স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ পেস বোলারদের জন্য বয়স খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ৩০-৩৫ এর পর ক্রমাগত ইনজুরির কাছে হার মেনে অনেক গ্রেট ফাস্ট বোলারের ক্যারিয়ারও শেষ হয়ে যেতে দেখা গেছে। জেমস এ্যান্ডারসন সেখানে ব্যতিক্রম। বয়স ৩৬ হয়ে গেছে কিন্তু বোলিংয়ের ধার এতটুকু কমেনি। আরও বেড়েছে। লর্ডসে ভারতের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে ৯ উইকেট নিয়ে ইংল্যান্ডের জয়ে রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। আগেই র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ থাকা এ্যান্ডারসন কাগিসো রাবাদার সঙ্গে রেটিং পয়েন্ট আরও বাড়িয়ে নিয়েছেন। এই বয়সেও শিষ্যের এমন পারফর্মেন্সে মুগ্ধ প্রধান কোচ ট্রেভর বেইলিস মনে করেন ৪০ বছর পর্যন্ত এভাবেই চালিয়ে যাবেন এ্যান্ডারসন, ‘ও শুধুই ভাল নয়, যখন কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেয় তখন সে বিশ্বের সেরা। বিশেষ করে এই কন্ডিশনে অনেক বোলার আছে যারা ৩০-৪০ এর মাঝামাঝি বয়সে খেলা ছেড়ে দেয়া শুরু করে। যারা অনেক বেশি ভাল তারাই কেবল খেলা চালিয়ে যায়। এ্যান্ডারসনও দেখাচ্ছে যে, সে কতটা ভাল’।
লর্ডস টেস্টের প্রথম ইনিংসে স্কোর বোর্ডে নাম লেখানো এ্যান্ডারসনের বোলিং বিশ্লেষণ ১৩.২-৫-২০-৫, দ্বিতীয় ইনিংসে ১২-৫-২৩-৪। ম্যাচে ৪৩ রান দিয়ে শিকার সংখ্যা ৯ উইকেট। এক নম্বর দল ভারতের বিপক্ষে ইনিংস ও ১৫৯ রানের বিশাল জয়ে পাঁচ টেস্টের সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে গেছে স্বাগতিক ইংল্যান্ডও। এ্যান্ডারসনের পারফর্মেন্সের প্রতিফলিত হয়েছে সবশেষ প্রকাশিত আইসিসি র্যাঙ্কিং। ইংল্যান্ড ইতিহাসের সর্বোচ্চ টেস্ট উইকেটশিকারি ক্যারিয়ারসেরা ৯০৩ রেটিং পয়েন্ট অর্জন করেছেন। ১৯৮০ সালে ইয়ান বোথামের পর এই প্রথম কোন ইংলিশ বোলার ৯০০ রেটিং ছুঁলেন। এ্যান্ডারসনের টেস্ট উইকেট সংখ্যা এখন ৫৫৩। এই ম্যাচেই লর্ডসে ১০০ উইকেট পূর্ণ করে ইতিহাসের প্রথম কোন পেসার হিসেবে একই ভেন্যুতে শিকারের সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েছেন। সর্বোপরি ফাস্ট বোলার হিসেবে সর্বোচ্চ টেস্ট ক্রিকেটের সর্বাধিক উইকেটশিকারি গ্লেন ম্যাকগ্রাকে ছুঁতে এ্যান্ডারসনের প্রয়োজন আর মাত্র ১০টি উইকেট।
যা ফর্মে আছেন তাতে ভারতের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের সিরিজের বাকি তিন টেস্টেই যে তিনি অস্ট্রেলিয়ান গ্রেটকে ছাড়িয়ে যাবেন, তা বলাই যায়। এ্যান্ডারসন কাঁধের চোটের কারণে ভারত সিরিজের আগে ছয় সপ্তাহ বিশ্রামে ছিলেন। গত শুক্রবার জানিয়েছেন, তিনি নিজেকে বয়স্ক অনুভব করেন না এবং যতদিন সম্ভব খেলা চালিয়ে যাবেন, ‘আমার বয়স নিয়ে আমি কখনও ভাবি না। বলব না ২৮, তবে নিজেকে ৩২ বছর বয়সী মনে হয় আমার।’ বিলিসও মনে করেন, এ্যান্ডারসন যতদিন ফিট থাকবেন খেলা চালিয়ে যাবেন, ‘গত ১২-১৮ মাস ধরে সে কাঁধের সমস্যায় ভুগছে। তবে এই মুহূর্তে তাকে অনেক ভাল মনে হচ্ছে আমার। যতদিন পর্যন্ত সে শরীর ফিট রাখবে সে কেন আরও তিন-চার বছর খেলবে না।’ লর্ডসে দ্বিতীয় ইনিংসে নিজের প্রথম শিকারের মধ্য দিয়ে টেস্ট ইতিহাসের প্রথম কোন পেসার হিসেবে একই ভেন্যুতে ১০০ উইকেট শিকারের অনন্য নজির স্থাপন করেন এ্যান্ডারসন।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: