তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপ এরদোগান তার দেশের জনগণকে তাদের কাছে থেকে ডলার ও ইউরো ব্যাংকে জমা দিয়ে জাতীয় মুদ্রা লিরা সংগ্রহ করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এর মধ্য দিয়ে পশ্চিমাদের বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র একটি শিক্ষা দেয়া হবে। গার্ডিয়ান।
এরদোগান শনিবার তুরস্কের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় উনাই শহরে একটি সমাবেশে বক্তৃতার সময় বলেন, তুর্কী জনগণের উচিত যাদের কাছে ডলার ও ইউরো আছে তা দ্রুত জমা লিরায় পরিবর্তন করে নেয়া। তুরস্কের ইস্পাত ও এ্যালুমিনিয়ামের ওপর যুক্তরাষ্ট্র দ্বিগুণ হারে শুল্ক ধার্য করার পর ডলারের বিপরীতে লিরার দর ১৪ শতাংশ পড়ে গেছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে তুরস্কের অর্থনীতিতে ধস নামতে পারে। বর্তমান পরিস্থিতিতকে ‘স্বাধীনতা যুদ্ধের’ সঙ্গে তুলনা করেছেন এরদোগান। ওই সমাবেশে এরদোগান বলেন, আপনার বালিশের নিচে যদি ডলার বা ইউরো থাকে তবে শীঘ্রই সেগুলো বের করে ব্যাংকে জমা দিয়ে লিরা করে নিন। এটি এখন আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধ। এই ভাষাটিই কেবল তারা বোঝে। শুক্রবার থেকে লিরার দর পড়ে যাওয়ায় দেশজুড়ে অর্থনৈতিক কম্পন দেখা যাচ্ছে। সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ থেকে শুরু করে রাশিয়ার কাছ থেকে প্রতিরক্ষা সরঞ্জামাদি কেনা পর্যন্ত বিভিন্ন ইস্যুতে তুরস্কের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের দ্বন্দ্ব আগের থেকেই ছিল। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে এ্যান্ড্রু বেনসন নামে একজন ইভানজেলিক ধর্মযাজককে আটকে রাখার বিষয়টি।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুক্রবার তুরস্কের সমালোচনা করে একটি টুইট করেন। তিনি এতে বেনসনকে ২১ মাস ধরে আটক রাখার সমালোচনা করেন। তুরস্কে দুবছর আগে একটি ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানের পর অন্য অনেকের সঙ্গে বেনসন আটক হয়েছিলেন। তার বিরুদ্ধে ‘সন্ত্রাসী সংগঠনকে সহায়তা’ এবং গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ আনা হয়েছে। দোষী প্রমাণিত হলে তার ৩৫ বছর পর্যন্ত কারাদন্ড হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র বরাবরই এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। এসব অভিযোগের কোন প্রমাণ নেই বলেও মনে করে যুক্তরাষ্ট্র। চলতি মাসের ১ তারিখ তুরস্কের স্বরাষ্ট্র ও বিচারমন্ত্রীর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র বেনসন ছাড়াও ওই ঘটনায় ২০ জন মার্কিন নাগরিক আটক হয়েছিলেন। যাজক প্রসঙ্গে এরদোগান যুক্তরাষ্ট্রকে উদ্দেশে বলেন, ‘আপনার কর্মকান্ড হতাশাজনক। কারণ আপনার ন্যাটো মিত্রের চেয়ে একজন যাজককে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। তুরস্কে অর্থনৈতিক সঙ্কট দেখা দিলে আঞ্চলকি পর্যায়ে তার প্রভাব পড়তে পারে। ইরান, ইরাক ও সিরিয়ার সঙ্গে দেশটির অভিন্ন সীমান্ত রয়েছে। ২০০১ সালের পর তুরস্কের অর্থনীতি এখন সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় আছে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: