ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

আজহার মাহমুদ

মহামিলনের ঈদে আত্মকেন্দ্রিক আনন্দ!

প্রকাশিত: ০৩:৪৬, ১৬ আগস্ট ২০১৮

মহামিলনের ঈদে আত্মকেন্দ্রিক আনন্দ!

ঈদ মানে আনন্দ আর হাসি-খুশির মহামিলনমেলা। ঈদের সময় সকলেই একটু কাজকর্ম শেষ করে পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজনসহ সকলের সঙ্গে সময় কাটায়। কিন্তু দুঃখের বিষয় এখন আর আগের সেই ঈদ নেই। এখন আর আত্মীয়-স্বজনদের কাছে পাওয়া যাই না। আগে ঈদের সময় সকলেই গরু কিনতে একসঙ্গে হাটে যেতাম, সকলেই একটা গরু নিয়ে কোরবানি দিত, কিন্তু সময় যেতে যেতে সকলের মানসিকতাও পরিবর্তন হয়ে গেছে আজ। সকলেই যার যার মতো আলাদা আলাদা গরু নিয়ে আলাদা আলাদাভাবে ঈদ করে। এখন ঈদ মানে যেন মাংস খাওয়া। এছাড়া কোন সুখ ঈদে দেখি না। সকলেই যেন এখন লোক দেখানোর জন্য গরু কিনে। কোরবানির উদ্দেশ্যে কয়জন গরু“কিনে তা নিয়েও আমার প্রশ্ন। আগে দেখতাম কোরবানি দেয়ার পর সকলেই সেটা বসে ভাগ করে যার যার ভাগ মতো মাংস দিয়ে গরিব, মিসকিন, এতিম শিশুদের মাংস বিলিয়ে দিত। আর এখনকার চিত্র পুরোটাই ভিন্ন। এখন বহু লোক যার যার গরু জবাই করে মাংসগুলো নিয়ে ঘরে তালা দিয়ে মাংস সব ফ্রিজে রেখে দেয়। হ্যাঁ। এটাই এখনকার চিত্র। কিন্তু ইসলাম ধর্মে এমনটা নেই। তবুও আজকাল এমনটাই বেশিরভাগ দেখা যায়। দেখা যায় একটা গরুর ভাগ সম্পর্কেও অনেকে অবগত নেই। ধর্মীয় বিধি অনুযায়ী ভাগ করে কোরবানিও দেয় না অনেক মানুষ। অথচ সকলেই হাটে গিয়ে প্রচুর টাকা খরচ করে পশু ক্রয় করে কোরবানি দিচ্ছে। আদৌ কি তাদের কোরবানি শরিয়ত মোতাবেক হচ্ছে? যাই হোক যেখানে ধর্মীয় বিধিনিষেধ মেনে চলা না হয় এবং লোক দেখানো কোরবানি করা হয় সেখানে সুখ কিভাবে আসবে। আনন্দ কতটুকুই আর হবে। তাছাড়া গ্রামের আর শহরের ঈদেও বিস্তর তফাৎ। গ্রামে সকলে একসঙ্গে কোরবানি না করলেও সবাই সবার বাসায় যাওয়া যায় এবং একজনের সঙ্গে অন্যজনের আন্তরিকতাও বেশি। শহরে এটা খুব কম দেখা যায়। যার যার দালানে মাংস নিয়ে উঠে যাওয়া ছাড়া আর কাজ নেই। আর গ্রামে সকলেই একটা মাঠে গরু“জবাই করে এবং সবাই দেখে এবং একটা অন্যরকম পরিবেশ তৈরি হয়। যা শহরে কখনও দেখা যায় না। গ্রামে ঈদের আমেজ যতদিন থাকে শহরে ততদিন থাকে না। শহরে কারও খবর কেউ নেই না। গ্রামে পাড়া-প্রতিবেশী সবাইকে মাংস দিতে হয় এবং সকলেই দেয়। যা শহরে দেখা যায় না। এসব কিছু বিবেচনা করলে গ্রামে যা আনন্দ আছে শহরে তেমন নেই। আর সামগ্রিকভাবে বিবেচনা করলে আগের চেয়ে যোজন যোজন কমছে ঈদের আনন্দ। এখন আর সেই আনন্দ নেই। আগের সেই আনন্দ আজও স্মৃতি হয়ে নাড়া দেয় হৃদয়ে। কিন্তু সময় এবং পরিস্থিতি সেই আনন্দ কেড়ে নিচ্ছে এখন। ওমরগনি এমইএস বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, চট্টগ্রাম থেকে
×