ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর মুনাফা বেড়েছে ৪২.৭০ শতাংশ

প্রকাশিত: ০৪:২০, ১২ আগস্ট ২০১৮

  ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর মুনাফা বেড়েছে ৪২.৭০ শতাংশ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ গত বছরের ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের প্রথমার্ধেও (জানুয়ারি-জুন) ব্যবসায় ভাল সাফল্য দেখিয়েছে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ লিমিটেড (বিএটিবিসি)। চলতি বছরের প্রথমার্ধে ১৩ দশমিক ৬৮ শতাংশ বিক্রয় প্রবৃদ্ধি হয়েছে বিএটি বাংলাদেশের। পাশাপাশি ব্যয় নিয়ন্ত্রণের সুবাদে আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির নিট মুনাফায় ৪২ দশমিক ৭০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। কোম্পানিটির কর্মকর্তারা বলছেন, সরকার ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে নিম্নস্তরের সিগারেটের দাম বাড়ানোর কারণে স্থানীয় বাজারে সিগারেট বিক্রি থেকে আয় বেড়েছে। তাছাড়া তামাক রফতানির পরিমাণও আগের চেয়ে বেড়েছে। অন্যদিকে আলোচ্য সময়ে বিক্রি বাড়ানোর পাশাপাশি ব্যয় ব্যবস্থাপনায় গুরুত্ব দিয়েছে বিএটিবি। এতে কোম্পানির কর-পরবর্তী মুনাফায় ভাল প্রবৃদ্ধি হয়েছে। বিএটি বাংলাদেশের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০১৮ হিসাব বছরের প্রথমার্ধে কোম্পানিটির মোট বিক্রি হয়েছে ১১ হাজার ৯৭৫ কোটি টাকা, যা আগের বছর ছিল ১০ হাজার ৫৩৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে স্থানীয় বাজারে সিগারেট বিক্রির মাধ্যমে ১১ হাজার ৯৪৯ কোটি টাকা আর তামাক পাতা রফতানির মাধ্যমে আয় হয়েছে ২৫ কোটি টাকা। এ সময়ে ৯ হাজার ৩৪ কোটি টাকার সম্পূরক শুল্ক ও ভ্যাট পরিশোধ-পরবর্তী নিট বিক্রির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৯৪১ কোটি টাকা, আগের বছর একই সময়ে যা ছিল ২ হাজার ৬৮৬ কোটি টাকা। বিক্রি বাড়লেও চলতি বছরের প্রথমার্ধে উৎপাদন ও পরিচালন খাতে ব্যয় কমেছে বিএটি বাংলাদেশের। ফলে আলোচ্য সময়ে ১ হাজার ২৫৪ কোটি টাকা পরিচালন মুনাফা হয়েছে কোম্পানিটির, আগের বছরের একই সময়ে যা ছিল ৯৯০ কোটি টাকা। এ সময়ে আর্থিক, অপরিচালন ও শ্রমিকের মুনাফা বণ্টন তহবিল বাবদ ব্যয় বাদ দিয়ে বিএটি বাংলাদেশের কর-পূর্ববর্তী মুনাফা হয়েছে ১ হাজার ১৭৯ কোটি টাকা, আগের বছরের একই সময়ে যা ছিল ৯৩৭ কোটি টাকা। চলতি হিসাব বছরের প্রথমার্ধে আয়কর বাবদ ৫৯৬ কোটি টাকা পরিশোধের পর কোম্পানিটির নিট মুনাফা দাঁড়িয়েছে ৫৮২ কোটি টাকা, আগের বছরের একই সময়ে যা ছিল ৪০৮ কোটি টাকা। আলোচ্য সময়ে বিএটি বাংলাদেশের শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৯৭ টাকা ৮ পয়সা; আগের বছরের একই সময়ে যা ছিল ৬৮ টাকা ২ পয়সা। এদিকে চলতি ২০১৮ হিসাব বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) বিএটি বাংলাদেশের মোট বিক্রি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১১ দশমিক ৩৬ শতাংশ বেড়ে ৫ হাজার ৯৯১ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী মুনাফা হয়েছে ৩০৭ কোটি টাকা; আগের বছর একই সময়ে যা ছিল ১৮৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ এ সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী মুনাফা বেড়েছে ৬২ দশমিক ৯১ শতাংশ। চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে এর ইপিএস হয়েছে ৫১ টাকা ২৬ পয়সা, আগের বছরের একই সময়ে যা ছিল ৩১ টাকা ৪৬ পয়সা। উল্লেখ্য, ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০১৭ হিসাব বছরে শেয়ারহোল্ডারদের ৬০০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে বিএটি বাংলাদেশের পরিচালনা পর্ষদ। আলোচ্য সময়ে কোম্পানির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়ায় ৩৮৫ টাকা ২১ পয়সায়। ২০১৬ হিসাব বছরেও শেয়ারহোল্ডারদের ৬০০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল কোম্পানিটি। ডিএসইতে সর্বশেষ ৩ হাজার ৩০৩ টাকায় বিএটিবিসির শেয়ার হাতবদল হয়। গত এক বছরে এর শেয়ারদর ২ হাজার ৭৬৫ থেকে ৩ হাজার ৮৩৮ টাকার মধ্যে ওঠনামা করে। ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো ১৯৭৭ সালে দেশের শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। বর্তমানে এর পরিশোধিত মূলধন ৬০ কোটি টাকা। রিজার্ভে আছে ২ হাজার ২৫১ কোটি ২৪ লাখ টাকা। কোম্পানির মোট শেয়ারের ৭২ দশমিক ৯১ শতাংশ এর উদ্যোক্তা-পরিচালকদের কাছে, বাংলাদেশ সরকার দশমিক ৬৪, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ১০ দশমিক ৬৩, বিদেশী ১৫ দশমিক ১৪ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে দশমিক ৬৮ শতাংশ শেয়ার। সর্বশেষ নিরীক্ষিত মুনাফা ও বাজারদরের ভিত্তিতে এ শেয়ারের মূল্য-আয় (পিই) অনুপাত ২৫ দশমিক ৩০, হালনাগাদ প্রান্তিক মুনাফার ভিত্তিতে যা ১৭ দশমিক শূন্য ১।
×