীতে ১৫ আগস্টে শহীদদের কবরে শ্রদ্ধা জানাতে আসা শোকার্ত মানুষের স্রোত অতীতের সকল রেকর্ডকে যেন এবার ছাড়িয়ে গিয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর বাসভবন প্রাঙ্গণ এবং টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর মাজারস্থল হয়ে উঠেছিল শোকার্ত লাখো মানুষের মিলন মোহনা। দিনভর কৃতজ্ঞ বাঙালীর শ্রদ্ধা আর ভালবাসার পুষ্পাঞ্জলিতে ভরে উঠেছিল ধানম-ির ৩২ নম্বর জাতির পিতার প্রতিকৃতি, টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর মাজার এবং বনানীস্থ ১৫ আগস্টের শহীদদের সমাধিস্থল। অগণিত মানুষের হৃদয়ের আবেগ, প্রগাঢ় শ্রদ্ধা আর ১৯৭৫ সালের সেই ভয়ঙ্কর কালরাতের বেদনাবিধুর স্মৃতিচারণ করেছে জাতি। দল ও মত পার্থক্যের উর্ধে উঠে এবার অনেকটা সর্বজনীনভাবে জাতীয় শোক দিবস পালন করা হয়। শুধু আওয়ামী লীগই নয়, সারাদেশের স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানসহ স্বাধীনতায় বিশ্বাসী প্রতিটি মানুষ, সংগঠন এবার বিস্তারিত কর্মসূচীর মাধ্যমে স্মরণ করছে মহান স্বাধীনতার স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। দিনব্যাপী শহরজুড়ে মাইকে প্রচারিত হয়েছে কোরান তেলোয়াত এবং এর ফাঁকে ফাঁকে দেশাত্মবোধক ও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি জাগানিয়া গান। এছাড়া মাইকে উচ্চারিত হয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর তেজোদীপ্ত বলিষ্ঠ কণ্ঠের সেই আহ্বান : ‘ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোল, যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে প্রস্তুত থাক... এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ এবার জাতীয় শোক দিবসের দলীয় আয়োজনকে বহুগুণে ছাপিয়ে গিয়েছিল গণমানুষের আয়োজন। শহরের প্রত্যেক পাড়া মহল্লায়, সড়কের পাশ দিয়ে যেতে যেতে চোখে পড়েছে খানিক পরপরই কালো ব্যানার, কালো পতাকা উড়িয়ে চলছে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল। দুস্থদের মধ্যে খাবার বিতরণ। বুধবার সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সব সরকারী, আধা সরকারী, স্বায়ত্তশাসিত ভবন ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করে তোলা হয়। বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশনসমূহেও জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বুধবার ছিল সরকারী ছুটি। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধু ভবন ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারা দেশে দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিত ও কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আলোচনা সভা, জাতীয় শোক দিবসের সঙ্গে তাৎপর্যপূর্ণ কবিতা পাঠ, রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, হামদ্ ও নাত প্রতিযোগিতা ও দোয়ার আয়োজন করা হয়। বাদ জোহর সারাদেশে সকল মসজিদ, মন্দির, গির্জা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়। দিনভর চলেছে কাঙালী ভোজ। দেশের সকল সরকারী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও বিশেষায়িত হাসপাতালসহ জেলা, উপজেলা হাসপাতাল এবং ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা দেয়া হয়। মা-ভাইয়ের সমাধি পাশে শোকবিহ্বল বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা ॥ ফুলে ফুলে ছেয়ে যায় বনানীর কবরস্থানের সারি বাঁধা ১৮টি কবর। এসব কবর ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে নরপিশাচ ঘাতকচক্রের নির্মম বুলেটে ক্ষত-বিক্ষত হয়ে নিহত বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, শিশুপুত্র রাসেলসহ পরিবারের অন্য সদস্যদের। ৪৩ বছর আগে ঘাতকদের বন্দুকের নলের মুখে স্বজনদের চোখের জলে শেষ বিদায়টুকু দিতে পারেননি বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা। বুধবার সকালে মা-ভাইদের কবরে গিয়ে চোখের জল থামিয়ে রাখতে পারেননি একসঙ্গে সব স্বজনহারা শোকবিহ্বল শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। অশ্রুসিক্ত নয়নে তাঁরা প্রিয় স্বজনদের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়ে মোনাজাত ও ফাতেহা পাঠ করেন। জাতির পিতার এই কন্যা নিজ হাতে মুঠো মুঠো ভালবাসার ফুল ছড়িয়ে দেন প্রিয় স্বজনদের কবরে। নেতাকর্মী, মন্ত্রী-এমপিদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বনানী কবরস্থানে গেলে সেখানে এক অন্যরকম আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। সকাল থেকেই সেখানে চলছিল শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনায় কোরানখানি ও দোয়া মাহফিল। প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে একে একে আওয়ামী লীগ ও বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা শহীদদের কবরে শ্রদ্ধা জানান। ৩২ নম্বরে শোকার্ত মানুষের ঢল ॥ ধানম-ি ৩২ নম্বরে অবস্থিত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানাতে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন ও নানা শ্রেণী-পেশার মানুষ ও বিশিষ্টজনসহ সর্বস্তরের শোকার্ত মানুষের ঢল নামে। ভোর থেকেই লোকে লোকারণ্য হয়ে যায় পুরো এলাকা। কালো ব্যানার হাতে ও বুকে কালোব্যাজ ধারণ করে নারী-পুরুষ এবং শিশু কিশোরসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সর্বস্তরের মানুষ বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে জাতির পিতাকে স্মরণ করে। বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদনের পর স্থানটি উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। এরপর বিকেল পর্যন্ত লাখ লাখ মানুষ সারিবদ্ধভাবে মিছিল নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, এ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, ড. আবদুর রাজ্জাক, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আহমদ হোসেন, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, এনামুল হক শামীম, ড. হাছান মাহমুদ, ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সবুর, দেলোয়ার হোসেন, ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সর্বস্তরের মানুষ সকাল থেকে দুপুর গড়িয়ে বিকেল পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান। বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করলেন যারা ॥ বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সাধারণ মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য স্থানটি উš§ুক্ত করে দেয়া হয়। স্পীকারের পর স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের নেতৃত্বে ১৪ দলের শীর্ষ নেতারা জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর সমাজকল্যাণ মন্ত্রী রাশেদ খান মেননের নেতৃত্বে ওয়ার্কার্স পার্টি, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর নেতৃত্বে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ, আওয়ামী যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুব মহিলা লীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগ, কৃষক লীগ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, তাঁতি লীগ, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ, ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা এবং ছাত্রলীগ মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের নেতারা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ ছাড়া বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানÑ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় প্রেসক্লাব, রিপোর্টার্স ইউনিটি, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা শহীদ পরিবার, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতি, বাংলাদেশ বার কাউন্সিল, বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ, এ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়, ঢাকা আইনজীবী সমিতি, বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড (বিআরডিবি), মহিলা শ্রমিক লীগ, মৎস্যজীবী লীগ, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, যুব উন্নয়ন অধিদফতর, ঢাকা সিটি করপোরেশন শ্রমিক-কর্মচারী লীগ, গণপূর্ত শ্রমিক লীগ, মোটরচালক লীগ, রিক্সা-ভ্যান শ্রমিক লীগ, জাতীয় বিদ্যুত শ্রমিক লীগ, মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদ, মুক্তিযোদ্ধা সমন্বয় পরিষদ, বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদফতর, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ফিল্ম আর্কাইভ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি, সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব পরিষদ, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, বাংলা একাডেমি, গণগ্রন্থাগার অধিদফতর, জাতীয় জাদুঘর, নজরুল ইনস্টিটিউট ও শিশু একাডেমি। আরও শ্রদ্ধা জানানÑ খেলাঘর, বাংলাদেশ বেতার, জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউট, বেতার কর্মকর্তা-কর্মচারী কল্যাণ সমিতি, আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী, বিনিয়োগ বোর্ড, শিল্প গবেষণা পরিষদ, পলিটেকনিক শিক্ষক পরিষদ, ঢাকা আইনজীবী সমিতি, তথ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী, জাতীয় মহিলা সংস্থা, সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, বেসরকারী মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, জাতীয় কবিতা পরিষদ, জাতীয় গীতিকবি পরিষদ, যুব ইউনিয়ন, মুক্তিযোদ্ধা ফাউন্ডেশন, ছাত্র ইউনিয়ন, শেখ রাসেল শিশু সংসদ, বাংলাদেশ ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, কৃষি ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, রেলওয়ে শ্রমিক লীগ, ঢাকার টুঙ্গিপাড়া সমিতি, হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু কৃষিবিদ পরিষদ, আবদুস সামাদ আজাদ ফাউন্ডেশন, সড়ক পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্যপরিষদ, ঢাকা সড়ক পরিবহন সমিতি, টিএ্যান্ডটি শ্রমিক ফেডারেল ইউনিয়ন, শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত স্মৃতি পরিষদ, শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদ, আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, টেলিযোগাযোগ শ্রমিক ইউনিয়ন, গোপালগঞ্জ জেলা সমিতি, খ্রিস্টান এ্যাসোসিয়েশন, বৌদ্ধ ছাত্র সংসদ, শহীদ মনসুর আলী মেডিক্যাল কলেজ, ডিপ্লোমা নার্সেস এ্যাসোসিয়েশন, সেন্টার ফর মেডিক্যাল এডুকেশন, সনাতন আইনজীবী কল্যাণ পরিষদ, চিলড্রেন্স ভয়েস, শ্যামলী ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট টিবি হাসপাতালসহ বিভিন্ন দল ও সংগঠন। বঙ্গভবনে মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত ॥ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৩তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ বুধবার বঙ্গভবনের দরবার হলে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করেন। এতে রাষ্ট্রপতিসহ তার পরিবারের সদস্যগণ, বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তা এবং বঙ্গভবনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশ নেন। দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাসহ নিহত বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্য, মহান মুক্তিযুদ্ধে সর্বোচ্চ আত্মত্যাগকারী শহীদ মুক্তিযোদ্ধা এবং বিভিন্ন সময়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নিহতের আত্মার শান্তি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। বঙ্গভবন জামে মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা মুহাম্মদ সাইফুল কবির মোনাজাত পরিচালনা করেন। এর আগে বঙ্গভবনের দরবার হলে চলচ্চিত্র প্রকাশনা অধিদফতরের পরিচালনায় বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের ওপর একটি প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়। এদিকে সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়। মঙ্গলবার রাত ১২টা ১ মিনিটে প্রথমে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন প্রেসক্লাবের সভাপতি মুহাম্মদ শফিকুর রহমান, বিএফইউজে সভাপতি মোল্লা জালাল, জাফর ওয়াজেদসহ ক্লাবের সিনিয়র সদস্যরা। বুধবার সকাল ১০টায় শ্রদ্ধা নিবেদন করেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, বিএফইউজের সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল, বাসসের প্রধান সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমীন, আজিজুল ইসলাম ভূঁইয়া প্রমূখ। জাতীয় শোক দিবসে জাতীয় প্রেসক্লাবের রক্তদান কর্মসূচী এবং বঙ্গবন্ধুর ওপর শিশুদের লেখা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতারও আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু শিশুদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন। এদিকে, জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বুধবার দেশের ৭১ হাজার ১৯টি স্থানে আলোচনা সভা, কোরানখানি ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করে ইসলামিক ফাউন্ডেশন। শোক দিবস উপলক্ষে নানা কর্মসূচী পালন করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। বিজিবির সদর দফতরসহ সব রিজিউন, প্রতিষ্ঠান, সেক্টর ও ইউনিটে কোরান খতম, বিশেষ মোনাজাত, বঙ্গবন্ধুর জীবনের ওপর আলোচনা সভা ও প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শনী হয়। বেলা ১১টায় পিলখানার বিজিবি সদর দফতরের বীর উত্তম ফজলুর রহমান খন্দকার মিলনায়তনে আলোচনা সভা ও প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোঃ সাফিনুল ইসলাম। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে প্রধান কার্যালয়ে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে রিহ্যাব। মাহফিল শেষে ২ হাজার দুস্থ মানুষের মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়। আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন রিহ্যাবের প্রেসিডেন্ট আলমগীর শামসুল আলামিন, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন এমপি ও প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট লিয়াকত আলী ভুইয়া। অনুষ্ঠান উপস্থাপন করেন ভাইস প্রেসিডেন্ট-২ আবৃত্তিকার আহকাম উল্লাহ। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে যে পথে ঘাতকের ট্যাঙ্ক জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে গিয়েছিল, সেই পথে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা আলোর মিছিল করেছেন। মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউয়ের টিএন্ডটি মাঠ সংলগ্ন বঙ্গবন্ধু চত্বর থেকে আলোর মিছিলটি শুরু হয়। এটি বঙ্গবন্ধুর ৩২ নম্বর বাসভবনে গিয়ে শেষ হয়। ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’ কেন্দ্রীয় কমিটি আয়োজিত আলোর মিছিলের আগে সংক্ষিপ্ত আলোচনাও অনুষ্ঠিত হয়। শ্যামলী ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট টিবি হাসপাতালে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে এক ব্যতিক্রমী কর্মসূচী পালন করা হয়। হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ আবু রায়হানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা একাত্তরের রণাঙ্গনের জনযুদ্ধ এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর অমিততেজী নেতৃত্বের কথা চিকিৎসক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শোনান।
×