ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

যুবলীগের আলোচনা সভায় মতিয়া চৌধুরী

ড. কামালসহ অনেকেই গর্ত থেকে বের হয়েছেন

প্রকাশিত: ০৫:১৪, ১৫ আগস্ট ২০১৮

  ড. কামালসহ অনেকেই গর্ত থেকে বের হয়েছেন

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের ভূমিকার সমালোচনা করে বলেছেন, আগস্ট মাসকে ঘিরেই ষড়যন্ত্র হয়। আজও অনেকের লাফালাফি দেখছি। যুগে যুগে এরা আছে। এদের মুখোশ খুলে দানবীয় চেহারাটা বাংলার জনগণের সামনে তুলে ধরতে হবে। শেখ হাসিনা জীবন-মৃত্যু বাজি রেখে মানুষের জন্য রাজনীতি করে। সেখানেই এসব পুঁতিগন্ধময় দালাল, রাজাকার ও বিদেশীদের পা-চাটারা টিকে থাকবে না। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৩তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ঢাকা মহানগর নাট্যমঞ্চে আওয়ামী যুবলীগ ঢাকা দক্ষিণ যুবলীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাখতে গিয়ে তিনি আরও বলেন, ড. কামাল হোসেনকে নিয়ে নানা গুঞ্জন থাকলেও সব ভুলে গিয়ে বঙ্গবন্ধু তাঁকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বানিয়েছিলেন। কিউবায় পাটের বস্তা রফতানি করার জন্য ৭৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার যখন গমের জাহাজ ঘুরিয়ে দিল তখন ড. কামাল হোসেনের উচিত ছিল তার বিরুদ্ধে কথা বলার। কিন্তু তা করেননি। এখন তিনি হ্যান করেঙ্গা ত্যান করেঙ্গা বলছেন। জীবনে তো কোনদিন সরাসরি নির্বাচনে পাস করেননি ড. কামাল হোসেন। একটা সিট দেখান যেখানে উনি নির্বাচনে পাস করতে পারবেন। তাই বলি ষড়যন্ত্রকারীদের বাংলার মাটিতে ঠাঁই হবে না। রোহিঙ্গা ইস্যুতেও কোন কথা না বলার জন্য ড. কামাল হোসেনের সমালোচনা করে মতিয়া চৌধুরী বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে উনার মুখ দিয়ে কোন কথা বের হয় না। অথচ আজকে উনি গর্ত থেকে মুখ বের করেছেন। সাবেক বিচারপতি এস কে সিনহারও সমালোচনা করে তিনি বলেন, উনি নাকি কি রহস্য ফাঁস করবেন। আপনি যা পারেন করেন। শেখ হাসিনার দীপ্ত ও সাহসী নেতৃত্ব দিয়ে দেশকে যেভাবে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন তাতে এই বিদেশীদের পা চাটারা টিকবে না। যুবলীগ চেয়ারম্যান মুহাম্মদ ওমর ফারুক চৌধুরী বলেন, নতুন সাজে ও নতুন আঙ্গিকে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। বিএনপি হচ্ছে শয়তানের দল, তারা ভুল করলেও ক্ষমা চায় না। আর বিএনপিকে দিয়ে আন্দোলন হবে না। তারা মানুষকে বিভ্রান্ত করতে পারবে গুজব ছড়িয়ে। কিন্তু ষড়যন্ত্রকারীদের মনে রাখতে হবে, জনগণের সম্মিলিত শক্তি অজেয়। রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নিশ্চয়ই এদেশের মানুষ পরাজিত অপশক্তির সকল ষড়যন্ত্র রুখে দেবে। যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী স¤্রাটের সভাপতিত্বে ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জাফর আহম্মেদ রানার সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন মেয়র মুহাম্মদ সাঈদ খোকন, প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব এ্যাডভোকেট সাইফুজ্জামান শিখর, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ, যুবলীগ নেতা মজিবুর রহমান চৌধুরী, মহিউদ্দিন আহমেদ মহি, বদিউল আলম, ফজলুল হক আতিক প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। বিএনপির সঙ্গে কোন সংলাপ নয়Ñ মোহাম্মদ নাসিম ॥ আগামী নির্বাচন নিয়ে বিএনপির সঙ্গে কোন সংলাপ হবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। তিনি বলেন, বিএনপির সঙ্গে আর কোনদিন সংলাপ হবে না। সাম্প্রদায়িক অপশক্তিদের নিয়ে গঠিত ২০ দলকে আর কোন ছাড় নয়। যারা ষড়যন্ত্র করে তাদের আর ছাড় দেয়া হবে না। মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ডাঃ মিলন হলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৩তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। মোহাম্মদ নাসিম বলেন, আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী হলেও উদার গণতন্ত্রে নয়। কেননা উদার গণতন্ত্র শেখ রাসেলের মতো শিশুকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। উদার গণতন্ত্রের কারণে আইভি রহমানকে হত্যা করা হয়েছে। অর্থাৎ উদার গণতন্ত্রেই সবাই চক্রান্তের সুযোগ পায়। তিনি বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নিয়ে