ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

নাব্য সঙ্কট

শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি ফেরি চলাচল বিঘ্নিত

প্রকাশিত: ০৩:৫৭, ১৩ আগস্ট ২০১৮

শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি ফেরি  চলাচল বিঘ্নিত

স্টাফ রিপোর্টার, মুন্সীগঞ্জ ॥ শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি ফেরি সার্ভিস নাব্য সঙ্কটে মারাত্মকভাবে বিঘিœত হচ্ছে। এতে দক্ষিণবঙ্গের ২১ জেলার প্রবেশদ্বার বলে পরিচিত শিমুলিয়া ঘাটে মানুষের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। উভয় পাড়ে আটকা পড়েছে ট্রাকসহ ৫ শতাধিক ট্রাক। রবিবার সকাল থেকে ৯টি ফেরি দিয়ে কোন রকমে সার্ভিস সচল রাখা হয়েছে। ফেরিগুলো হচ্ছে- কাকলী, কেতুকী, করবী, কিশোরী, কুমিল্লা, কোস্তরী, ঢাকা, ফরিদপুর ও কপোতি। এসব ফেরি এ্যাম্বুলেন্স এবং ছোট আকারে কিছু হালকা গাড়ি পারাপার করছে। কখনও অবস্থা বুঝে ২/১ টা কোচ পার করা হচ্ছে। এদিকে সকাল থেকে এই রুটে আবার ড্রেজিং শুরু হয়েছে। ৬/৭টি ড্রেজার এই রুটে ড্রেজিং চালাচ্ছে। এছাড়া পাটুরিয়া ঘাটে চাপ পড়ায় কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ফেরি এনায়েতপুরী, শাহ মাখদুম ও ক্যামেলিয়াকে সেখানে পাঠানো হয়েছে। এসব তথ্য দিয়ে বিআইডব্লিউটিসির এজিএম খন্দকার শাহ খালেদ নেওয়াজ রবিবার বিকেল পৌনে ৩ টায় জানিয়েছেন, পানি কম, ভারি যান দিলে ফেরি ঠেকে যায়। তাই অল্প বিস্তর যান দিয়ে সার্ভিস চালু রাখার হয়েছে। ফেরিগুলো চলছে বিকল্প চ্যানেলেই। এখনও মূল চ্যানেলের কিছু হয়নি। শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি ফেরি রুটে ২১ ফেরি রয়েছে। এরমধ্যে মূল প্রাণ হচ্ছে ৩টি রো রো ফেরি। এছাড়া রয়েছে ৭টি ডাম্ব ফেরি, ৮টি কে টাইপ, ২টি মিডিয়াম ফেরি এবং ১টি ছোট ফেরি। তিনি বলেন, চ্যানেলে যেখানে ফেরি চলতে পানি লাগে ৭ থেকে ৮ ফুট, সেখানে পানি রয়েছে প্রায় ৫ ফুট। তাই বাধ্য হয়ে ফেরি চলাচল বন্ধ করতে হয়েছে। তবে হালকা কিছু যান দিয়ে অল্প পানিতে চলাচল উপযোগী ৮টি ফেরি চলছে এখন। তিনি জানান, এই রুটে গড়ে ৩ হাজার যান দৈনিক পারাপার হয়। কিন্তু এখন তা হাতেগোনা কয়েক ডজনে নেমে এসছে। এছাড়া নাইট কোচসহ অন্য বাস কাটা সার্ভিসের মাধ্যমে শুধু যাত্রীরা ফেরিতে নদী পার হয়ে ওপারে গিয়ে নির্ধারিত বাসে উঠছে। আবার অনেক যান ফিরে যাচ্ছে। কিন্তু পণ্যবাহী ট্রাকগুলো বসেই আছে। এসব ট্রাকের চালকরা বলছেন- ৫/৭ দিন বসে থাকলেও এখানেই অপেক্ষা করবেন। তারা জানান, বিকল্প পথে গেলে বিড়ম্বনা আরও বাড়বে। বারবার বলার পরও কেন তারা যাচ্ছে না বুঝতে পারছি না। তিনি আরও বলেন প্রায় ২ মাস ধরে বিআইডব্লিউটিএ নাব্যতা সঙ্কট দূর করতে ড্রেজিং চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে তার কোন সুফল দেখা যাচ্ছে না। এখন অপেক্ষা করা ছাড়া কিছু করার নেই। বেশ কিছু দিন ধরে বিআইডব্লিউটিএ এই চ্যানেলে ড্রেজিং করছিল। তারপরও নাব্যতা সঙ্কট থেকেই যাচ্ছে। ড্রেজিং বাবদ লাখ লাখ টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে ব্যয় হলেও এর সুফল এই ফেরি রুটে কেন নেই? সব সময়ই এই ফেরি চ্যানেলে এই সময় নাব্য সঙ্কট সৃষ্টি হয়। আর ঈদ আসন্ন তাই এই চ্যানেল সচল রাখা জরুরী। কিন্তু যদি চ্যানেল সচল রাখা না যায়, তবে কেন ড্রেজিংয়ের নামে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করা হচ্ছে। এদিকে ড্রেজিংয়ের নামে তেল চুরির অভিযোগ উঠেছে। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিআইডব্লিউটিএর নির্বাহী প্রকৌশলী (ড্রেজিং) এএসএম আরিফিন। . মাদারীপুর নিজস্ব সংবাদদাতা মাদারীপুর থেকে জানান, কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌরুট নাব্য সঙ্কটের কবলে পড়ে রো-রো ও ডাম্ব ফেরি চলাচল বন্ধ রেখেছে কর্তৃপক্ষ। ফলে ঘাটে তৈরি হচ্ছে পরিবহন যানজট। শনিবার সকাল থেকে রো-রো ও স্রোতের বিপরীতে চলতে না পাড়ায় ডাম্ব ফেরি চলাচল বন্ধ করা হয়। এদিকে কাঁঠালবাড়ি ফেরিঘাট কর্তৃপক্ষ পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোকে পাটুরিয়া- দৌলতদিয়া রুট ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছে। রবিবার সকাল ৮টার পর থেকে ছোট ছোট ফেরি দিয়ে যানবাহন পার করা হচ্ছে। সূত্রে জানা গেছে কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌপথের লৌহজং টার্নিং পয়েন্টে দেখা দিয়েছে নাব্য সঙ্কট। পানি স্বল্পতার কারণে রো-রো ও ডাম্ব ফেরিগুলো চ্যানেল মুখ পার হতে পারছে না। ফেরির তলদেশ ঠেকে যাচ্ছে পদ্মার চরে। ফলে শনিবার সকাল থেকে রো-রো ও ডাম্ব ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়। এদিকে চ্যানেল অতিক্রম করে মূল পদ্মায় প্রবেশ করতে গিয়ে তীব্র স্রোতের মুখে পরতে হচ্ছে কাঁঠালবাড়ি থেকে ছেড়ে যাওয়া কে-টাইপ ফেরিগুলো। রবিবার সকাল ৮টার পর থেকে ছোট ছোট ১০টি ফেরি দিয়ে যানবাহন পার করা হচ্ছে। চ্যানেলমুখে পানি কম থাকায় এবং ফেরি চরে আটকে যাওয়ার আশঙ্কায় বেশি লোড দিয়ে যান পারাপার করা যাচ্ছে না।
×