ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

লিভ ছেড়ে রিমেইনে ভোটাররা, আরেকটি গণভোট চান তাঁরা

ব্রেক্সিটের বিপক্ষে জনমত

প্রকাশিত: ০৩:৪৮, ১৩ আগস্ট ২০১৮

ব্রেক্সিটের বিপক্ষে জনমত

একশ’য়ের বেশি ব্রিটিশ পার্লামেন্টারি আসন যেখানে ভোটাররা এক সময় ব্রেক্সিটের পক্ষে ছিলেন তারা এখন এর বিরোধিতা করছেন। তারা চাইছেন ব্রিটেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে থাকুক। মাইকেল গোভ এবং বরিস জনসনের মতো ব্রেক্সিটপন্থীদের ভোটাররা তাই বলছেন। ব্রিটেনের অবজারভার ও ইউগভসহ কয়েকটি সংস্থার করা নতুন এক সমীক্ষায় এটি দেখা গেছে। গার্ডিয়ান। ওয়েস্টমিনস্টারের ১শ’য়ের বেশি আসনের নাগরিক যারা এক সময় লিভের পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন তারা এখন করে রিমেইনের পক্ষে বলছেন। এ থেকে ধারণা পাওয়া যায় ব্রিটেনের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটার এখন ব্রেক্সিটের পক্ষে। ব্রেক্সিট নিয়ে চলতি বছর পার্লামেন্টে তীব্র বিতর্ক হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। লেবার দলের যেসব এমপি লিভের পক্ষে ভোট দেন তাদের মধ্যে সংশয় দেখা দেয়ার প্রভাব বাদবাকি এমপিদের ওপরও পড়ে থাকতে পারে। ইংল্যান্ডের উত্তরাঞ্চল ও ওয়েলস লেবারের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। ধারণা করা হচ্ছে ওইসব অঞ্চলের ভোটারদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ঘটে থাকতে পারে। লেবার নেতা জেরেমি করবিনের ওপর ব্রেক্সিট ইস্যুতে নমনীয় হওয়ার জন্য চাপ বাড়ার সম্ভবনা আছে। ইউগভ পোলের জরিপের তথ্য বিশ্লেষণ করে ফোকালডাটা কনজ্যুমার এ্যানালিটিক্স এ সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে। প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে ৬ জুলাই তার প্রস্তাবিত ব্র্রেক্সিট পরিকল্পনা প্রকাশ করার আগে ও পরে দুইবার জনমত যাচাই হয়। বেস্ট ফর ব্রিটেন নামে ব্রেক্সিট বিরোধী একটি গ্রুপ এবং হোপ নট হেট নামে বর্ণবাদ বিরোধী দুটি গ্রুপ জরিপ পরিচালনায় সঙ্গে ছিল। ইংল্যান্ডের পার্লামেন্টে আসন সংখ্যা ৬৩২। এর মধ্যে ১১২টি আসনে ব্রেক্সিট থেকে রিমেইনে ফেরার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। স্কটল্যান্ড এবং ওয়েলসের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সমীক্ষা দেখা গেছে রিমেইন বা ইইউর সঙ্গে থেকে যাওয়ার পক্ষে এখন মোট ৩৪১টি আসন রয়েছে। দু’বছর আগে যখন এই ইস্যুতে গণভোট হয়েছিল তখন সংখ্যাটি ছিল ২২৯। স্কটল্যান্ড এবং ওয়েলেসেও রিমেইনের পক্ষে সমর্থন বেড়েছে। সব মিলিয়ে এখন ৫৩ শতাংশের মতো। তরুণ ভোটার এবং সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীর লোকজনও এখন রিমেইনকে সমর্থন করছেন। কমন্স সভার বিষয় নিয়ে ভোটাভুটি এখনও হয়নি। চলতি বছরের মধ্যে ব্রেক্সিট পরিকল্পনা চূড়ান্ত করে ফেলতে চান মে। পার্লামেন্টে মে’র বিরোধীরা চান ব্রেক্সিট নিয়ে আরেকটি গণভোট আয়োজন করতে। ব্রিটেনের জনগণকে এ বিষয়ে আরও একবার মত প্রকাশের সুযোগ দেয়া হোক। তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে ইউগভ যে মডেলিং ব্যবহার করেছে তাতে ৫০ হাজার লোক কভার করা যায়। যেসব আসনে জনমত জরিপ চালানো হয়েছে তার মধ্যে লিভ আন্দোলনের নেতা বরিস জনসনের আসনটিও রয়েছে। মাইকেল গোভ ও সারি হিথের মতো প্রথম সারির ব্রেক্সিটপন্থীদের আসনগুলোরও একই অবস্থা দেখা গেছে। ২০১৬ সালে রিমেইনের পক্ষে সমর্থন ছিল ৪৮ শতাংশ তা এখন ৫০.২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। ১২.৮ শতাংশ ভোটার এখনও সুইং বা সিদ্ধান্তহীন অবস্থায় আছে। লেবার এমপি ফ্রাঙ্ক ফিল্ডের বার্কেনহেড আসনে ৫৮.৪ শতাংশ রিমেইন সমর্থক দেখা গেছে। ব্রেক্সিট সমর্থক এমপিদের আসনেও দেখা গেছে রিমেইনের প্রাধান্য। লিভারপুল ওয়াল্টন পার্লামেন্টারি আসনে দেখা গেছে রিমেইনের হার গত দুই বছরে ৪৬.৪ থেকে ৬০.৫ হয়েছে। ব্রেক্সিটপন্থী লেবার এমপিদের মধ্যে সংশয় ভোটারদের রিমেইনমুখী করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কোন আসনেই ভোটারদের লিভ থেকে রিমেইনমুখী হতে দেখা যায়নি। এসব জনমত জরিপ থেকে একটি বিষয় পরিষ্কার যে ব্রেক্সিটের পক্ষে জনসমর্থন কমছে, রিমেইনের পক্ষেই বাড়ছে।
×