ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ক্রেতাশূন্য ঈদ বাজার

প্রকাশিত: ০৪:৩৬, ১৩ আগস্ট ২০১৮

 ক্রেতাশূন্য ঈদ বাজার

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ আর মাত্র দুই সপ্তাহ পর পবিত্র ঈদ-উল-আজহা। ধর্মীয় এ উৎসবকে কেন্দ্র করে নানার সাজে সেজেছে রাজধানীর শপিংমলগুলো। ক্রেতা আকর্ষণে নগদ মূল্য ছাড়সহ নানান অফার। কিন্তু যাদের জন্য এ আয়োজন তাদেরই দেখা মিলছে না। ছাত্র আন্দোলন, রাজনৈতিক পরিস্থিতিসহ নানা কারণে প্রায় ক্রেতাশূন্য ঈদ বাজার। রাজধানীর ইস্টার্ন প্লাস, কর্ণফুলী গার্ডেন সিটি শপিং কমপ্লেক্স, মৌচাক, বেইলি রোড, পলওয়েল সুপার মার্কেট ও বসুন্ধরা শপিং মলসহ বিভিন্ন শপিংমল ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। শপিংমলগুলোতে ঈদ উপলক্ষে নতুন নতুন পণ্য নিয়ে পসরা সাজিয়েছে ব্যবসায়ীরা। কিন্তু কাক্সিক্ষত ক্রেতা না থাকায় অলস সময় পার করছেন বিক্রেতারা। কর্ণফুলী গার্ডেন সিটিতে দেখা যায়, নতুন নতুন সেলোয়ার কামিজ, থ্রি-পিস, শাড়ি, পাঞ্জাবি, ফতুয়া, শার্ট, টি-শার্ট, জুতাসহ শিশু থেকে বৃদ্ধা সব বয়সের মানুষের পোশাকের পসরা সাজিয়েছে বিক্রেতারা। কথা হয় সোহা ফ্যাশনের বিক্রয়কর্মী নাহিদুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, ঈদের আর বাকি ১২-১৩ দিন। কিন্তু কোন ক্রেতা নেই। দোকানে অনেক নতুন মাল আনা হয়েছে। সকাল থেকে বসে আছি। একটি কাস্টমারও আসেনি। রোজার ঈদের পর ক্রেতা কম। আর গত কয়েকদিন ধরে নেই বললেই চলে। এর কারণ জানতে চাইলে এ বিক্রেতা বলেন, ছাত্রদের আন্দোলনের কারণে ক্রেতা কম। এছাড়া সাধারণ মানুষের হাতে এখন খরচের মতো টাকা কম। সব মিলিয়ে এখন ক্রেতাশূন্য। তবে আগামী সপ্তাহ থেকে ক্রেতা সমাগম বাড়বে বলে প্রত্যাশা করি। একই শপিংমলের ব্র্যান্ডের জুতা বিক্রির প্রতিষ্ঠান জেনিসের বিক্রয়কর্মী বলেন, ব্র্যান্ডের প্রতিমাসেই নতুন পণ্য নিয়ে আসে। ঈদ উপলক্ষে ডেবিট ক্রেডিট কার্ড ও বিকাশের মাধ্যমে মূল্য পরিশোধ করলে বিভিন্ন ছাড় রয়েছে। বিক্রি কেমন হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ক্রেতা নেই। কোন দিন মাত্র দুই তিন জোড়া বিক্রি করছি। ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠানটি বলে কোন মতো টিকে আছি। অন্যদের ব্যবসা করা কঠিন হয়ে পড়েছে। তিনি আরও বলেন, ঈদ-উল-আজহায় মানুষ মূলত কোরবানি নিয়েই ব্যস্ত থাকে। কিন্তু এবার ব্যবসায় একটু বেশি খরা যাচ্ছে। অন্যবার এ সময় বিক্রি ভাল থাকে; কিন্তু এবার আশানুরূপ ক্রেতা মিলছে না। বসুন্ধরা শপিংমলে দেখা যায় অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের ক্রেতা কম। এ বিষয়ে জেন্টাল পার্কের বিক্রয়কর্মী জানান, ২০-৭০ শতাংশ ছাড় দেয়া হয়েছে। তবুও ক্রেতা নেই। বিভিন্ন আন্দোলনের কারণে মানুষ ভয়ে কম বের হচ্ছে। এছাড়া আর্থিক অবস্থা ভাল না। সংসারের যাবতীয় খরচ মিটিয়ে শপিং করার মতো অর্থ খুব কম মানুষের হাতেই আছে। এসব কারণে ক্রেতা কম বলে জানান তিনি। এদিকে নামী-দামী অনেক জুতার ব্র্যান্ড নানা অঙ্কের নগদ মূল্য ছাড় দিয়েছে। এর মধ্যে বে এম্পোরিয়াম দিচ্ছি তাদের বেশকিছু পণ্যের ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দিয়েছে। ইনসোল দিচ্ছে ২০ শতাংশ ছাড়। বোলিং দিচ্ছে ২৫-৭০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড়। এসব প্রতিষ্ঠানের বিক্রেতারা বলেন, ছাড় দেয়া হয়েছে, কিন্তু যাদের জন্য এ অফার তাদের অর্থাৎ ক্রেতার তেমন সাড়া নেই। তারা বলেন, ঈদের আরও দুই সপ্তাহ আছে আশা করছি আগামী সপ্তাহে ক্রেতা বাড়বে। পলওয়েল সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ী রাজিব বলেন, ব্যবসার অবস্থা অনেক খারাপ। প্রতিদিন খরচ হচ্ছে কিন্তু আয় নেই। তাই বর্তমান যে পরিস্থিতি এভাবে চলতে থাকলে ব্যবসা চালানো কঠিন হয়ে যাবে। এদিকে মৌচাক মার্কেটে আসা এক ক্রেতা তামান্না জানান, পারিবারিক একটি অনুষ্ঠান আছে তাই কিছু প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে এসেছে। গত কয়েকদিন ধরে আসব বলে ঠিক করেছিলাম। কিন্তু আন্দোলনের কারণে যে পরিস্থিতি আসেনি।
×