ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ব্যস্ত সূচীতে ক্রিকেটারদের নিয়ে ভাবনায় বিসিবি

প্রকাশিত: ০৭:০৬, ১১ আগস্ট ২০১৮

ব্যস্ত সূচীতে ক্রিকেটারদের নিয়ে ভাবনায় বিসিবি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সামনেই আসছে এশিয়া কাপ। এরপর জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে তিন ওয়ানডে ও দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ আছে। তারপর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুই টেস্ট, তিন ওয়ানডে ও তিন টি২০ ম্যাচের সিরিজ হবে। এ সিরিজ শেষ হতেই বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল টি২০) আছে। তারপর রয়েছে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ওয়ানডে ও তিন টেস্ট ম্যাচের সিরিজ। টানা এ খেলাগুলো চলবে। তাতে করে আগামী ছয় মাসে ব্যস্ত সূচীর ফাঁদেই পড়তে যাচ্ছে বাংলাদেশ। তাতে করে ক্রিকেটারদের পুরোপুরি ফিট থাকা নিয়েও থাকছে সমস্যা। ক্রিকেটারদের বিশ্রাম দেয়া নিয়েই এখন ভাবনায় আছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর শেষে এখন কয়েকদিন বিশ্রামে থাকছেন ক্রিকেটাররা। টানা একমাস বিরতি মিলেছে। এরপরই শুরু হয়ে যাবে সেই ব্যস্ত সূচী। ১৫ সেপ্টেম্বর এশিয়া কাপের মিশন শুরু হতেই সেই ব্যস্ততার বেড়াজালে আটকা পড়বে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল। সেই ব্যস্ততায় ক্রিকেটারদের ফিটনেস ঠিক থাকা নিয়েও থাকছে দুঃশ্চিন্তা। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনই যেমন বলেছেন, ‘যে লম্বা সূচী আমাদের, যে পরিমাণ খেলা তাতে কোচ ও ক্রিকটারদের বিশ্রাম কখন দেব। সেটা নিয়েই চিন্তা করে পাচ্ছি না। কোচ এটা নিয়ে কথা তুলেছিল যে টানা কিভাবে খেলবে ক্রিকেটাররা। আমরা এখন টপ ৫টা দেশ যে ওই লেভেলের খেলা হচ্ছে। টানা খেলা। এত খেলা, সফর করা, এই ধকল কিভাবে সামলাবে, সেটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বিরতি দিতে হলে কখন দেব? যেমন, সাকিবের মতো ক্রিকেটারের কিন্তু বিরতি দরকার। ও’ যদি টেস্টও খেলে, ওয়ানডে টি২০ও খেলে এবং টানা খেলে, তাহলে কখন বিরতি দেব? আবার বিপিএল ও ফ্র্যাঞ্চাইজিও খেলবে। ওদের জন্য তাই সময় বের করতে হবে।’ সময় বের করতেই হবে। না হলে যে ক্রিকেটাররা স্বাভাবিকভাবেই টানা খেলতে থেকে ইনজুরিতে পড়তে পারেন। সেই সম্ভাবনা থাকছে। ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে এশিয়া কাপের মিশনে নামবে বাংলাদেশ। এশিয়া কাপ এবার হবে ওয়ানডে ফরমেটে। যে ফরমেটটি আবার বাংলাদেশ দলের ফেবারিট ফরমেটও। ১৩তম আসর হবে সংযুক্ত আরব আমিরাতে। বাংলাদেশের ম্যাচ দিয়েই এবার এ টুর্নামেন্ট শুরু হবে। ১৫ সেপ্টেম্বর টুর্নামেন্ট শুরুর প্রথমদিনই মাঠে নামবে বাংলাদেশ। প্রতিপক্ষ থাকবে শ্রীলঙ্কা। ম্যাচটি দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে। ফাইনাল ম্যাচ দিয়ে টুর্নামেন্ট শেষ হবে ২৮ সেপ্টেম্বর। গ্রুপপর্বে বাংলাদেশের আরেক প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান। ২০ সেপ্টেম্বর আবুধাবীর শেখ জায়েদ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আফগানদের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। গ্রুপপর্ব পেরিয়ে গেলে সুপারফোরে খেলবে বাংলাদেশ। সেখানেও থাকবে তিনটি ম্যাচ। ২৮ সেপ্টেম্বর দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে হবে ফাইনাল। এশিয়া কাপ শেষ হলেই জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে সিরিজের বাজনা বাজবে। দেশের মাটিতে হবে জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে সিরিজটি। এশিয়া কাপ শেষে জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে সিরিজের লক্ষ্যে প্রস্তুতিতে নেমে যেতে হবে ক্রিকেটারদের। তিন ওয়ানডে ও দুই টেস্ট ম্যাচের সিরিজটি ২১ অক্টোবর শুরু হবে। মাঝখানে কয়েকদিন বিশ্রাম মিললেও প্রস্তুতিটা ভালভাবেই নিতে হবে। জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে যে কোনভাবেই হারা যাবে না। অক্টোবরের ২১ তারিখ প্রথম ওয়ানডে দিয়ে সিরিজ শুরু হবে। ২৪ ও ২৬ অক্টোবর পরের দুটি ওয়ানডে অনুষ্ঠিত হবে। ৩ নবেম্বর থেকে প্রথম টেস্ট শুরু হবে। এরপর দ্বিতীয় টেস্ট শুরু হবে ১১ নবেম্বর থেকে। জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে সিরিজ শেষ না হতেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ মাথায় ঘুরপাক খাবে। জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে সিরিজ শেষ না হতেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল এসে পড়বে বাংলাদেশে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল আগামী ১৫ নবেম্বর বাংলাদেশে এসে পৌঁছার কথা। সফরে বাংলাদেশের বিপক্ষে দুটি টেস্ট, তিনটি ওয়ানডে ও তিনটি টি২০ ম্যাচ খেলবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২২ থেকে ২৬ নবেম্বর প্রথম টেস্ট এবং ৩০ নবেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বর দ্বিতীয় টেস্ট অনুষ্ঠিত হবে। এরপর ৯ ডিসেম্বর প্রথম, ১১ ডিসেম্বর দ্বিতীয় ওয়ানডে ও ১৪ ডিসেম্বর তৃতীয় ওয়ানডে হবে। ১৭ ডিসেম্বর প্রথম, ২০ ডিসেম্বর দ্বিতীয় ও ২২ ডিসেম্বর তৃতীয় টি২০ অনুষ্ঠিত হবে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ শেষ হতেই ফ্র্যাঞ্চাইজি লীগ বিপিএল টি২০ নিয়ে ভাবনা শুরু হবে ক্রিকেটারদের। ৫ জানুয়ারি থেকে বিপিএল শুরু হবে। এক মাস চলবে এ লীগ। লীগ শেষ হতেই নিউজিল্যান্ড সফরে যাওয়া নিয়ে মাথাব্যথা শুরু হয়ে যাবে। নিউজিল্যান্ডে খেলতে গিয়ে যে কঠিন পরীক্ষায় পড়তে হবে। বিপিএল শেষ হতেই অল্প সময়ের মধ্যেই নিউজিল্যান্ডের বিমান ধরতে হবে। ১৩ ফেব্রুয়ারি প্রথম ওয়ানডে দিয়ে শুরু হবে সিরিজ। ১৬ ও ২০ ফেব্রুয়ারি যথাক্রমে দ্বিতীয় ও তৃতীয় ওয়ানডে অনুষ্ঠিত হবে। ২৮ ফেব্রুয়ারি প্রথম টেস্ট, ৮ মার্চ দ্বিতীয় টেস্ট ও ১৬ মার্চ তৃতীয় টেস্ট শুরু হবে। এ সিরিজের পর খানিক বিরতি মিলবে। কিন্তু এর আগে ব্যস্ত সূচীর মধ্যেই থাকতে হবে দলকে। দলের ক্রিকেটারদের টানা ক্রিকেট খেলার মধ্যেই থাকতে হবে। আর এই ব্যস্ত সূচীতে ক্রিকেটারদের বিশ্রাম নিয়ে ভাবনায় আছে বিসিবি।
×