ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

শেকৃবিতে ভুট্টার হাইব্রিড জাত উদ্ভাবন

প্রকাশিত: ০৫:১৫, ১২ আগস্ট ২০১৮

 শেকৃবিতে ভুট্টার  হাইব্রিড জাত  উদ্ভাবন

বশিরুল ইসলাম ॥ খাটো প্রজাতির দুটি হাইব্রিড ভুট্টার জাত উদ্ভাবন করল শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষিতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহেল বাকী। জাত দুটি খাটো প্রজাতির হওয়াতে ঝড় কিংবা প্রবল বাতাসে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনাও কম। কৃষকরা এই ভুট্টা রবি ও খরিপ-১ মৌসুমে চাষ করতে পারবে। নীল সাগর বীজ কোম্পানির আর্থিক সহায়তায় দীর্ঘ পাঁচ বছরের গবেষণায় এ জাত দুটি উদ্ভাবন করেন আব্দুল্লাহেল বাকী । তার এ উদ্ভাবনকে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. কামাল উদ্দিন আহাম্মদ অভিনন্দন জানিয়েছেন। জাতীয় বীজ বোর্ড (এনএসবি) অনিয়ন্ত্রিত ফসলের জাত নিবন্ধনের আওতায় উদ্ভাবিত সাউ হাইব্রিড ভুট্টা-১ ও সাউ হাইব্রিড ভুট্টা-২ এ জাত দুটির নিবন্ধন দিয়েছে। জাত দুটির গড় উৎপাদন হেক্টরপ্রতি ১১ মেট্রিক টন। রবি মৌসুমে হেক্টরপ্রতি ১৩ থেকে সাড়ে ১৩ মেট্রিক টন ও খরিপ-১ মৌসুমে সাড়ে ৮ থেকে ৯ মেট্রিক টন। বগুড়া জেলার শেরপুরের গাড়িদহ ইউনিয়নের মহিপুর গ্রামে, চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার উথলি ইউনিয়নের মল্লিকপুর গ্রামে এবং পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার চেংঠীহাজরডাংগা ইউনিয়নের বাগদহ গ্রামে সাউ-১ ও সাউ-২ হাইব্রিড ভুট্টা দুটির পরীক্ষামূলক চাষ করা হয়। পোল্ট্রি ও ফিস ফিডের জন্য বাংলাদেশ প্রতি বছর প্রায় ৬ মিলিয়ন মেট্রিক টন ভুট্টা আমদানি করে। ড. আব্দুল্লাহেল বাকী মনে করেন এ জাত দুটি পোল্ট্রি ও ফিস ফিডের চাহিদার অনেক ভাগই এ উৎস থেকে পূরণ করবে। ফলে কৃষক পর্যায়ে উদ্ভাবিত জাত দুটির চাষ বাড়ানো গেলে কৃষক লাভবান হবে। আব্দুল্লাহেল বাকী জানান, আমাদের দেশে চাষকৃত অন্যান্য ভুট্টার চেয়ে এ জাত দুটি তুলনামূলক খাটো প্রজাতির ও মোচাগুলো গাছের মাঝামাঝি জায়গায় অবস্থান করে। জাত দুটির গোড়া থেকে মোচার উচ্চতা ৬০ থেকে ৮৫ সে.মি.। ফলে ভুট্টার অন্যান্য জাতের চেয়ে উদ্ভাবিত জাত দুটি মাটি থেকে বেশি পরিমাণে পানি ও পুষ্টি সংগ্রহ করে মোচায় সরবরাহ করতে পারে। এগুলোর ট্যাসেল -একটি আবরণ বিশেষ, যার ভেতর ভুট্টা হয় খাড়া ও ছড়ানো। এতে বৃষ্টির পানি ট্যাসেলে জমে থাকে না। বীজের গঠন হয় চোখা। তাই এর র‌্যাকিসে ভুট্টার ভেতরে সাদা অংশ, যার ওপরে ভুট্টা সারি সারি ভাবে বিন্যস্ত থাকে বেশি সংখ্যক বীজ জন্মায়। ফলে চাষীরা লাভবান হবে। তবে জলাবদ্ধতা এ জাতের ভুট্টা দুটির প্রধান অন্তরায়। জাত দুটির বিশুদ্ধতা নিয়ে তিনি আরও জানান, সাধারণত দেশে যে জাতের ভুট্টা কৃষক পর্যায়ে আবাদ করা হয় সে জাতগুলো অনেকাংশেই ডাবল ক্লোজটাইপ। কিন্তু এ জাত দুটি সিঙ্গেল ক্রস ও থ্রি-ওয়ে ক্রসের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে উদ্ভাবিত, ফলে জাত দুটির বিশুদ্ধতা শতভাগ। ডাবল ক্লোজ টাইপের ভুট্টা চাষের ক্ষেত্রে ফসল ক্ষেতে অনিয়ন্ত্রিত পরাগায়নের সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে, কিন্তু উদ্ভাবিত এ জাত দুটি তা থেকে অনেকাংশেই ব্যতিক্রম। উদ্ভাবিত জাত দুটি নিয়ে ভবিষ্যত পরিকল্পনা জানিয়ে তিনি বলেন, নতুন উদ্ভাবিত জাত দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে করা হয়েছে।
×