ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

হিজড়ারা আর রাস্তাঘাট পার্কে চাঁদাবাজি করবে না

প্রকাশিত: ০৫:০৮, ১১ আগস্ট ২০১৮

  হিজড়ারা আর রাস্তাঘাট পার্কে চাঁদাবাজি করবে না

স্টাফ রিপোর্টার ॥ হিজড়া হিসেবে পরিচিত তৃতীয় লিঙ্গের মানুষরা আর পার্ক বা রাস্তাঘাটে চাঁদাবাজি না করার অঙ্গীকার করেছেন। শুক্রবার সকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসভবনে তার সঙ্গে দেখা করেন বিভিন্ন হিজড়া প্রতিনিধিরা। এ সময় তারা এই অঙ্গীকার করেন। তবে শিশুর জন্মের পর বাড়ি বাড়ি গিয়ে বকশিশ গ্রহণের বিষয়টি আপাতত তারা ছাড়তে পারবেন না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, তারা আমার কাছে শপথ নিয়েছে। তারা পার্ক ও রাস্তাঘাটে চাঁদাবাজি করবে না। তাদের জন্য আমরা একটা রূপরেখা করেছি। তারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে চাইলে আমাদের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা দেয়া হবে। তবে কোন বাসায় নতুন সন্তান জন্ম নিলে তারা আগের মতোই বকশিশ গ্রহণ করবেন বলে জানান হিজড়া নেতারা। তবে এ ক্ষেত্রে জোর-জবরদস্তি করা হবে না বলে অঙ্গীকার করেন তারা। তিনি বলেন, হিজড়ারা আমাদেরই সন্তান। তারা কীভাবে চলবে, কীভাবে ভবিষ্যতে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে নিজের আয় নিজেই করে একটা ভাল মানুষ, উপযুক্ত নাগরিকের মতন চলবে, সেজন্য প্রধানমন্ত্রী একটি রূপরেখা আমাদের দিয়েছেন। সে অনুযায়ী কাজও হচ্ছে। আমাদের হিজড়া সম্প্রদায় এ বিষয়ে একাত্মতা ঘোষণা করে তারাও আমাদের সহযোগিতা করছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, আমরা আগে দেখেছি জীবিকার জন্য তারা নানা ধরনের পন্থা অবলম্বন করত। আজকে দেখেছেন এই সমস্ত পন্থা ছেড়ে একটা সুন্দর জীবনযাপনের জন্য তারা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আপনারা (হিজড়া) কে, কী করতে চান, জানাবেন- যাতে আমরা এনজিওদের মাধ্যমে আপনাদের সেই জীবিকার সন্ধানে সহযোগিতা দিতে পারি। মারজান নামে একজন হিজড়াদের মূল ধারায় নিয়ে আসতে কাজ করছেন এবং তার উদ্যোগেই এই বৈঠক হয় আর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাকেও ধন্যবাদ জানান। সরকারের পক্ষ থেকে হিজড়াদের জন্য কোন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এটার জন্য একটা ডিফারেন্ট মিনিস্ট্রি আছে, তারা কাজ করছে। আমার সম্পূর্ণ জানা নেই, তারা কোন্ পর্যন্ত এগিয়েছে। আমি সেটা বলেছি যেটা আইনশৃঙ্খলার জন্য প্রয়োজন। তারা আমাদের বলে গেলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য তারা আমাদের সহযোগিতা করবেন। তাদের বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে উপস্থিতি দেখতে পাচ্ছি। আমি সেই ব্যাপারটিরই কথা বলছিলাম। তারাও এ ব্যাপারে একমত হয়ে আমাদের সঙ্গে সহযোগিতার কথা বলেছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, অপূর্ণাঙ্গ যৌনাঙ্গ নিয়ে জন্ম নেয়া এই মানুষগুলোর প্রতি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি মানবিক সেটা বলা যাবে না। শৈশব থেকেই নিজেদের অপাঙ্ক্তেয় ভাবতে বাধ্য হওয়া মানুষগুলো পড়াশোনা করে স্বাভাবিক মানুষের মতো জীবিকার পথে এগোয় কমই। আর জীবিকার সংস্থান না থাকায় মানুষের কাছ থেকে সহায়তা তুলেই বাঁচতে হয় তাদের। আর এই কাজ করতে গিয়ে বাসসহ গণপরিবহন, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এমনকি বাসাবাড়িতে গিয়ে হানা দিচ্ছে তারা। তাদের এই আচরণে সাধারণ মানুষও নানা সময় বিরক্তি প্রকাশ করে আসছেন। তবে সরকার এই মানুষদের মূলধারায় ফিরিয়ে আনতে চাইছে। তাদের ভোটাধিকার দেয়া, প্রশিক্ষণ দিয়ে আত্মকর্মসংস্থান ও বিভিন্ন চাকরিতে নিয়োগ দেয়ার উপযোগী করে তুলতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে।
×