ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

গোলের বন্যায় আনন্দধারা

প্রকাশিত: ০৪:০৫, ১২ আগস্ট ২০১৮

 গোলের বন্যায় আনন্দধারা

মেয়েদের অনুর্ধ ১৫ সাফ ফুটবলে দুর্দান্ত সূচনা করেছে বাংলাদেশ। দেশের অদম্য কিশোরীরা পাকিস্তান ফুটবল দলকে রীতিমতো বিধ্বস্ত করেছে। ১৪ গোলের বন্যায় ভেসে গেছে প্রতিপক্ষ। ফুটবল একটি নির্মল বিনোদনমূলক ক্রীড়া। খেলায় হারজিত থাকে। খেলার মাঠে যতই লড়াই চলুক খেলাশেষে প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়েরা হলো সতীর্থ, বন্ধু। কিন্তু একটি দেশের খেলার দলের প্রতিপক্ষ অন্য দেশ হলে বিষয়টি একটু আলাদা হয়ে যায়। আর বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ যখন পাকিস্তান, তখন তো কথাই নেই। সে খেলায় থাকে বাড়তি উত্তেজনা। আর বিজয় যদি আসে বিপুল ব্যবধানে তবে তাতে বিমল আনন্দযোগ ঘটে। সেটাই ঘটেছে অনুর্ধ ১৫ সাফ ফুটবলে। এই বিজয়ের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মেয়েরা এক অভূতপূর্ব আনন্দের উপলক্ষ বয়ে এনেছে। সূচনাটা তারা দারুণ করেছে। এই স্বপ্নময়ী কিশোরীদের প্রতি আমাদের আন্তরিক অভিনন্দন। বাংলাদেশে মেয়েদের ফুটবল খেলাটা মোটেও সহজ ছিল না। স্মরণযোগ্য, গত বছর বিজয়ের মাসে বাংলাদেশের এই কিশোরী মেয়েরাই ফুটবলে বিজয় ছিনিয়ে এনে দেশবাসীকে এক অনন্য উপহার দিয়েছিল। সাফ অনুর্ধ-১৫ চ্যাম্পিয়নশিপ টুর্নামেন্টে তারা চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। ফাইনালে হারিয়েছিল ভারতের মতো শক্তিশালী টিমকে। অপরাজিত দল হিসেবেই বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। এই দারুণ সাফল্যের জন্য অপরাজিত কিশোরীদের যথারীতি আমরা আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়েছিলাম। তাদের কারণেই আমরা আরেকবার বলতে পেরেছিলাম শাবাশ বাংলাদেশ। আশাবাদ ব্যক্ত করে আমরা বলেছিলাম, এই স্বপ্নময় জয়যাত্রা থেমে থাকবে না। বাংলাদেশের ফুটবলের পতাকা এখন কিশোরীদের হাতেই- এমন অভিমত ক্রীড়ামোদীদের মুখে মুখে। আমরা সন্তুষ্ট যে কিশোরীরা তাদের ক্রীড়া নৈপুণ্যের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে সক্ষম হচ্ছে। গোলসংখ্যা বাড়ানো এমনকি সেটি ১৪ তে উত্তীর্ণ করার মতো দক্ষতাও তারা প্রদর্শন করল। কিশোরীরা যে আকর্ষণীয় ফুটবল খেলছে, মেয়েদের ফুটবলে যে, জাগরণ তার পেছনে অনন্য ভূমিকা রাখছে প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যায়ে আয়োজিত বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব গোল্ডকাপের নিয়মিত আয়োজন। প্রতিভা অন্বেষণের এমন আরও অনেক আয়োজন চাই। একই সঙ্গে সম্ভাবনাময় খেলোয়াড়দের পরিচর্যার প্রতিও দিতে হবে মনোযোগ। খেলাধুলায় ধারাবাহিক সাফল্যের জন্য পৃষ্ঠপোষকতা যে খুবই গুরুত্বপূর্ণ সে কথা বলাই বাহুল্য। ফুটবলে কিশোরীরা ভাল খেলছে এবং আরও ভাল করবে- এমন সম্ভাবনা শুধু সংগঠকরাই দেখছেন তা নয়, দেশবাসীও আশায় বুক বাঁধছে। তাদের প্রতি এ মনোযোগ অব্যাহত এবং প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য প্রয়োজন মেটাতে সংশ্লিষ্ট সবাই সদা যতœবান হবেন- এটাই একান্তভাবে কাম্য। ক্রিকেটে আমাদের সাফল্যের ঝুলি ভরে উঠছে। ফুটবল, হকি এবং অন্যান্য খেলাতেও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে লাল-সবুজের স্থান করে নিতে হলে সুষ্ঠু ও সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা চাই। আমাদের প্রত্যাশা, কিশোরীদের চমৎকার পারফরমেন্স ক্রীড়া ক্ষেত্রে আমাদের নীতি-নির্ধারকদের আলোড়িত করবে। তাদের কাছ থেকে দেশবাসী পাবেন প্রত্যাশিত সাফল্য। যার সুফল নিশ্চয়ই ফলতে থাকবে আগামীতে ধারাবাহিকভাবে।’
×