এবার ফেসবুক অপপ্রচার চালানো হয়েছে। কোন কোন অভিনেত্রী, মডেল, কোন কোন অধ্যাপকও অপপ্রচার করেছেন। এ ধরনের ষড়যন্ত্রকারী, বিষধর সাপদের কোন ছাড় দেয়া হবে না। এদের ছাড় দিলে দেশের স্বাধীনতা বিপন্ন হবে, নিজেদের অস্তিত্ব ধ্বংস হবে। এসব ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আগামী ডিসেম্বরে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। গত ১০ বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশবাসীকে অনেক কিছু দিয়েছেন। এবার দেশবাসীর দেয়ার পালা। আর তা হলো আগামী নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগের বিজয় সুনিশ্চিত করা। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডাঃ কনক কান্তি বড়ুয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক, বাংলাদেশ মেডিক্যাল রিসার্চ কাউন্সিলের (বিএমআরসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডাঃ সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী, বাংলাদেশ মেডিক্যাল এসোসিয়েশনের সভাপতি ডাঃ মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডাঃ রোকেয়া সুলতানা, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ডাঃ এম ইকবাল আর্সলান, মহাসচিব অধ্যাপক ডাঃ এম এ আজিজ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। বাংলাদেশকে মিনি পাকিস্তান বানাতেই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা- নানক ॥ ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়ে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। পরবর্তীতে তিনিই বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন। তখন কোথায় ছিলেন জিয়াউর রহমান? তিনি কী দায়িত্ব পালন করেছিলেন? মঙ্গলবার ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় ছাত্রলীগ আয়োজিত জাতীয় শোক দিবস স্মরণে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক এ প্রশ্ন তুলেছেন। বিশ^বিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় ছাত্রলীগ সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস। সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ। আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন, সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী প্রমুখ। জাহাঙ্গীর কবির নানক আরও বলেন, আমাদের জাতির পিতা, আদর্শের পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা একটি আদর্শের হত্যাকান্ড। বাংলাদেশকে একটি ‘মিনি পাকিস্তান’ এ পরিণত করা লক্ষ্যেই ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছিল। আলোচনা সভায় ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ সংগঠনটির নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। আইনের মাধ্যমেই খুনীদের দেশে আনতে হবেÑ আইন কমিশনের চেয়ারম্যান ॥ আইনকমিশনের চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনীদের আইনী ব্যবস্থার মাধ্যমে দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার বঙ্গবন্ধুর খুনীদের দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য সব রকম চেষ্টা করছে। খুনীরা রাতের অন্ধকারে কাপুরুষের মতো বঙ্গবন্ধুসহ তাঁর পরিবারের সবাইকে গুলি করে হত্যা করে। বিদেশে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে আইন করেছিলেন জানিয়ে সাবেক এই প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময় খ্যাতনামা আইনজীবী সিআর পাল ভারতে চলে গিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর মধ্যস্থতায় বঙ্গবন্ধুই তাঁকে ভারত থেকে দেশে ফিরিয়ে এনেছিলেন। সেই সময় যুদ্ধাপরাধীদের দালাল আইনে বিচার করার জন্য বঙ্গবন্ধু তিন সিনিয়র আইনজীবীকে বিদেশে পাঠিয়েছিলেন। তাঁরা হলেন- এস আর পাল, আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের বাবা সিরাজুল হক ও বিএনপি নেতা এ্যাডভোকেট খন্দকার মাহাবুব হোসেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৩তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভার সভাপতির বক্তব্যে রাখতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন কমিশনে সদস্য বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীর, সচিব আলী আকবর, প্রধান গবেষণা কর্মকর্তা ফজলুল আজমীম, রাকিবুল হাসান প্রমুখ।
×