ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ছায়ানটে কামাল আহমেদ-আফসানা রুনার গানে মুগ্ধ শ্রোতা

প্রকাশিত: ০৪:৪১, ১৩ আগস্ট ২০১৮

 ছায়ানটে কামাল আহমেদ-আফসানা রুনার গানে মুগ্ধ শ্রোতা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ধানমন্ডির ছায়ানট সংস্কৃতি ভবন প্রধান মিলনায়তনে সম্প্রতি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের রাগভিত্তিক গান নিয়ে ‘রাগে যুগলবন্দি’ শীর্ষক সঙ্গীতানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন প্রখ্যাত রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব কামাল আহমেদ এবং বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী ও প্রশিক্ষক আফসানা রুনা। অনুষ্ঠানে দুইশিল্পী গান গেয়ে উপস্থিত দর্শক-শ্রোতাদের মুগ্ধ করেন। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের রাগাশ্রয়ী গান নিয়ে যুগলবন্দি অনুষ্ঠান বাংলাদেশে এটিই প্রথম। ব্যতিক্রমী এই আয়োজনে মিলনায়তনে দর্শকদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। উপস্থিত দর্শকদের ভালবাসায় সিক্ত হয়ে শিল্পী কামাল আহমেদ ও আফসানা রুনা গেয়ে শোনান ১৮টি গান। ছুটির দিনের সন্ধ্যায় দর্শকদের পিনপতন নীরবতায় গানের আয়োজন শুরু হলেও মোহনীয় আবেগ থাকতে থাকতেই আয়োজনের সমাপ্তি ঘটে। রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী কামাল আহমেদের গাওয়া ইমনকল্যাণ রাগে বর্ষার গান ‘এসো গো জ্বেলে দিয়ে যাও প্রদীপখানি’ দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। শিল্পী কামাল আহমেদের গাওয়া আরও উল্লেখযোগ্য ছিল মল্লার রাগে ‘আজি ঝড়ের রাতে’, বেহাগ রাগে ‘আজি বিজন ঘরে নিশীত রাতে’ ও ‘ভরা থাক স্মৃতিসুধায়’, পিলু রাগে ‘ছায়া ঘনাইছে বনে বনে’ ও ‘আমার পরান যাহা চায়’, রামকেলি রাগে ‘যদি জানতেম আমার কিসের ব্যথা’ এবং সাহানা রাগের ‘নিশি না পোহাতে’ গানগুলো পরিবেশন করেন। এছাড়া নজরুল সঙ্গীতশিল্পী আফসানা রুনার পরিবেশনায় ছিল ইমন মিশ্র রাগে ‘বসিয়া বিজনে কেন একা মনে’, মেঘমল্লার রাগে ‘বরষা ঐ এলো বরষা’, বেহাগ রাগে ‘নিশি নিঝুম ঘুম নাহি আসে’, ‘কেন দিলে এ কাঁটা যদি কুসুম’, পিলু রাগে ‘সুরে ও বাণীর মালা দিয়ে তুমি’ এবং বাগেশ্রী রাগে ‘হারানো হিয়ার নিকুঞ্জ পথে’ ও ‘চাঁদ হেরেছি চাঁদ মুখতার’ প্রভৃতি গান পরিবেশন করেন। সব শেষে শিল্পী কামাল আহমেদ ও আফসানা রুনা দ্বৈত কণ্ঠে ‘মোরা আর জনমে হংস-মিথুন ছিলাম (নজরুল সঙ্গীত) এবং ‘আকাশ ভরা সূর্যতারা’ (রবীন্দ্রসঙ্গীত) পরিবেশন করেন। শিল্পীদের পরিবেশিত প্রতিটি গানই উপস্থিত দর্শকদের বৃষ্টি স্রোত শ্রাবণের আবেগে মুগ্ধ করে। সঙ্গীত শিল্পী কামাল আহমেদ বাংলাদেশ বেতারের বহির্বিশ্ব কার্যক্রমের পরিচালক পদে কর্মরত রয়েছেন। সরকারী চাকরিকে ছাপিয়ে তিনি সঙ্গীতে হয়েছেন ঋদ্ধ। সঙ্গীতের সব শাখাতেই তার বিচরণ রয়েছে। রয়েছে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক খ্যাতি এবং স্বীকৃতি। কামাল আহমেদ ২০১৭ সালে ভারতের মহারাজা বীরবিক্রম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গৌতম কুমার বসুর হাত থেকে ‘অদ্বৈত মল্লবর্মণ পদক’ ও ত্রিপুরার সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের উপস্থিতিতে ‘বীর শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত পদক’ প্রাপ্ত হন। এছাড়াও তিনি ২০১৫ সালে বঙ্গবন্ধু গবেষণা ফাউন্ডেশন এ্যাওয়ার্ড এবং ২০১০ সালে সার্ক ক্যালচারাল সোসাইটি এ্যাওয়ার্ড অর্জন করেন। সর্বশেষ তিনি ২০১৭ সালে কানাডায় ৩১তম ফোবানা (ফেডারেশন অব বাংলাদেশী এ্যাসোসিয়েশন ইন নর্থ আমেরিকা) সম্মেলনে বাংলাদেশ ও বহির্বিশ্বে বেতার সম্প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ফোবানা পদক প্রাপ্তির বিরল সম্মান অর্জন করেন। উল্লেখ্য, এ পর্যন্ত শিল্পীর ১৫টি এ্যালবাম প্রকাশ হয়েছে। শিল্পী আফসানা রুনা ছায়ানট ও নজরুল ইনস্টিটিউটের সঙ্গীত শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। সারাদেশে সঙ্গীতের প্রশিক্ষক হিসেবেও তার প্রতিভাকে বিস্তৃত করেছেন। এছাড়া বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশন ও মঞ্চেও নিয়মিত সঙ্গীত পরিবেশন করে থাকেন।
×