ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মহাকাশ বাহিনী গড়বে যুক্তরাষ্ট্র

প্রকাশিত: ০৫:১৩, ১১ আগস্ট ২০১৮

মহাকাশ বাহিনী গড়বে যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স ২০২০ সালের মধ্যে মহাকাশ বাহিনী গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছেন। এই বাহিনী সামরিক বাহিনীর ষষ্ঠ বাহিনী হিসেবে সম্পূর্ণ আলাদাভাবে কাজ করবে। প্রতিরক্ষা সদর দফতর পেন্টাগনে বৃহস্পতিবার ভাইস প্রেসিডেন্ট এ ঘোষণা দেন। খবর গার্ডিয়ানের। ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, চীন-রাশিয়া থেকে ক্রমাগত তীব্র প্রতিযোগিতা ও হুমকি মোকাবেলায় এবং মহাকাশে যুক্তরাষ্ট্রের আধিপত্য নিশ্চিত করার জন্য এটি প্রয়োজন। এক সময় মহাকাশ শান্তিপূর্ণ ছিল এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল না। সেখানে এখন ভিড় দেখা যাচ্ছে এবং প্রতিকূল পরিবেশ বিরাজ করছে। আগের প্রশাসনের কাছে সবসময় মহাকাশের ক্রমবর্ধমান নিরাপত্তা হুমকি উপেক্ষিত হয়েছে। আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বীরা ইতোমধ্যে মহাকাশকে যুদ্ধাংদেহী অবস্থায় পরিণত করেছে। যুক্তরাষ্ট্র এই চ্যালেঞ্জ থেকে নিজেদের সরিয়ে নেবে না। এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও একটি আলাদা তবে সমকক্ষ মহাকাশ বাহিনীর কথা জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার টুইটারে প্রেসিডেন্ট তার দ্বিতীয় বক্তব্যে মহাকাশ বাহিনীর কথা উচ্ছ্বাসের সঙ্গে প্রকাশ করেন। তিনি লেখেন, মহাকাশ বাহিনীই সর্বোত্তম সব উপায়! ভাইস প্রেসিডেন্ট তার প্রস্তাবে জানিয়েছেন, মহাকাশ বাহিনী হবে মার্কিন সামরিক বাহিনীর ষষ্ঠ শাখা। মার্কিন সামরিক বাহিনীর অপর যেসব শাখা রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হল- সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী, মেরিন ও কোস্ট গার্ড। যদি সফল হয় তবে মহাকাশ বাহিনী হবে ১৯৪৭ সালের পর সশস্ত্র পরিষেবাগুলোর প্রথম নতুন শাখা। একটি নতুন বাহিনী তৈরি করার জন্য যেকোন প্রস্তাব কংগ্রেসে পাঠাতে হয়। কংগ্রেস তখন সেই প্রস্তাবটি নিয়ে যাচাই-বাছাই করে। নতুন বাহিনী প্রস্তুত করার জন্য পেন্স ঘোষণা করেন যে, প্রশাসন এজন্য একটি এলিট স্কয়াড একত্রিত করবে। যারা মহাকাশে যুদ্ধ করতে সক্ষম। এই বাহিনী স্পেস অপারেশন্স ফোর্স নামে পরিচিত হবে। এই বাহিনী সামরিক বাহিনীর অপর সব অংশের মতো বিদ্যমান বিশেষ বাহিনী হিসেবে কাজ করবে। এছাড়াও একটি ইউনাইটেড স্টেটস স্পেস কমান্ড থাকবে। যারা মহাকাশ যুদ্ধের তাত্ত্বিক উন্নয়ন ও কৌশল নির্ধারণ করবে। প্রশাসনের পরিকল্পনা হচ্ছে, মহাকাশ প্রতিরক্ষার জন্য সহকারী মন্ত্রীর পদ সৃষ্টি করা। এই অবস্থানে থাকা ব্যক্তি শেষ পর্যন্ত স্বাধীন স্পেস ফোর্স বাহিনীর প্রধান হিসেবে আবির্ভূত হবেন। প্রতিরক্ষামন্ত্রী জিম ম্যাটিস সামরিক বাহিনীর বর্তমান মহাকাশ যুদ্ধে শক্তি পুনর্গঠনের পরিকল্পনায় সমর্থন দিয়েছেন এবং একটি কমান্ড তৈরি করেছেন। তবে অতীতে তিনি একটি ব্যয়বহুল নতুন সেবা চালু করার বিরোধিতা করেছিলেন। প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, এই সপ্তাহে হোয়াইট হাউসের সঙ্গে তার একটি মতৈক্য হয়েছে। অবসরপ্রাপ্ত মহাকাশচারী ক্যাপ্টেন মার্ক কেলি প্রস্তাবিত মহাকাশ বাহিনীকে একটি নির্বোধ ধারণা বলে অভিহিত করেছেন। তিনি এমএসএনবিসিকে বলেন, সংস্থাটি যা করবে তা ইতোমধ্যে বিমান বাহিনী সম্পন্ন করছে। সংস্থাটির কাজ হবে বিমান বাহিনীর প্রতিরূপ। সেখানে হুমকি আছে আজ মার্কিন বিমান বাহিনীর মাধ্যমে তা মোকাবেলা করা যাচ্ছে। একটি সম্পূর্ণ অন্য স্তরের আমলাতন্ত্র গড়ে তোলার জন্য নতুন ধরনের চেতনা সৃষ্টি হয়নি। হাওয়াইয়ের ডেমোক্র্যাট সিনেটর ব্রায়ান স্কিটজ বলেন, রিপাবলিকানরা প্রেসিডেন্টকে বলতে ভয় পান যে ধারণাটি খুবই খারাপ। যদিও স্পেস ফোর্স কখনই দরকার পড়বে না। এমন একজন নেতা থাকা বিপজ্জনক যিনি উন্মাদনাপূর্ণ ধারণা নিয়ে কথা বলতে পারেন না। আলাবামার প্রতিনিধি মাইক রজার্স বলেন, তিনি ঘোষণাটি শুনে রোমাঞ্চিত হয়েছেন। পেন বলেন, হোয়াইট হাউস ইতোমধ্যে কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে নতুন শাখা অনুমোদনের জন্য আলোচনা চালাচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্র সব সময় শান্তির আশা করে। তা মহাকাশে যেমন পৃথিবীতেও তেমন। ইতিহাস প্রমাণ করেছে যে, শান্তি আসে শুধু শক্তির মাধ্যমে। মহাকাশের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ বাহিনী আগামী বছরগুলোতে সেই শক্তি অর্জন করবে।
×