ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

মহা ধুমধামে চলছে পাট কাটা

বাগেরহাটে পাট চাষে আগ্রহ বাড়ছে চাষীদের

প্রকাশিত: ০৪:৫১, ১৪ আগস্ট ২০১৮

বাগেরহাটে পাট চাষে আগ্রহ  বাড়ছে চাষীদের

স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট ॥ বাগেরহাটের চাষীরা আবার পাট চাষে ফিরেছে। মধুমতি, চিত্রা ও বলেশ্বর নদীর বিস্তীর্ণ চর ও বিভিন্ন জমিতে এ বছর ব্যাপকভাবে পাটের চাষ হয়েছে। বর্তমানে জমির পাট কাটা শুরু হয়েছে। এলাকায় মহা ধুমধামে চলছে এখন পাট কাটা ও প্রক্রিয়াজাতের কাজ। সোনালি আঁশ খ্যাত পাট চাষে সুদিন ফিরে এসেছে। অনেকেই এখন পাট চাষ করে আবার ভাগ্য বদলানোর স্বপ্ন দেখছেন। ন্যায্যমূল্য পেলে আগামীতে আরও ব্যাপকভাবে পাট চাষ করবেন বলে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন চাষীরা। স্থানীয় চাষীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিগত কয়েক বছর ধরে পাট চাষ করে লোকসান গুণতে হয়েছে চাষীদের। ফলে পাট চাষ করা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন তারা। কিন্তু বর্তমান সরকারের উদ্যোগে দেশ-বিদেশে পাট ও পাটজাত পণ্যের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় আবার পাট চাষে আগ্রহ বাড়ছে চাষীদের। এছাড়া এ বছর পাটের বাজার দর ভালও থাকায় ও পাটকাঠি থেকে বাড়তি আয় ঘরে আসায় কিছুটা লাভের মুখ দেখছেন চাষীরা। ফলে অন্যান্য ফসল চাষের পরিবর্তে পাট চাষে ঝুঁকেছেন কৃষকেরা। এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, চিতলমারী উপজেলার বড়বাড়িয়া, কলাতলা, হিজলা, শিবপুর, চিতলমারী সদর, চরবানিয়ারী ও সন্তোষপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন জমিতে ব্যাপাকভাবে পাট চাষ হয়েছে। এলাকার নারী-পুরুষ সকলে রাত-দিন সমান তালে পাট কেটে প্রক্রিয়া জাতের কাজ করছেন। গত কয়েক বছর ধরে সবজি ও ধান চাষ করে আশানুরূপ ফল না পাওয়ায় চাষীরা আবার পাট চাষ শুরু করেন। এতে লাভের মুখ দেখছেন তারা। যার কারণে এ বছর ব্যাপকভাবে পাটের চাষ করেন কৃষকেরা। ফলে ফিরে এসেছে সোনালি আঁশের সুদিন। এলাকার শত শত চাষীরা এখন এটি চাষের মাধ্যমে ভাগ্য বদলের স্বপ্ন দেখছেন। উপজেলার কুড়ালতলা গ্রামের ননী গোপাল ম-ল জানান, তিনি ৫ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছেন। এ বছর পাটের গাছও খুব ভাল হয়েছে। বর্তমানে এসব পাট কেটে পানিতে জাগ দেয়া হচ্ছে। আগামী ২ থেকে ৩ সপ্তাহ পর প্রক্রিয়া জাতের মাধ্যমে এসব পাটের আঁশ তুলে শুকানোর পর বিক্রির জন্য বাজারে তোলা হবে। এছাড়া খড়মখালী গ্রামের শুশীল ম-ল ২ বিঘা, রেপতী ম-ল ১০ কাঠা, গুরুদাস ২ বিঘা ও শুধাংসু ২ বিঘাসহ শত শত চাষীরা জমিতে পাট চাষ করেছেন। কৃষি কর্মকর্তা ঋতুরাজ সরকার জানান, বর্তমান সরকারের নানামুখী কার্যকর পদক্ষেপের কারণে এ বছর পাটের বাজার দর খুবই ভাল। প্রতি মণ পাট ১৮শ’ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। যেটি অন্য বছরের তুলনায় দ্বিগুণ। এছাড়া পাটের চেয়ে এর খড়ি থেকে একটা বড় ধরনের লাভের টাকা ঘরে আসে চাষীদের। এলাকায় সাধারণত ও-৯৮৯৭ এবং বঙ্কিম জাতের পাটের চাষ করা হয়েছে। এছাড়া স্থানীয় জাতের মেচতা ও বাবুর দানা পাট চাষ করেছেন চাষীরা। পাট চাষে জমির উর্বর শক্তি বৃদ্ধি পায়। ফলে এসব জমিতে অন্যান্য ফসলেও ভাল ফলন পাওয়া যায়। তাই চাষীরা ব্যাপকহারে আবার পাট চাষ করছেন। তার ভাষায় ‘পাটে সোনালি দিন ফিরছে’।
×